ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

কোরবানির পশুকে কেন্দ্র করে জমজমাট মৌসুমী ব্যবসা

প্রকাশিত: ০৩:৫৫, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৬

কোরবানির পশুকে কেন্দ্র করে জমজমাট মৌসুমী ব্যবসা

অর্থনৈতিক রিপোর্টা ॥ ঈদ-উল-আযহায় পশু কোরবানিকে কেন্দ্র করে জমে উঠেছে কিছু মৌসুমী ব্যবসা। প্রতিবছর কোরবানির আগে কিছুটা বাড়তি আয়ের লক্ষ্যে পশুর হাটের আশেপাশে মৌসুমী ব্যবসায় নেমে পড়েন অনেকে। কোরবানির আগে ৩ থেকে ৪ দিন ধরে জমে ওঠে পশুর খাবার ঘাস, শুকনো খড়, ভুসি, কাঁঠাল পাতাসহ আনুষঙ্গিক নানা উপকরণের ব্যবসা। ঢাকার কেরানীগঞ্জে আগানগর পশুর হাটে গিয়ে দেখা গেছে, পশুর হাটের পাশেই পশুর খাবার ঘাস, শুকনো খড়, ভুসি, কাঁঠালপাতা এবং পাটিসহ আনুষঙ্গিক নানা উপকরণ সাজিয়ে বসেছেন মৌসুমী ব্যবসায়ীরা। কেউবা আবার হাটের মধ্যে ঘুরে ঘুরে ফেরি করে এসব উপকরণ বিক্রি করছে। ঢাকায় রাজমিস্ত্রির কাজ করেন কেরানীগঞ্জের রহিম শেখ। ৪ ছেলেমেয়েসহ ৬ সদস্যের পরিবার তার। ঈদের ছুটিতে এখন কাজ বন্ধ। তাইতো ঈদের আগে কিছুটা বাড়তি আয়ের কথা ভেবে কোরবানির হাটে ঘুরে ঘুরে ঘাস বিক্রি করছেন তিনি। বিল থেকে ঘাস কেটে এনে বিক্রি করছেন আগানগর পশুর হাটে। তিনি বলেন, বেচাকেনা ভালই হচ্ছে। গতকাল ৬শ’ টাকা আয় হয়েছে। আজও ভালই বিক্রি হচ্ছে। কোরবানির আগের ৩ দিনে প্রায় ৬ থেকে ৭ হাজার টাকার মতো বেচাবিক্রি হবে বলে আশা করেন রহিম শেখ। অনেকটা ক্লান্ত-শ্রান্ত হয়ে ঠেলাগাড়িতে করে ঘাস নিয়ে পশুর হাটে ঢুকেছেন কুদ্দুস। সারাদিন ধরে এসব ঘাস কেটে বিকেল সাড়ে ৪টায় হাটে এসেছেন। কাছে গিয়ে জানতে চাইলে অনেকটা হাঁপিয়ে হাঁপিয়ে কুদ্দুস বলেন, গতকালকে ১২শ’ টাকার ঘাস বেচলাম। তাই আজও ঠেলাগাড়ি ভরে ঘাস আনলাম। ঠেলাগাড়িতে করে প্রেসের পেপার বহন করে কুদ্দুস। ঈদের ছুটিতে কাজ বন্ধ। তাই মৌসুমী ব্যবসায় নেমেছেন। প্রতি আঁটি ঘাস বিক্রি করছেন ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত। ফেরিওয়ালা রাসেল এই তিন-চার দিনের বাড়তি আয়ের সুযোগটা মিস হতে দিলেন না। নেমে পড়েছেন মৌসুমী ব্যবসায়। কেরানীগঞ্জের আগানগর পশুর হাটে বসেছেন পশুর খাবার গমের ভুসি, এ্যাঙ্কর ডাল, ধানের ভুসি এবং পাটি নিয়ে। প্রতি কেজি ভুসি বিক্রি করছেন ৪০ থেকে ৪৫ টাকা করে। এছাড়া প্রতিটি পাটি বিক্রি করছেন ১০০ টাকা করে। রাসেলের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, সারাবছর ফেরি করে নানা জিনিসপত্র বিক্রি করেন তিনি। বছরের এই সময়ে মৌসুমী ব্যবসায় নেমে পড়েন। গতবছর কোরবানির আগের ৩ থেকে ৪ দিনে তিনি ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা আয় করেছিলেন। এবারও ভাল ব্যবসা হবে বলে জানান রাসেল। পশুর খাবারের পাশাপাশি আরও বিক্রি হচ্ছে গরু-ছাগল সাজানোর কাপড় কিংবা রঙিন কাগজের মালা, রঙিন দড়ি এবং লাঠি। গ্লাস মালা প্রতিপিস ৫০ থেকে ৮০ টাকা। ঝড়ি মালা ১৫ থেকে ২০ টাকা। রিং মালা প্রতিপিস ৯০ থেক ১শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দড়ি বিক্রি হচ্ছে প্রতি ৫ হাত ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। ১০ হাতের রশি ৬০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। কেরানীগঞ্জের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম আগানগর পশুর হাট থেকে কোরবানির জন্য একটি গরু কিনেছেন। গরু কিনেই তিনি তার খাবারের সন্ধানে এসেছেন। কিনছেন ঘাস এবং ভুসি। রফিকুল বলেন, এবার অনেকটা আগেভাগেই গরু কিনে ফেলেছি। এজন্য খাবারও কিনতে হচ্ছে।
×