ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সেপটিক ট্যাঙ্কে মিলল আরেক শিশুর মরদেহ

বাসাবোয় কালভার্ট থেকে স্কুলছাত্রের লাশ ২০ ঘণ্টা পর উদ্ধার

প্রকাশিত: ০৪:৩২, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬

বাসাবোয় কালভার্ট থেকে স্কুলছাত্রের লাশ ২০ ঘণ্টা পর উদ্ধার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর সবুজবাগের পূর্ব বাসাবো ওয়াসা রোডের কালভার্টের পানিতে তলিয়ে যাওয়া ১২ বছরের স্কুল ছাত্র শামিম হোসেনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। দীর্ঘ ২০ ঘণ্টা পর শুক্রবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে ওই কালভার্ট থেকে লাশটি উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। এদিকে উত্তর মানিকদিয়ার শেখের টেকের একটি বাসার সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে সাইক সাদাফ ইফতি (৫) নামে একটি শিশুর লাশ উদ্ধার হয়েছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, পূর্ব বাসাবোর কলভার্টে তলিয়ে যাওয়া শামিম কমলাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়াশোনা করত। তার বাবা শফিকুল ইসলাম অটোরিক্সার চালক। বাড়ি নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার বাগাদি গ্রামে। তারা বাসাবোর ওহাব কলোনির ভাড়াটিয়া। সবুজবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কুদ্দুস ফকির জনকণ্ঠকে জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে স্থানীয়রা থানায় সংবাদ দেয় পূর্ব বাসাবোর ওয়াসা রোডে কালভার্ট এলাকায় কয়েক শিশু খেলা করার সময় একটি শিশু কালভার্টে পড়ে গেছে। পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল তিন ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে শিশুটির সন্ধান না পেয়ে সেদিন সন্ধ্যা সাতটার দিকে অভিযান সাময়িক বন্ধ করে ফিরে যায়। শুক্রবার সকাল সাতটার দিকে পুনরায় ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল উদ্ধার অভিযান শুরু করে। সাড়ে নয়টার দিকে কালভার্ট থেকে শফিকুলের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে লাশের ময়নাতদন্তের জন্য সকাল দশটার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়। ওসি জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে তলিয়ে যাওয়া ওই শিশুর খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। রাত আটটা পর্যন্ত শিশুটির বাবা-মাকে সন্ধান করা হয়। কিন্তু তাদের খোঁজ না পাওয়ায় শিশুটির পরিচয় প্রথমে অজ্ঞাত ছিল। পরে তারা সংবাদ পেয়ে রাতেই বিষয়টি থানাকে অবহিত করে। শুক্রবার সকাল সাতটার দিকে ফায়ার সার্ভিসের ৪ ডুবুরি দল আবারও ওই কালভার্টে নেমে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। শামীমের বাবা পরে জানান, সবুজবাগের বাসাবোর ওহাব কলোনিতে তারা ভাড়া থাকে। বৃহস্পতিবার বেলা দুইটার দিকে বন্ধুদের সঙ্গে খেলার সময় পা পিছলে শামীম ওই কালভার্টে পড়ে যায়। এরপর থেকেই সে নিখোঁজ ছিল। ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা ওইদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়। শুক্রবার সকাল থেকে আবার খোঁজ করা শুরু হলে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে ছেলে শামিমের লাশ পাওয়া যায়। ফায়ার সার্ভিসের কন্ট্রোল রুমের ডিউটি অফিসার জানান, বৃহস্পতিবার বিকেল তিনটা ৫৫ মিনিটে সংবাদ পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৪ ডুবুরি ৫/৮ পূর্ব বাসাবোর ওয়াসা রোডের কালভার্টে তলিয়ে যাওয়া শিশুটিকে উদ্ধারে কাজ শুরু করে। প্রায় তিন ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে শিশুটিকে খুঁজে না পেয়ে সন্ধ্যা সাতটার দিকে সামায়িক অভিযান বন্ধ করে ফিরে যায়। শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে পুনরায় ওই কালভার্টে আবারও ডুবুরি দল নামে। আড়াই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়। সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে লাশ উদ্ধার ॥ শুক্রবার সকালে পুলিশ সবুজবাগ উত্তর মানিকদিয়ার শেখের টেকের একটি বাসার সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে সাইক সাদাফ ইফতি (৫) আরেক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে। পরে সকাল পৌনে দশটার দিকে ইফতির লাশের ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক মর্গে পাঠানো হয়। মৃত ইফতির বাবা ইব্রাহীম খলিল দোহারে বিদ্যুত বিভাগে কাজ করেন। ইফতি খিলগাঁও নাসিরাবাদ এলাকায় বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকত। সবুজবাগ থানার এসআই বাবর সরকার জানান, দুই থেকে তিন দিন আগে শেখের টেকের ইফতির নানা বাড়ি বেড়াতে যান তার মা। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটা থেকে ইফতিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এলাকায় খোঁজ করার পর সবুজবাগ থানায় জিডি করা হয়। শুক্রবার সকাল আটটার দিকে ঢাকনা খোলা সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে ইফতির লাশ উদ্ধার করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, এর্টি একটি দুর্ঘটনা। তবে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
×