ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

২৬ সংস্থাকে নিয়ে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে

২ বছরের মধ্যে ঢাকা উত্তরের চেহারা পাল্টাতে চান মেয়র

প্রকাশিত: ০৪:১৩, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬

২ বছরের মধ্যে ঢাকা উত্তরের চেহারা পাল্টাতে চান মেয়র

মশিউর রহমান খান ॥ সরকারী-বেসরকারী, আধা সরকারী, স্বায়ত্তশাসিত মোট ২৬ প্রতিষ্ঠানের প্রচেষ্ঠায় ও নাগরিকদের সহযোগিতায় আগামী ২ বছরের মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) বর্তমান চেহারা পাল্টে দিতে চান সংস্থাটির মেয়র আনিসুল হক। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে তিনি ডিএনসিসি এলাকায় অবস্থিত সব প্রতিষ্ঠান, বসবাসকারী নাগরিক ও বাড়ির মালিকদের নিয়ে সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা বাস্তবায়নে সমাজের সব শ্রেণীর নাগরিকদের সঙ্গে নিয়ে মাঠে নেমেছেন। মেয়রের মতে, আগামী ২ বছর ডিএনসিসি এলাকায় অবস্থিত সরকারী বেসরকারী সব সেবাদানকারী ও সংশ্লিষ্ট অফিসগুলোর কর্মকর্তা কর্মচারীদের পাশাপাশি সমাজের সব শ্রেণীর নাগরিকগণ আমাদের সহায়তা করেন তাহলে বর্তমান পরিকল্পনা অনুযায়ী ঢাকা উত্তর সিটির বর্তমান চেহারাই পাল্টে দেয়া সম্ভব হবে। মূলত সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে ডিএনসিসির সামগ্রিক এলাকার জন্য একটি এ্যাকশান এরিয়া প্ল্যান তৈরি করেই এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। আর এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় সরকারের ২৬ সংস্থাকে একসঙ্গে সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করছেন সংস্থাটির মেয়র আনিসুল হক। রাজধানীতে বসবাসরত নাগরিকদের কাছে বিশ্বের উন্নত দেশের শহরের মতো ঘরে বসেই সব নাগরিক সেবা পাওয়ার লক্ষে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ও সহযোগিতায় দিনরাত কাজ করছেন ঢাকার নির্বাচিত উত্তর ও দক্ষিণ সিটির দুই মেয়র। এরই অংশ হিসেবে ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষ আগামী ২ বছরে বর্তমান নগরের ধারণাকে পাল্টে দেয়ার সময় নির্ধারণ করে সামনের দিকে এগোচ্ছেন। প্রাথমিকভাবে ২৫ এজেন্ডাকে সামনে রেখে ২৬ সংস্থার সমন্বয়ে সার্বিক কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ডিএনসিসি অনড় অবস্থান নিয়েছেন। গত ২৭ জুলাই সিটি কর্পোরেশনকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পাঠানো পরিপত্র অনুযায়ী সিটি কর্পোরেশন অধিক্ষেত্র সরকারী বিভিন্ন সেবাদানকারী সংস্থার কাজে অধিকতর গতিশীলতা আনতে চায়। এ লক্ষে স্থানীয় সরকার আইন (সিটি কর্পোরেশন) ২০০৯ এর ৪৯ (১৫) ধারার উদ্দেশ্য পূরণের লক্ষে সরকার বিশেষ নির্দেশনা প্রদান করেছেন। এতে ডিএনসিসির আওতাভুক্ত সেবাদানকারী সংস্থা ও সংশ্লিষ্ট অন্য সরকারী দফতরের প্রধানগণ সিটি কর্পোরেশনের নাগরিকদের সুবিধার্থে প্রয়োজনে সংস্থাটি কর্তৃক আহ্বান করা সভায় নাগরিকদের জীবনমান উন্নয়নের স্বার্থে সব সরকারী স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার প্রধানদের বাধ্যতামূলকভাবে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি সভায় আলোচিত সিদ্ধান্তসমূহ পরবর্তী সভায় এর বাস্তবায়নের সর্বশেষ তথ্য তুলে ধরতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ নির্দেশের আলোকে গত ২৪ আগস্ট প্রথমবারের মতো সমন্বয় সভার আয়োজন করে ডিএনসিসি। এতেই আগামী ২ বছরে ঢাকাকে পরিবর্তনের পরিকল্পনা তুলে ধরেন আনিসুল হক। এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়য়নে মেয়র সবার সহযোগিতা চান। ডিএনসিসি সূত্র