ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

টি২০ জিতে পাকিদের ইংল্যান্ড সফর শেষ

প্রকাশিত: ০৬:৩৭, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬

টি২০ জিতে পাকিদের ইংল্যান্ড সফর শেষ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এবার ইংল্যান্ড সফরটা কেমন গেল পাকিস্তানের? একবাক্যে বলা যেতেই পারে দুর্দান্ত। ৬ বছর আগে সর্বশেষ যখন দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলতে গিয়েছিল পাকরা, তখন কলঙ্কজনক এক অধ্যায়ের সূচনা হয়েছিল বিশ্ব ক্রিকেটে। স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে শুধু আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে ৫ বছর নিষিদ্ধ হননি, কারাভোগও করেছেন তিন ক্রিকেটার সালমান বাট, মোহাম্মদ আসিফ ও মোহাম্মদ আমির। তাই এবার নানা ভ্রƒকুটি, নিন্দুকদের কটাক্ষকে গ্রহণ করেই মাঠে নামতে হয়েছিল পাকদের। সেক্ষেত্রে পুরোপুরিই সফল পাকরা। টেস্ট সিরিজ ২-২ ব্যবধানে ড্র ও ওয়ানডে সিরিজ বাজে গেলেও শেষ ম্যাচে দুর্দান্ত জয়ে ৪-১ ব্যবধানে হার। তবে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে সফরের একমাত্র টি২০ ম্যাচে দারুণ তেলেসমাতি দেখিয়েছে নতুন অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদের দল। ৯ উইকেটে বিধ্বস্ত করেছে স্বাগতিক ইংল্যান্ডকে। টি২০ ইতিহাসে এটিই নিজেদের সবচেয়ে বড় ব্যবধানের জয় পাকিস্তানের। ৭ উইকেটে ১৩৫ রান করেছিল ইংল্যান্ড। পাকরা মাত্র ১৪.৫ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ১৩৯ রান তুলে জয় পায়। সার্বিকভাবে তাই বলা যায় চাপের মুখে থেকেও দারুণ একটি সফর শেষ করেছে পাকরা। এবার ইংল্যান্ড সফরে নানাবিধ চ্যালেঞ্জ ছিল ভাল করার। এরপরও ১৫ বছর পর এবার টেস্ট সিরিজ ড্র করেছে পাকিস্তান। ২০০১ সালে সর্বশেষবার ১-১ সমতায় টেস্ট সিরিজ শেষ করেছিল তারা। ২০১০ সালের সর্বশেষ সফরেও টেস্ট সিরিজে ৩-১, ওয়ানডে সিরিজে ৩-২ এবং টি২০ সিরিজে ২-০ ব্যবধানে হেরে ফিরেছিল পাকিস্তান। সঙ্গে ছিল স্পট ফিক্সিং কা-ে জড়ানোর কলঙ্কজনক লজ্জা। সেই পাকরা এবার টেস্ট সিরিজ দুর্দান্ত খেলে ২-২ সমতায় শেষ করল এবং প্রথমবারের মতো আইসিসির টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ে উঠে গেল শীর্ষে। কিন্তু ওয়ানডে সিরিজে একেবারেই নাজেহাল পাকরা ৪-১ ব্যবধানে হারে। শেষ ম্যাচে দারুণ জয়ে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা এড়াতে পেরেছে তারা। তবে ওই জয়টাই একমাত্র টি২০ ম্যাচে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে সরফরাজদের। তরুণ এ উইকেটরক্ষক অধিনায়ক হিসেবে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেই টস হারেন। এটি টি২০ বিশ্বকাপে পাকদের লজ্জাজনক গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায়ের পর প্রথম টি২০। টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে দারুণ শুরু করেছিল ইংল্যান্ডের পক্ষে জেসন রয় ও এ্যালেক্স হেলস। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে বিনা উইকেটে ৫৩ রান যোগ করেন তারা। তবে এরপর পেস অলরাউন্ডার ইমান ওয়াসিমের জোড়া আঘাতে ঘুরে দাঁড়ায় পাক বোলাররা। তিনি ফিরিয়ে দেন জেসন (২০ বলে ২১) ও হেলসকে (২৬ বলে ৫ চারে ৩৭)। এরপর আর বড় কোন ইনিংস খেলতে পারেননি কোন ইংলিশ ব্যাটসম্যান। ওয়াহাব রিয়াজ ক্যারিয়ারসেরা বোলিং করে মাত্র ১৮ রানে নেন ৩ উইকেট। দুটি করে উইকেট পান ইমাদ ও হাসান আলী। ৭ উইকেটে মাত্র ১৩৫ রান তোলে ইংলিশরা। জবাব দিতে নেমে শুরুতেই জয়ের ভিত পেয়ে যায় পাকরা। দুই ওপেনার শারজিল খান ও খালিদ লতিফ দুর্দান্ত ব্যাটিং করেন। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারেই ৭৩ রান তোলে তারা। এটি টি২০ ইতিহাসে পাওয়ার প্লেতে তাদের সেরা সংগ্রহ। ২০১১ সালে হারারেতে জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে ৭২ রান করেছিল তারা প্রথম ৬ ওভারে। উভয়ে অর্ধশতক হাঁকান। ১০৭ রানের জুটি গড়ার পর শারজিল ৩৬ বলে ৭ চার ও ৩ ছক্কায় ৫৯ রান করে ফিরে যান আদিল রশিদের বলে। তবে লতিফ দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন। তিনি ৪২ বলে ৮ চার ও ২ ছক্কায় ৫৯ রানে অপরাজিত থাকেন। মাত্র ১৪.৫ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ১৩৯ রান তুলে জয় নিশ্চিত করে পাকরা। এর আগে তিনবার ৮ উইকেটে জয় পেয়েছিল পাকরা। এবার টি২০ ক্রিকেটে নিজেদের সবচেয়ে বড় জয়টা পেল। স্কোর ॥ ইংল্যান্ড ইনিংস- ১৩৫/৭; ২০ ওভার (হেলস ৩৭, জেসন ২১, বাটলার ১৬; ওয়াহাব ৩/১৮, ইমাদ ২/১৭, হাসান ২/২৪)। পাকিস্তান ইনিংস- ১৩৯/১; ১৪.৫ ওভার (শারজিল ৫৯, খালিদ ৫৯*, বাবর ১৫*; আদিল ১/২৯)। ফল ॥ পাকিস্তান ৯ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ ওয়াহাব রিয়াজ (পাকিস্তান)।
×