ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ইসলামী ব্যাংকের দর কমেছে

প্রকাশিত: ০৩:৫৭, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৬

ইসলামী ব্যাংকের দর কমেছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক খাতের কোম্পানি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের বৃহস্পতিবার দরপতন হয়েছে। তবে এ দরপতনকে বাজার বিশ্লেষকরা স্বাভাবিকভাবে দেখছেন। তারা বলেছেন, বেশ কিছুদিন ধরে ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারের দর টানা বাড়ছে, তবে সামান্য কারেকশনে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। বাজারের কাজই শেয়ারের দর ওঠানামা করা। যে শেয়ারের দর ওঠানামা করে সে কোম্পানির শেয়ারের ভিত মজবুত থাকে। তবে ২০১২ সাল থেকে ইসলামী ব্যাংকের নিট মুনাফা কমছে। অন্যদিকে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী অনেক প্রতিষ্ঠান তাদের শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছে। এর প্রভাবে ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার প্রতি দর কমছে বলে অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারীরা মনে করছেন। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বৃহস্পতিবার ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের শেয়ার দর কমেছে ৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ। ফলে কোম্পানিটি চলে এসেছে দরপতনের চতুর্থ স্থানে। ২০১২ সালের পর থেকেই ইসলামী ব্যাংকের নিট মুনাফা কমছে। ২০১২ সালে ব্যাংকটির কর-পরবর্তী মুনাফা ছিল ৫৬১ কোটি ৬৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ২০১৫ সালে যা ৩১৫ কোটির ঘরে নেমে আসে। ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, গত ২১ জুলাই শেয়ার বিক্রির পাশাপাশি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ থেকে তাদের মনোনীত পরিচালককে প্রত্যাহারের প্রস্তাব দেয় শাহজালাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল। ইসলামী ব্যাংকের পর্ষদে তা গৃহীত হয়। জানা গেছে, চলতি বছরেই ইসলামী ব্যাংকের বড় অঙ্কের শেয়ার কিনে হযরত শাহজালাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিটি লিমিটেড। ব্যাংকের সর্বশেষ বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) কোম্পানিটির পক্ষে ইসলামী ব্যাংকের মনোনীত পরিচালক নির্বাচিত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. এএনএম সাইদুল হক খান। ডিএসইতে বৃহস্পতিবার এ শেয়ারের সর্বশেষ দর ৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ বা ১ টাকা ৫০ পয়সা কমে দাঁড়ায় ২৯ টাকা ৯০ পয়সায়। দিনভর দর ২৮ টাকা ৬০ পয়সা থেকে ৩১ টাকা ৯০ পয়সার মধ্যে ওঠানামা করে। সমাপনী দর ছিল ৩০ টাকা, যা আগের কার্যদিবসে ছিল ৩১ টাকা ৪০ পয়সা। এদিন ১ হাজার ১২ বারে এ কোম্পানির মোট ৬০ লাখ ৬৮ হাজার ৫১৪টি শেয়ারের লেনদেন হয়। চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে (জানুয়ারি-জুন) ইসলামী ব্যাংকের কর-পরবর্তী মুনাফা হয়েছে ৩৪৬ কোটি ৫৮ লাখ ৫৪ হাজার টাকা। শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২ টাকা ১৫ পয়সা, আগের বছর একই সময়ে যা ছিল ২ টাকা ১১ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৫ সমাপ্ত হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ২০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয় ইসলামী ব্যাংক। বছর শেষে ইপিএস দাঁড়ায় ১ টাকা ৯৬ পয়সা। ২০১৪ সালের জন্য ১৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ পেয়েছিলেন ব্যাংকটির শেয়ারহোল্ডাররা। তখন ইপিএস ছিল ২ টাকা ৪৬ পয়সা। আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১২ সালের পর থেকেই ইসলামী ব্যাংকের নিট মুনাফা কমছে। ২০১২ সালে ব্যাংকটির কর-পরবর্তী মুনাফা ছিল ৫৬১ কোটি ৬৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ২০১৫ সালে যা ৩১৫ কোটির ঘরে নেমে আসে। ঋণমানে ব্যাংকটির অবস্থান দীর্ঘমেয়াদে ‘ডবল এ প্লাস’ ও স্বল্পমেয়াদে ‘এসটি-১। ইসলামী ধারার প্রথম বাংলাদেশী ব্যাংকটি ১৯৮৫ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। ২ হাজার কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে বর্তমানে ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধন ১ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। রিজার্ভে আছে ৩ হাজার ১১৯ কোটি ২৭ লাখ টাকা।
×