জানায়, পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী ২ বছর রাস্তায় চলমান ট্রাফিক জ্যাম পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা, ফুটপাথের হকার ও অবৈধ দখল প্রতিরোধ ও অপসারণ করা, রাস্তা কাটতে চাইলে কমপক্ষে ৬ মাস আগে ডিএনসিসির অনুমতি নেয়া, বর্তমানের সামান্য বৃষ্টিতে তৈরি হওয়া জলজট নিরসন করা, বর্জ্য ব্যবস্থানায় উন্নত বিশ্বের মতো আধুনিকীকরণ করা, ডিএনসিসি এলাকায় হওয়া সত্ত্বেও অবস্থিত ৩টি পার্ককে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনা ও এর ব্যবহারে আধুনিকীকরণ করা, রাজধানীর যেসব রাস্তা এখনও সড়ক ও জনপথের অধীনস্থ রয়েছে সেগুলোকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনা, সব ধরনের অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে দেয়া, রাস্তায় চলাচলরত নাগরিকদের বসার জন্য যাত্রী ছাউনিগুলোকে ব্যবহার উপযোগী ও যাত্রী বিশ্রামের ব্যবস্থা করা, যত্রতত্র বিজ্ঞাপনমুক্ত পরিচ্ছন্ন ও নিরাপদ শহর তৈরি করা, সব ধরনের অবৈধ অননুমোদিত ব্যানার, ফেস্টুন সরিয়ে নেয়া, প্রতিদিনের বর্জ্য ডিসপোজাল করার জন্য নতুন ল্যান্ডফিল তৈরি করা, নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করে ‘নগর ভবন’ তৈরি করা হবে। এছাড়া বাস ও ট্রাকস্ট্যান্ড তৈরি করা, সব ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ ভবন নির্ধারণ করে সেগুলো আপসারণ করা, আবাসিক এলাকায় সব ধরনের বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া, উত্তরাবাসীর সুবিধার্থে উত্তরা এলাকার রাস্তাঘাট উন্নয়নসহ কাঁচাবজার নির্মাণ করা ও প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছানুযায়ী পাইকারি ফুলের বাজার তৈরি করা, গুলশান বনানীতে চলমান বিশেষ বাস সার্ভিস যুগোপযোগী করা ও পরিবহন ব্যবস্থায় আধুনিকীকরণ করা হবে। গুলশান, বনানী ও বারিধারায় লেক উন্নয়ন করে একে ব্যবহার উপযোগী করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এসব উদ্যোগ বাস্তবায়ন আগামী ২ বছরের মধ্যেই সম্পন্ন করবে বলে জানা গেছে। পরিকল্পনায়, নক্সা বহির্ভূত ভবন বা স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ করা, মশকনিধন কার্যক্রমের প্রতিবন্ধকতা দূর করা, হোল্ডিং টেক্স আদায়ের চলমান সমস্যা দূর করা, আধুনিক ও যুগোপযোগী স্বচ্ছ কাচের পুলিশ বক্স তৈরি করা, রাস্তার উপর স্থাপিত ইউটিলিটি পোল সরানো ও ঝুলন্ত তার সরাতে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করতে ডিএনসিসি বর্তমানে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) কর্তৃক ভবন নির্মাণের জন্য নক্সা অনুমোদন করলেও পরবর্তীতে বাড়ি বা প্রতিষ্ঠান মালিকগণ তাদের সুবিধা অনুযায়ী বাড়ির আংশিক বা অনেকটা পরিবর্তন করে ফেলেন। যার প্রভাবে রাস্তায় চলাচলে সমস্যার সৃষ্টি হয়। এক্ষেত্রে রাজউককে সিটি কর্পোরেশন সহায়তা করবে বলে জানা গেছে। মূলত সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে ডিএনসিসির সামগ্রিক এলাকার জন্য একটি এ্যাকশান এরিয়া প্ল্যান তৈরি করেই এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। আর এসব পরিকল্পনার কয়েকটি অতি দ্রুতই বাস্তবায়ন কাজ শুরু করা হবে। আবার কয়েকটির কাজ চলমান রয়েছে। সূত্র জানায়, প্রকৃতপক্ষেই এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে ডিএনসিসির বর্তমান চেহারা অনেকটা পাল্টে যাবে। ডিএনসিসির নেয়া এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) সড়ক ও জনপথ অধিদফতর, স্থাপত্য অধিদফতর, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত অধিদফতর, ওয়াসা, ঢাকা জেলা