ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ঈদে ঘরে ফেরা

সড়কপথে অন্তহীন ভোগান্তি, নৌ ও রেলপথে স্বস্তি

প্রকাশিত: ০৫:১২, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬

 সড়কপথে অন্তহীন ভোগান্তি, নৌ ও রেলপথে  স্বস্তি

রাজন ভট্টাচার্য ॥ ঢাকা-মেহেরপুরগামী জে আর পরিবহনের যাত্রী সোহেল রেজা। পরিবার-পরিজন নিয়ে অনেক আগেই অগ্রিম টিকেট কাটেন তিনি। গাবতলী থেকে এ বাসে যাত্রা শুরুর কথা ছিল শুক্রবার সকাল ৯টায়। অথচ বিকেল চারটা পর্যন্ত বাসের দেখা মেলেনি। অপেক্ষা যেন আর শেষ হচ্ছিল না সোহেলের পরিবারের সদস্যদের। কখন বাস আসবে? এমন নিশ্চয়তা খোদ কাউন্টার কর্তৃপক্ষই দিতে পারছে না। রাজধানীর গাবতলী, শ্যামলীসহ আশপাশের এলাকায় বাসের জন্য কাউন্টারে যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকার চিত্র লক্ষ্য করা গেছে। বাস কাউন্টার সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ফেরিঘাটে জটিলতা ও মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট ও সড়ক দুর্ঘটনার কারণে এ ভোগান্তি। আর যারা ভোর পাঁচটায় ঢাকা থেকে উত্তরাঞ্চলের পথে রওনা দিয়েছিলেন বিকেল পাঁচটা অর্থাৎ ১২ ঘণ্টা পরও পারি দিতে পারেননি ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বঙ্গবন্ধু সেতু। যানজটের কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ছয় ঘণ্টার রাস্তা পাড়ি দিতে সময় লেগেছে ১২ থেকে ১৬ ঘণ্টার বেশি। ঢাকা-সিলেট-ময়মনসিংহ পৌঁছাতে চার থেকে সাত ঘণ্টা পর্যন্ত বেশি সময় লাগছে। শিমুলিয়া-কাওড়াকান্দি, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া, মেঘনা-দাউদকান্দি ফেরিঘাটে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। পারাপারের অপেক্ষায় হাজার-হাজার যানবাহন। তীব্র স্রোতের কারণে সকল ঘাট সচল না থাকা, ব্যবস্থাপনার অভাব, বাড়তি গাড়ির চাপÑ সব মিলিয়ে ফেরিঘাটেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে যাত্রী ও পণ্যবাহী পরিবহনগুলোকে। এ কারণে যাত্রী দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। সব মিলিয়ে এবার দক্ষিণ ও উত্তরের সড়কপথে ভোগান্তি চরমে উঠেছে। অনেকটা হাঁকডাক করেই দুর্ভোগ ছাড়াই ঈদ উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষের বাড়ি ফেরা নিশ্চিত হবে এমন ঘোষণা দিয়েছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী। কিন্তু ঈদের প্রায় এক সপ্তাহ আগে থেকে ঢাকা থেকে দেশের সবকটি গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে দুর্ভোগ বেড়েছে চরম আকারে। নিরাপদে ঘরে ফেরা নিশ্চিত করতে যেসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল এর বেশিরভাগই বাস্তবায়ন হয়নি। বাড়তি ভাড়া আদায় চলছে। বেশিরভাগ এলাকায় মহাসড়কের পাশে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ হয়নি। ঝুঁকি নিয়ে যাত্রী পরিবহন চলছে। সড়কে রেকারের অভাব, পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবক না থাকার অভিযোগ চালকদের। রাজধানীর ১৬টি যানজটপ্রবণ এলাকা দুর্ভোগমুক্ত হয়নি। গুরুত্বপূর্ণ ফেরিঘাটগুলোতে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। ভিজিলেন্স টিমের তৎপরতা নেই। তবুও আশাবাদী মন্ত্রী। সড়কে যথেষ্ট ব্যবস্থাপনার অভাব লক্ষ্য করা গেলেও শুক্রবার তিনি বলেছেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ জনকণ্ঠকে বলেন, ঢাকা-ময়মনসিংহ দুই ঘণ্টার রাস্তা আসতে সময় লাগছে আট ঘণ্টা। জয়দেবপুর চৌরাস্তা থেকে টঙ্গী আসতে সময় নিচ্ছে চার ঘণ্টার বেশি। তিনি জানান, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের অবস্থাও ভাল নয়। তিনি বলেন, শুক্রবার বিকেলে পুলিশের মহাপরিদর্শক একেএম শহীদুল হকসহ পরিবহন নেতারা মহাখালী টার্মিনাল পরিদর্শন করেছেন। মহাখালী আন্তঃজেলা বাস মালিক সিমিতির সভাপতি আবুল কালাম জনকণ্ঠকে বলেন, দেশের দক্ষিণ ও উত্তরাঞ্চলের বাসযাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় যানজটে আটকে থাকতে হচ্ছে যাত্রীদের। তিনি জানান, টঙ্গী থেকে চন্দ্রা, কোনাবাড়ি, বাইপাইল, আশুলিয়াসহ আশপাশের পুরো এলাকায় যানজট। ফলে অনেকটা অচলাবস্থা টাঙ্গাইল মহাসড়কেও। টাঙ্গাইল থেকে ঢাকা আসতে সময় লাগছে আট থেকে ১০ ঘণ্টা। ময়মনসিংহ থেকে আসতে আট ঘণ্টার বেশি সময় লাগছে। সিলেটের অবস্থা তুলনামূলক ভাল হলেও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে যানজটের ভোগান্তি আছেই। কলকাতা থেকে আসা যাত্রী সালাউদ্দিন জানান, বৃহস্পতিবার রাত আটটায় তিনি বেনাপোল থেকে সৌদিয়া পরিবহনে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন। শুক্রবার বিকেল চারটায় ঢাকা পৌঁছান। বাংলাদেশ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির নেতা আব্দুল মোতালেব জনকণ্ঠকে জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের অবস্থা বিকেল থেকে আরও খারাপ হয়েছে। ১২ থেকে ১৮ ঘণ্টা লাগছে সেখান থেকে ঢাকায় আসতে। এছাড়া টাঙ্গাইল মহাসড়কের চান্দুরা, জয়দেবপুরসহ আশপাশের রাস্তার অবস্থাও বেহাল। ভাড়া ডাকাতি ॥ মহাখালী থেকে টাঙ্গাইলের বিনিময় পরিবহনের বিরুদ্ধে ১০০ টাকার ভাড়া ৪০০ টাকা নেয়ার অভিযোগ করেন যাত্রীরা। নিরালা পরিবহনের যাত্রীরা বাড়তি ভাড়া নেয়ার অভিযোগ করেছেন। টাঙ্গাইলগামী শুধু নিরালা পরিবহন নয়, ধলেশ্বরী, ঝটিকা, মহানগর, তারকান্দি পরিবহনগুলোতেও একই দৃশ্য দেখা গেছে। অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার কারণ জানতে গিয়ে নিরালা পরিবহন, মহানগর, ঝটিকা এবং ধলেশ্বরী পরিবহনের কাউন্টারগুলো তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখা গেছে। সিরাজগঞ্জগামী অভি এন্টারপ্রাইজে ২৫০ টাকার টিকেট ৫০০ টাকায় বিক্রির কারণ জানতে চাইলে কাউন্টার মাস্টার উজ্জ্বল বলেন, রাস্তায় জ্যাম থাকায় গাড়ি ঢাকায় আসতে পারছে না। এজন্য অতিরিক্ত ভাড়া নেয়া হচ্ছে। একই কথা বলেন এসআই এন্টারপ্রাইজ ও স্টারলিংক ক্লাসিক পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার। জামালপুরের মাদারগঞ্জগামী রাজিব এন্টারপ্রাইজের ২৭০ টাকার টিকেট মিলছে ৫০০ টাকায়। একই দৃশ্য দেখা গেছে শেরপুরগামী সাদিকা পরিবহনেও। এ দুই পরিবহনের কর্মকর্তারা বলছেন, আসার সময় সিট খালি থাকায় খরচ সমন্বয় করতে ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। নেত্রকোনাগামী শাহজালাল এক্সপ্রেসে ২৫০ টাকার ভাড়া ৪০০ টাকা নেয়ার অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা। কিশোরগঞ্জগামী জলসিঁড়ি, অনন্যা, অনন্যা ক্লাসিক, উজান ভাটি, রাজা, বাদশা, বন্যা পরিবহনের কাউন্টারগুলোতে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে ২০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত বেশি ভাড়া নেন কাউন্টার মাস্টাররা। ব্রাক্ষণবাড়িয়ার আলিফ, নরসিংদীর পিসিএল সুপার এবং ময়মনসিংহ ও শেরপুরগামী আলম