ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নেত্রকোনার ৩ রাজাকারের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ ॥ যুদ্ধাপরাধী বিচার

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬

নেত্রকোনার ৩ রাজাকারের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ ॥ যুদ্ধাপরাধী বিচার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে নেত্রকোনার তিন রাজাকারের বিরুদ্ধে তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার ধানম-ির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান খান এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। এ সময় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুর রশিদ উপস্থিত ছিলেন। তিন রাজাকার হলেন- শান্তি কমিটির সদস্য ও রাজাকার হেদায়েত উল্লাহ ওরফে মোঃ হেদায়েতুল্লাহ ওরফে আঞ্জু বিএসসি (৮০), এনায়েত উল্লাহ ওরফে মঞ্জু (৭০), সোহরাব ফকির ওরফে সোহরাব আলী ওরফে ছোরাপ আলী (৮৮)। এদের মধ্যে দুই সহোদর ভাই হেদায়েত আঞ্জু-এনায়েত মঞ্জু পলাতক এবং সোহরাব আলী কারাগারে রয়েছেন। তিনজনের গ্রামের বাড়িই নেত্রকোনার আটপাড়া থানার কুলশ্রীতে। তবে আঞ্জু থাকেন রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানার হেতেম খাঁ মেথর পাড়ায়। অন্যদিকে, ছোরাপ থাকেন একই জেলার মদন থানার জাহাঙ্গীরপুরে। গত ৮ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলে ওইদিনই সোহরাব ফকিরকে গ্রেফতার করা হয়। বাকি দু’জন এখনও পলাতক। ২০১৫ সালের ৫ মে এ তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে ১ বছর ৪ মাস ৩ দিন পর তদন্ত শেষ করেন তদন্ত সংস্থা। তদন্ত চলাকালে আটক অপহরণ, নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, হত্যা, গণহত্যা এবং দেশত্যাগে বাধ্য করার মতো অপরাধের তথ্য পাওয়া গেছে। সংস্থার কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুর রশিদ মামলার তদন্ত করেছেন। আসামিদের তিনজনই একাত্তরে জামায়াতের কর্মী ছিলেন। এদের মধ্যে আঞ্জু-মঞ্জু এখনও জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। তদন্ত চলাকালে ৪০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। তিনজনের বিরুদ্ধে ৬ অভিযোগ প্রথম অভিযোগ : ১৯৭১ সালের ২৯ মে বেলা ১০-১১টার দিকে নেত্রকোনা জেলার আটপাড়া থানার মধুয়াখালী গ্রামে ২০-৩০টি ঘরে লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগ। দ্বিতীয় অভিযোগ : ১৯৭১ সালের ২৩ আগস্ট বেলা ১১টা থেকে নেত্রকোনা জেলার আটপাড়া থানার মোবারকপুর গ্রামের শহীদ মালেক তালকুদার ও কালা চান মুন্সিকে অপহরণ, হত্যা এবং লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগ। তৃতীয় অভিযোগ : ১৯৭১ সালের ৩০ আগস্ট বেলা অনুমানিক ১২টা হতে বিকেল পর্যন্ত নেত্রকোনা জেলার মদন থানার মদন গ্রামের শহীদ হেলিম তালুকদারকে অপহরণ, হত্যা এবং লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগ। চতুর্থ অভিযোগ : ১৯৭১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর বেলা ১টা হতে রাত পর্যন্ত নেত্রকোনা জেলার আটপাড়া থানার সুখারী গ্রামের শহীদ দীনেশ চন্দ্র, শৈলেশ চন্দ্র, প্রফুল্ল বালা, মনোরঞ্জন বিশ্বাস, দূর্গা শংকর ভট্টাচার্য, পলু দে, তারেশ চন্দ্র সরকারকে অপহরণ, গণহত্যা, লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগ। পঞ্চম অভিযোগ : ১৯৭১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর রাতে নেত্রকোনা জেলার আটপাড়া থানার সুখারী গ্রামের সরকারপাড়ার বিধান কুমার সরকার (সজিব), বাদল চন্দ্র ঘোষকে সপরিবারে, কল্যাণী রানী সরকার, জীবন চন্দ্র সরকার, প্রণতি সরকার, অজিতা বিশ্বাসসহ আরও হিন্দু পরিবার দেশত্যাগে বাধ্য করা। ষষ্ঠ অভিযোগ : ১৯৭১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সকাল অনুমানিক ১০-১১টা থেকে দুপুর আনুমানিক ৩টা পর্যন্ত নেত্রকোনা জেলার মদন থানার মদন গ্রামের ১৫০-২০০ ঘরে লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগ।
×