প্রশাসন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি), র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটেলিয়ান (র‌্যাব), বাংলাদেশ টেলি কমিউনিকেসন্স কোম্পানি (বিটিসিএল), তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেড, বিআইডব্লিউটিএ, বাংলাদেশ রেলওয়ে, জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ), স্বাস্থ্য অধিদফতর, বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ডসহ মোট ২৬ সরকারী, বেসরকারী ও স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করবে। জানা গেছে, পরিবর্তনের অংশ হিসেবে করা ডিএনসিসির পরিকল্পনায় প্রাথমিকভাবে ভয়াবহ ট্রাফিক জ্যাম নিয়ন্ত্রণে ১২ স্থানকে যানজটমুক্ত করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এতে পুলিশের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করবে বলে জানা গেছে। সামান্য বৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা নিরসনে ঢাকা মহানগরীর ৪৩ খালের মধ্যে ওয়াসা নিয়ন্ত্রিত ২৬, ঢাকা জেলা প্রশাসন নিয়ন্ত্রিত ৮ ও ৯ বক্স কালভার্ট বা ব্রিক স্যুয়ার লাইনের মাধ্যমে বিকল্প ব্যবস্থায় পরিচালিত হচ্ছে। এসব খাল ও ড্রেন নিষ্কাশন করে ও অবৈধ দখল থেকে উদ্ধার করা হবে। এরপর এসব সংস্থা কর্তৃক পুনরায় খনন করে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখা হবে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে অতি দ্রুত ৬ খাল পুনঃখনন করা হবে। বাসা থেকে আনা ময়লা আবর্জনা রাখার জন্য ডিএনসিসি এলাকায় ৭২ স্থানে সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন (এসটিএস) স্থাপন করা হবে। এর মধ্যে ৬৩ স্থাপনের কাজ শেষ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। রাজউক ও গণপূর্ত অধিদফতরের অধিভুক্ত ডিএনসিসি এলাকার ৪ পার্ক হস্তান্তর করতে ইতোমধ্যেই সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দিয়েছে ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষ। এছাড়া ডিএনসিসির অন্তভুক্ত সীমানায় বেশ কিছু রাস্তা সড়ক ওজনপথ অধিদফতর ও গণপূর্ত অধিদফতরের হওয়ায় এসব স্থানে ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষ কোন প্রকার সৌন্দর্য বর্ধন ও উন্নয়ন করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই অতি দ্রুত এসব রাস্তা ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষ তাদের আওতাভুক্ত করতে চায়। এ লক্ষ্যে সংশ্লিষ্টদের চিঠি দিয়েছে ডিএনসিসি। যাত্রী সাধারণের বিশ্রামের সুবিধার্থে ডিএনসিসি এলাকার বিআরটিসির তৈরি ৮ যাত্রী ছাউনি ও সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের তৈরি ১৬ যাত্রী ছাউনি জরাজীর্ণ ও ব্যবহার উপযোগী হওয়ায় ডিএনসিসি এসব স্থানে নিজস্ব অর্থায়নে যাত্রী ছাউনি তৈরি করবে। এছাড়া যে কোন প্রতিষ্ঠান তাদের ভবনে বিজ্ঞাপন প্রচার করতে চাইলে টেক্স পরিশোধ করে বাধ্যতামূলকভাবে ডিএনসিসির অনুমোদন নিতে হবে। নতুন নতুন বাস ও ট্রাকস্ট্যান্ড নির্মাণ করা হবে। এ জন্য জমি খোঁজা হচ্ছে বলে জানা গেছে। সব ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভেঙ্গে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। রাস্তার উপর বা ফুটপাথে তৈরি করা পুলিশ বক্স সম্পূর্ণ বিজ্ঞাপনমুক্ত করে স্বচ্ছ কাচের পুলিশ বক্স তৈরি করবে ডিএনসিসি। এছাড়া রাস্তার উপর সব প্রকারের বৈদ্যুতিক পোল সরিয়ে নেয়া হবে। আর রাস্তার উপর কোন প্রকার তার ঝুলতে দেয়া হবে না। মূলত ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষ তাদের এলাকার বর্তমান চেহারা পাল্টে দিতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিচ্ছে। উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে প্রকৃতপক্ষেই ডিএনসিসির চেহারা পাল্টে যাবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হক জনকণ্ঠকে বলেন, নাগরিকদের জীবনমান উন্নয়নে সব সুবিধা প্রদান করতে ও চাহিদার কথা মাথায় বেশ কিছু পরিকল্পনা নিয়ে আমরা কাজ করছি। আগামী ২ বছরে এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা ডিএনসিসির বর্তমান চেহারাই পাল্টে দেব। এজন্য সমাজের সব শ্রেণীর নাগরিকদের পাশাপাশি সরকারী বেসরকারী সব প্রতিষ্ঠানকে কাজে লাগানো হবে। এছাড়া এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী ডিএনসিসি এলাকায় অবস্থিত সরকারী ও স্বায়ত্তশাসিত সেবাদানকারী ও সংশ্লিষ্ট ২৬ প্রতিষ্ঠানকে সঙ্গে নিয়ে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাব। পরিকল্পনা অনুযায়ী ট্রাফিক জ্যাম পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা, ফুটপাথের হকার ও অবৈধ দখল প্রতিরোধ ও অপসারণ করা, যত্রতত্র রাস্তা কাটা বন্ধ করা, সামান্য বৃষ্টিতে তৈরি হওয়া জলজট নিরসন করা, বর্জ্য ব্যবস্থানায় উন্নত বিশ্বের মতো আধুনিকীকরণ করা হবে। এছাড়া ডিএনসিসি এলাকায় অবস্থিত ৪ পার্ককে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে এনে এগুলো আধুনিকায়ন করা হবে। রাজধানীর যেসব রাস্তা এখনও সড়ক ও জনপথের অধীনস্থ রয়েছে সেগুলোকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনা হবে। সকল প্রকার অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে দেয়া ও রাস্তায় চলাচলরত নাগরিকদের বসার জন্য বর্তমান যাত্রী ছাউনিগুলোকে ব্যবহার উপযোগী ও যাত্রী বিশ্রামের ব্যবস্থা করা হবে। যত্রতত্র বিজ্ঞাপনমুক্ত পরিচ্ছন্ন শহর তৈরি করা হবে। এর বাইরে সকল প্রকার অবৈধ অননুমোদিত ব্যানার, ফেস্টুন সরিয়ে নেয়া হবে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নতুনত্ব আনতে প্রতিদিনের বর্জ্য ডিসপোজাল করার জন্য নতুন ল্যান্ডফিল তৈরি করা হবে। নতুন ‘নগর ভবন’ তৈরি করা হবে। যত্রতত্র বাস ট্রাক রাখা বন্ধ করতে নির্দিষ্ট স্থানে বাস ও ট্রাকস্ট্যান্ড তৈরি করা হবে। ডিএনসিসিতে কোন ঝুঁকিপূর্ণ ভবন রাখা হবে না। আবাসিক এলাকায় সকল প্রকার বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। উত্তরায় রাস্তাঘাট উন্নয়নসহ কাঁচাবজার নির্মাণ করা ও প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছানুযায়ী পাইকারি ফুলের বাজার তৈরি করা হবে। গুলশান বনানীতে চলমান বিশেষ বাস ও রিক্সা সার্ভিস যুগোপযোগী করা ও পরিবহন ব্যবস্থায় আধুনিকীকরণ করা হবে। গুলশান, বনানী ও বারিধারায় লেক উন্নয়ন করে একে ব্যবহার উপযোগী করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এসব উদ্যোগ বাস্তবায়ন আগামী ২ বছরের মধ্যেই সম্পন্ন করা হবে। তবে এর মধ্যে কিছু পরিকল্পনা ইতোমধ্যেই বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। যার ফলাফল নাগরিকগণ পেতে শুরু করেছেন। নক্সা বহির্ভূত ভবন বা স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ করা হবে ও জনস্বাস্থ্য রক্ষায় মশকনিধন কার্যক্রমের সব প্রতিবন্ধকতা দূর করা হবে। হোল্ডিং টেক্স আদায়ের চলমান সমস্যা দূর করে রাজস্ব আয় বর্তমানের চেয়ে অনেক বৃদ্ধি করা হবে। ট্রাফিক পুলিশের কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে আধুনিক ও যুগোপযোগী স্বচ্ছ কাচের পুলিশ বক্স তৈরি করা হবে। রাস্তার উপর স্থাপিত ইউটিলিটি পোল সরানো ও ঝুলন্ত তার সরাতে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে ডিএনসিসিকে আমরা বিশ্ববাসীর কাছে সুন্দর নগরী হিসেবে উপহার দিতে চাই। এজন্য তিনি সরকারসহ সমাজের সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
×