ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ঈদযাত্রায় ভোগান্তি

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬

ঈদযাত্রায় ভোগান্তি

ঢাকার প্রায় কোটি মানুষ ঈদ উপলক্ষে ঢাকার বাইরে যান। ফলে একসঙ্গে সড়কপথসহ বিভিন্ন পথ এবং বিভিন্ন যানবাহনের ওপর চাপ বাড়ে। এই চাপ অনেক সময় সামাল দেয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। দুই ঈদে দু’ধরনের বাস্তব পরিস্থিতি বিরাজ করে। কোরবানি ঈদের সময় কোরবানির পশু ঢাকার হাটগুলোয় প্রবেশ করে। পশুর সঙ্গে পশুর মালিক ও ব্যবসায়ীরা থাকেন। ঢাকায় এমন বিপুল জনসমাগম বাড়তি চাপ তৈরি করে। ঈদ সামনে রেখে সড়ক-মহাসড়কের ছয় পয়েন্টে যানজটের আশঙ্কা করছেন পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা। এছাড়া তীব্র স্রোতের কারণে ঘাট ভেঙ্গে যাওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ দুটি ফেরিঘাটে ভোগান্তির মাত্রা ছাড়াতে পারে এবার। জনকণ্ঠে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছেÑ যানজটপ্রবণ এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে আশুলিয়া, কোনাবাড়ি, চন্দ্রা, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক, ঢাকা-জয়দেবপুর চৌরাস্তা ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দাউদকান্দি থেকে ইলিয়টগঞ্জ, কুমিল্লার পদুয়ার বাজার, বড়দারগারহাট। রোজার ঈদেও এসব পয়েন্টে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল। তবুও কোন কোন পয়েন্টে যানজটের ভোগান্তি চরমে ওঠে। দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ও মাওয়া-চরজানাজাত এই দুই ফেরিঘাটে ইতোমধ্যে পণ্য ও যাত্রীবাহী পরিবহনকে আটকে থাকতে হচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে নিত্য যানজট লেগে আছে। জয়দেবপুর যেতেই সময় লাগছে চার ঘণ্টা; গুরুত্বপূর্ণ দুই ফেরিঘাটেই অচলাবস্থা বিরাজ করছে। এর ওপর পণ্য ও পশুবাহী গাড়ির চাপ বেড়ে গেছে মহাসড়কে। সবমিলিয়ে ঈদযাত্রা ভোগান্তির হয়ে উঠেছে এতে কোন সন্দেহ নেই। ভাঙ্গনের মুখে অচলপ্রায় দৌলতদিয়া ফেরিঘাট। চারটি ঘাটের একটি দিয়ে কোনমতে যানবাহন পারাপার হচ্ছে। ঘাটে ফেরি ভিড়তে না পারায় পদ্মা নদীর উভয় পারে নিয়মিত আটকা পড়ে শত শত যানবাহন। এক মাস আগেও ঠিক একই রকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু স্থায়ী কোন সমাধানের পথ খুঁজে বের করা সম্ভব হয়নি। শুক্রবার থেকে সরকারী ছুটি শুরু হলেও ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে ঈদযাত্রা। ঘাটের এই অবস্থা থাকলে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সড়কপথের যাত্রীদের ঈদযাত্রায় যে চরম ভোগান্তি হবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। পারাপার ব্যাহত হলে বাজারে তার প্রভাব পড়বে। ক্ষতিগ্রস্ত হবেন ব্যবসায়ীরা। পচনশীল পণ্যের ট্রাকও আটকা পড়েছে এই ঘাটে। অতি সত্বর দৌলতদিয়ার চারটি ঘাট মেরামত করা না হলে কিংবা নতুন ঘাট তৈরি না করলে এ পথে যাতায়াত একেবারে বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এটা ঠিক যে নদীপথে সমস্যা এড়ানো কঠিন। বর্ষা মৌসুমে নদীর পানি ও স্রোত বেড়ে গেলে সমস্যাও বেড়ে যায়। নদীপথ চালু রাখতে তিন কর্তৃপক্ষÑ বিআইডব্লিউটিএ, বিআইডব্লিউটিসি, সড়ক ও জনপথ বিভাগকে সার্বক্ষণিক সজাগ ও সক্রিয় থাকতে হবে। এ কাজে সমন্বয় অত্যন্ত জরুরী। এটির অভাবেই অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়ে থাকে। কর্তৃপক্ষ সমস্যা সম্পর্কে সম্যক অবহিত এটা ধারণা করা যায়। এখন সমস্যাগুলোর আশু সমাধানে সামান্যতম গাফিলতির কোন সুযোগ নেই। ঈদে মানুষের ভোগান্তি কমানোর জন্য ছয় মাস আগে থেকে মনিটর করার কোন বিকল্প নেই। আন্তরিক হলে সমাধানের উপায়ও বেরিয়ে আসবে। ঈদের সময় মানুষ ঘরমুখো হয়, পরিবার পরিজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয়। সেই ঈদযাত্রা নির্বিঘœ হোকÑ এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
×