এশিয়া, ঈগল, সৌখিন, শ্যামলী বাংলা, ইমাম পরিবহনেও ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি ভাড়া নেয়ার অভিযোগ মিলেছে। এ বিষয়ে মহাখালী বাস ট্রাক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক জানান, নির্ধারিত বাড়ার বেশি কেউ আদায় করুক তা আমরা চাই না। কিন্তু যানজটের কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা, দিনের পর দিন রাস্তায় বসে যে খরচ হচ্ছে সেটা পূরণ করতেই এ পরিস্থিতির তৈরি হচ্ছে। মন্ত্রী আসায় বাড়তি ভাড়া ফেরত ॥ সায়েদাবাদের বাস কাউন্টারে কয়েকটি পরিবহনে ঈদে ঘরমুখী যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া রাখা হচ্ছিল। মন্ত্রী পরিদর্শনে এলে কয়েকটি পরিবহনের যাত্রীদের অতিরিক্ত ভাড়া ফেরত দেয়া হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিকেলে সায়েদাবাদ গেলে বাস মালিক সমিতি ও পরিবহন শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে কাউন্টারে গিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়ার তথ্য জানতে চাওয়া হয়। যাত্রীরা অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার কথা জানান। এর ফলে কয়েকটি পরিবহনের কাছ থেকে ১০০ টাকা করে যাত্রীদের ফেরত দিতে বাধ্য করা হয়। টাকা ফেরত পাওয়া ফালগুনী পরিবহনের এক যাত্রী নাম প্রকাশ না করে বলেন, বিকেল চারটার দিকে মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এখানে আসেন। এ পরিবহনের সব যাত্রীর কাছ থেকে ৫০০ টাকা করে টিকেটের দাম রাখা হয়েছিল। মন্ত্রী আসার আগ মুহূর্তে পরিবহন শ্রমিক নেতারা কিছু কিছু কাউন্টারে ঢুকে যাত্রীদের ভাড়ার বিষয়ে প্রশ্ন করেছেন। যাত্রীরা অতিরিক্ত ভাড়ার কথা বলেছেন। কিন্তু কাগজপত্রে ভাড়া দেখা যায় ৪০০ টাকা। তখন তারা কাউন্টারের লোককে ১০০ টাকা ফেরত দিতে বাধ্য করেছেন। গাবতলীতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বাসের অপেক্ষা ॥ টিকেট কাটা হয়েছে অনেক আগেই। নির্ধারিত সময়ের আগেই কাউন্টারে উপস্থিতি। কিন্তু বাসের দেখা নেই। অপেক্ষা ঘণ্টার পর ঘণ্টা। কর্তৃপক্ষ বলছে, মহাসড়কে যানজটের কারণে নির্ধারিত সময়ে বাস আসতে না পারায় এ দুর্ভোগ। আবার অনেকেই বাস পেলেও বেশি দামে টিকেট কেনার অভিযোগ করেছেন। শুক্রবার সকালে গাবতলী টার্মিনালে বাস ছাড়ার নির্ধারিত সময়ের পর ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও অনেকে দেখা পাননি কাক্সিক্ষত গাড়ির। কখন আসবে ঈদের অগ্রিম টিকেটের সেই গাড়ি, তাও বলতে পারছিলেন না কাউন্টারের লোকজন। দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ফেরি চলাচল বিঘিœত হওয়ার কথাই বারবার বলেছেন তারা। নির্ধারিত সময়ে গাড়ি না আসার কারণ জানতে চাইলে ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড় রুটের কেয়া পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার মফিদুল ইসলাম বলেন, গত কয়েকদিন ধরেই এ সমস্যা হচ্ছে। মূল কারণ হচ্ছে পাটুরিয়া ঘাটে ফেরি চলছে না ঠিকমতো। তাই খুলনা-যশোর-সাতক্ষীরার বাসগুলো সব এলেঙ্গা দিয়ে ঢুকছে। এ কারণে এলেঙ্গা থেকেই জ্যাম শুরু হয়েছে। মফিদুল জানান, তাদের একটি বাস বৃহস্পতিবার সকালে পঞ্চগড় থেকে রওনা হয়ে বিকেলে এলেঙ্গা পৌঁছায়। সেখান থেকে ঢাকা এসেছে শুক্রবার সকাল ৭টায়। শ্যামলী পরিবহনের কর্মচারী কালাম জানান, রাস্তায় যানজট থাকায় উত্তরাঞ্চলে চলা প্রায় সব গাড়ি বিলম্বে এসে পৌঁছাচ্ছে। এ কারণে