ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নগদ টাকা তোলার চাপ বাড়লেও কলমানি স্বাভাবিক

শেষ কর্মদিবসে ব্যাংকে উপচেপড়া ভিড়

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬

শেষ কর্মদিবসে ব্যাংকে  উপচেপড়া ভিড়

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর পবিত্র ঈদ-উল-আযহা। ঈদের আগে শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার তাই ব্যাংকগুলোতে ছিল গ্রাহকদের উপচেপড়া ভিড়। এদিন নগদ টাকা উত্তোলন ও জমা দেয়ার জন্য দীর্ঘ লাইন লেগে যায়। এতে ব্যস্ত সময় পার করতে হয়েছে ব্যাংকের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের। শুধু ব্যাংকের শাখাই নয়, এটিএম বুথগুলোতেও গ্রাহকদের অধিক ভিড় লক্ষ্য করা যায়। রাজধানীর মতিঝিল, দিলকুশা, বিজয়নগরসহ বিভিন্ন এলাকার বাণিজ্যিক ব্যাংকের শাখা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। এদিকে, কোরবানির পশুসহ বাড়তি কেনাকাটায় নগট টাকা তোলার চাপ বাড়লেও শেষ কার্যদিবসেও আন্তঃব্যাংক কলমানির সুদের হার স্বাভাবিক ছিল। এদিন কলমানিতে সর্বোচ্চ সাড়ে ৪ শতাংশ সুদে লেনদেন হয়েছে। তবে সুদের হার না বাড়লেও লেনদেন বেড়েছে এ বাজারে। জানা গেছে, সঙ্কটকালীন এক ব্যাংক অন্য ব্যাংক থেকে সাময়িক সময়ের জন্য টাকা ধার করে। এক রাতের জন্য এ ধার দেয়া হয়। এ ধার দেয়া-নেয়া কার্যক্রম সম্পন্ন হয় আন্তঃব্যাংক কলমানি মার্কেটে। নগদ টাকা ধারের চাহিদার ওপর এ মার্কেটের সুদহার ওঠানামা করে। তবে গত কয়েক বছর ধরেই এ বাজারের সুদহার খুব একটা বাড়তে দেখা যায়নি। বর্তমানে ব্যাংকিং খাতে এক লাখ কোটি টাকার বেশি উদ্বৃত্ত তারল্য রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, দীর্ঘ বিনিয়োগ স্থবিরতায় অধিকাংশ ব্যাংকের কাছেই উদ্বৃত্ত তারল্য রয়েছে। এ কারণে ঈদের আগে নগদ টাকার চাহিদা বাড়লেও কলমানিতে এর কোন প্রভাব পড়েনি। জানা যায়, বৃহস্পতির আন্তঃব্যাংক কলমানি বাজারে ব্যাংক টু ব্যাংক লেনদেন হয়েছে ৩ থেকে ৪ শতাংশ সুদে। আর ব্যাংক টু নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে লেনদেন হয়েছে ৩ থেকে সাড়ে ৪ শতাংশ সুদে। এদিন ৭ হাজার ২০৭ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবস বুধবার কলমানি বাজারে ব্যাংক টু ব্যাংক ২ থেকে ৪ শতাংশ এবং ব্যাংক টু আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩ থেকে সাড়ে ৪ শতাংশ সুদে লেনদেন হয়েছিল। একই সঙ্গে ওই দিন এ বাজারে ৬ হাজার ৬৬৩ কোটি টাকার লেনদেন হয়। চলতি মাসের আগের কার্যদিবসগুলোতেও এ বাজারে সর্বোচ্চ সাড়ে ৪ শতাংশ সুদেই লেনদেন হয় এবং মোট লেনদেন ৫ থেকে ৬ হাজার কোটি টাকার মধ্যে সীমিত ছিল। এদিকে, ঈদের আগে শেষ কার্যদিবস হওয়ায় বৃহস্পতিবার বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে গ্রাহকদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। এ বিষয়ে মতিঝিল সোনালী ব্যাংকের লোকাল অফিসের জেনারেল ম্যানেজার ফণীন্দ্র ত্রিবেদী বলেন, ঈদের আগে আজই (বৃৃহস্পতিবার) শেষ কার্যদিবস। তাই সকাল থেকে গ্রাহকের উপচেপড়া ভিড় রয়েছে। দীর্ঘ ছয় দিনের ছুটির কারণে অনেক গ্রাহক নগদ টাকা তুলে রাখছেন। এজন্য স্বাভাবিক দিনের তুলনায় চার থেকে পাঁচগুণ বেশি লেনেদেন হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এবার নগদ টাকার সমস্যা নেই। তাই লেনদেনেও কোন সমস্যা হচ্ছে না। গ্রাহকের চাহিদামতো পরিশোধ করা হচ্ছে। ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের বিজয়নগর শাখার এক কর্মকর্তা জনকণ্ঠকে জানান, সকাল থেকেই গ্রাহকের দীর্ঘ লাইন। দম ফেলানোর কোন সময় নেই। টাকা জমা দেয়ার চেয়ে উত্তোলনের পরিমাণ বেশি। এদিকে, টাকা লেনদেনের সঙ্গে নতুন টাকা সংগ্রহের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে ভিড় করতে দেখা গেছে অনেক মানুষকে। ঈদে প্রিয়জন, বিশেষত শিশুদের হাতে নতুন টাকা তুলে দিতে তারা নতুন টাকা সংগ্রহের জন্য আসেন।
×