ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ক্রিকেটারদের তিনদিনের আল্টিমেটাম স্ট্রসের

প্রকাশিত: ০৬:৩৬, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬

ক্রিকেটারদের তিনদিনের আল্টিমেটাম  স্ট্রসের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ পাকিস্তানের বিপক্ষে ঘরোয়া সিরিজ শেষ। একটি আন্তর্জাতিক সিরিজ চলার মধ্যে আর ক্রিকেটারদের কোন ধরনের চাপ প্রয়োগ করা হয়নি ইংলিশ ক্রিকেটারদের ওপর। এ মাসের শেষদিকে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফর। নিরাপত্তা ইস্যু নিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে এবং ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) বাংলাদেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখার জন্য একটি দলও পাঠিয়েছিল। সেই দলটির প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে সময়মতোই বাংলাদেশ সফরে আসার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে ইসিবি। কিন্তু বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার বাংলাদেশ সফরে আসবেন কিনা তা নিয়ে এখন পর্যন্ত আছেন সংশয়ে। অনেকেই নিশ্চিত করেননি বাংলাদেশ সফরে আসার বিষয়টি। কিন্তু পাকদের বিপক্ষে সিরিজ শেষ হওয়ার পরই ইসিবির ক্রিকেট পরিচালক এ্যান্ড্রু স্ট্রস এবার চাপ প্রয়োগ করেছেন ক্রিকেটারদের ওপর। তিনদিন সময় বেঁধে দিয়েছেন সবাইকে বাংলাদেশ সফর নিয়ে নিশ্চিত করে জানানোর জন্য। ইংল্যান্ড ওয়ানডে ও টি২০ দলের অধিনায়ক ইয়ন মরগান বাংলাদেশের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে মাস খানেক আগে নিরপেক্ষ ভেন্যুর প্রস্তাব করেছিলেন। এখন পর্যন্ত তিনি নিজেই আছেন দোটানায়। ইতোমধ্যে এ্যালেক্স হেলস, মঈন আলী, ক্রিস জর্ডানসহ অনেকেই বাংলাদেশ সফরে আসার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। অনেক ক্রিকেটার নিজ থেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ সফর না করলে ইংল্যান্ড দলে নিজেদের অবস্থান হারানোর। একই কথা এবার সাবেক অধিনায়ক স্ট্রসেরও। তিনি মনে করেন যে ক্রিকেটার বাংলাদেশ সফরে যাবেন না সে নিশ্চিতভাবেই দলে অবস্থান হারানোর ঝুঁকিতে থাকবেন। টেস্ট অধিনায়ক এ্যালিস্টার কুককেও সিদ্ধান্ত নেয়ার ভার দেয়া হয়েছে তিনি যেতে চান কিনা। তবে জুলাইয়ের শুরুতে রাজধানী ঢাকার একটি রেস্টুরেন্টে জঙ্গী হামলায় ২০ বিদেশী নাগরিক নিহত হওয়ার পর ওয়ানডে অধিনায়ক মরগান এ বিষয়টি নিয়ে টালবাহানা করছেন। এ বিষয়ে মরগান পাকিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টি২০ শেষে বলেন, ‘আমি একজন অধিনায়ক হিসেবে মনে করি, সেখানে মিলেমিশেই যাওয়া ভাল। কিন্তু সেক্ষেত্রে আসলে স্বস্তিবোধের প্রয়োজন আছে এবং দরকার আছে স্বাচ্ছন্দ্যের। কারণ ক্রিকেটে পুরোপুরি মনোনিবেশ করতে না পারলে দলকে লাভজনক কিছু দেয়া সম্ভব হয় না। আসলে এটা নির্ভর করছে আমি কতখানি স্বস্তি নিয়ে যেতে পারব সেখানে।’ জুলাইয়ের জঙ্গী হামলার পর সার্বিক নিরাপত্তা খতিয়ে দেখার জন্য তিন সদস্যের একটি পর্যবেক্ষক দল পাঠায় ইসিবি। দীর্ঘদিন ধরে ইসিবির নিরাপত্তা কমিটিতে কাজ করছেন রেগ ডিকেসন। তিনিই বর্তমানে এর প্রধান। তার প্রতিবেদন পাওয়ার পর ইসিবি নিশ্চিত করে দেয় বাংলাদেশ সফর করবে ইংল্যান্ড এবং সেটা সময় মতোই। কিন্তু এখন পর্যন্ত অধিকাংশ ক্রিকেটার এ বিষয়ে নিজেদের কোন মতামত না জানানোয় এবার ইসিবি পদক্ষেপ নিচ্ছে। ক্রিকেট পরিচালনা প্রধান স্ট্রস নিজে চুক্তিতে থাকা ক্রিকেটারদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য বসবেন আগামী তিনদিনে। ক্রিকেটারদের বার্ষিক নৈপুণ্য বিশ্লেষণের সময় লাফবোরোতে ইংল্যান্ডের জাতীয় ক্রিকেট একাডেমি ভবনে ৯ ও ১০ সেপ্টেম্বর সবার সঙ্গে কথা বলবেন স্ট্রস। এ সময় তিনি ব্যক্তিগতভাবে প্রতিটি ক্রিকেটারের কাছে জানতে চাইবেন বাংলাদেশ সফরে যাওয়ার বিষয়ে। কারণ ১৬ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সফরের জন্য চূড়ান্ত দল ঘোষণা করবে ইসিবি। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে পাকিস্তানের বিপক্ষে টি২০ ম্যাচের আগে স্ট্রস বলেন, ‘আমাদের উভয় অধিনায়ককে আমি এই সফরে কি পেতে পারি না? অবশ্যই এবং নিশ্চিতভাবেই সেটা আমি চাই। আমাদের এটা নিশ্চিত করতে হবে। কারণ দুই অধিনায়কের ওপরই অনেক বড় দায়িত্ব আছে ব্যক্তিগত বিষয়াদি ছাড়াও। দিনশেষে তারাও তো মানুষই। কিন্তু পরিস্থিতি ও অবস্থান অনুসারে তাদের ভাবতে হবে সবার কথা। আমাদের বোধোদয় হয়েছে যে সেখানে যাওয়াটা নিরাপদ। কিন্তু তারা কেউ যদি বলে এটা নিরাপদ না তাহলে সেটা তার জন্য হতে পারে এবং যদি বলে নিরাপদ সেটাও ঠিক আছে। কিন্তু আমি আসলে কাউকে এজন্য চাপ দিয়ে বলতে পারি না যে তোমার যেতেই হবে।’
×