যাত্রীদের কিছুটা ভোগান্তি হচ্ছে। আল হামরা পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার মিজানুর রহমান বলেন, সড়কে যাত্রী পরিবহনের পাশাপাশি কোরবানির পশুর ট্রাক চলাচলের কারণে যানজট বেশি হয়েছে। ঈগল পরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া রাখার অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা। এ প্রসঙ্গে ঈগল পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার আক্তার হোসেন বলেন, ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত এসি বাসের ভাড়া এক হাজার ৬০০ টাকা। এটা সরকার নির্ধারিত এবং আমরাও সেটাই নিচ্ছি। কেউ এর বেশি দাবি করলে সে অন্যায় করেছে। কেয়া পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার মনোয়ার হোসেন বলেন, সাধারণ সময়ে আমরা নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে কম ভাড়া রাখি। শুধু দুই ঈদেই আমরা সরকারী চার্ট ফলো করি। এ কারণেই যাত্রীরা মনে করেন, আমরা বেশি ভাড়া রাখছি। টার্মিনালের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দায়িত্বে থাকা র‌্যাব-৪-এর ডেপুটি এ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর মিজান সিদ্দিকী জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত তারা বড় কোন অভিযোগ পাননি। যাত্রী ভোগান্তি মেনে নেয়া হবে নাÑ নৌমন্ত্রী ॥ নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বলেছেন, যাত্রীদের ভোগান্তি মেনে নেয়া হবে না। শুক্রবার বিকেল সোয়া ৫টার দিকে রাজধানীর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের সঙ্গে কোন ধরনের প্রতারণা করা চলবে না। তাদের কাছ থেকে বেশি ভাড়া নেয়া হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ারও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন মন্ত্রী। সদরঘাটে মানুষের ভিড় ॥ সকালে কম থাকলেও দুপুরের পর থেকে সদরঘাট নদীবন্দরে ঘরমুখো মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলে যাওয়ার এ ঘাট থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ছেড়ে গেছে ৭০টির বেশি লঞ্চ। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডাব্লিউটিএ) পরিবহন পরিদর্শক (টিআই) সৈয়দ মাহফুজুর রহমান বলেন, শুক্রবার বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীর চাপ বাড়তে থাকে। বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম-পরিচালক মোঃ জয়নাল আবেদীন বলেন, বৃহস্পতিবার সারাদিন সদরঘাট থেকে ৯৪টি লঞ্চ দেশের দক্ষিণাঞ্চলে ছেড়ে যায়। শুক্রবার চাপ থাকায় এ সংখ্যা ১২০ ছাড়াতে পারে। তিনি জানান, বৃহস্পতি ও শুক্রবার অতিরিক্ত যাত্রী বা পন্টুনে লঞ্চ ভেড়ানো নিয়ে অপ্রীতিকর কোন ঘটনা ঘটেনি। ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সদরঘাটে তিন শতাধিক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি থানার ওসি আবুল হাসান। তিনি বলেন, ফুলবাড়িয়া থেকে যাত্রীদের আসতে যাতে কোন ধরনের অসুবিধা না হয়, কোন ধরনের হয়রানি যাতে না পোহাতে হয় সে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। সদরঘাটে পৌঁছতে যাত্রীদের যেন যানজটের মুখোমুখি হতে না হয় সেজন্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে কোন যানবাহন ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না বলেও জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।
×