ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

শুরুতেই হার ইউরোপ সেরা পর্তুগালের

প্রকাশিত: ০৬:৫৩, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬

শুরুতেই হার ইউরোপ সেরা পর্তুগালের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ইউরো জিতে ইউরোপের সেরা দল এখন পর্তুগাল। কিন্তু বিশ্বকাপ বাছাই ফুটবলে ইউরোপীয় অঞ্চলের ম্যাচে শুরুতেই বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে ইউরোপের ব্রাজিলরা। মঙ্গলবার রাতে ‘বি’ গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই স্বাগতিক সুইজারল্যান্ডের কাছে ২-০ গোলে হেরেছে অতিথি পর্তুগাল। ১৯৬৯ সালের পর এই প্রথম বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে পর্তুগালকে হারাল সুইসরা। চোটের কারণে ম্যাচটি খেলতে পারেননি পর্তুগালের তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। ইউরোর ফাইনালে প্রায় সি আর সেভেনকে ছাড়াই ফ্রান্সকে হারিয়েছিল পর্তুগীজরা। কিন্তু বিশ্বকাপ বাছাইয়ে রোনাল্ডোর অভাব প্রতি মুহূর্তে টের পেয়েছে ফার্নান্ডো সান্টোসের দল। এই গ্রুপে এ্যান্ডোরাকে ১-০ গোলে হারিয়ে শুভসূচনা করেছে লাটভিয়া। ফ্যারো আইল্যান্ডের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করেছে হাঙ্গেরি। শুরুটা ভাল হয়নি ইউরোর রানার্সআপ ফ্রান্সেরও। ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচে স্বাগতিক বেলারুশের বিপক্ষে সারাক্ষণ প্রাধান্য বিস্তার করে খেলেও বেনজেমা, গ্রিজম্যানদের গোল মিসের মহড়ায় গোলশূন্য ড্র নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে ফরাসীদের। হতাশ করেছে হল্যান্ডও। সুইডেনের কাছে হারতে হারতে ওয়েলসি স্নেইডারের গোলে ১-১ ব্যবধানে সমতা নিয়ে খেলা শেষ করে ডাচ্রা। সোফিয়ায় বুলগেরিয়া ও লুক্সেমবার্গের মধ্যকার ম্যাচ ছিল উত্তেজনায় ঠাসা ও উপভোগ্য। ম্যাচটি ৪-৩ গোলে জিতে নেয় স্বাগতিক বুলগেরিয়া। মজার বিষয়, ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে (৯১ মিনিট) গোল করে লুক্সেমবার্গকে ৩-৩ গোলে সমতায় ফেরান ফ্লোরেন বোহনার্ট। কিন্তু পরের মিনিটেই (৯২ মিনিট) আলেক্সান্ডর টোনেভ গোল করে বুলগেলিয়াকে ৪-৩ ব্যবধানের স্মরণীয় জয় উপহার দেন। ‘এইচ’ গ্রুপে বসনিয়া এ্যান্ড হার্জেগোভিনা, বেলজিয়াম ও গ্রীস বড় জয়ে মিশন শুরু করেছে। বসনিয়া ৫-০ গোলে উড়িয়ে দেয় এস্তোনিয়াকে। রোমেলু লুকাকুর জোড়া গোলে বেলজিয়াম ৩-০ গোলে সাইপ্রাসকে ও গ্রীস ৪-১ গোলে পরাজিত করে জিব্রাল্টারকে। বাসেলের সেন্ট জ্যাকব পার্কে আক্রমণাত্মক ফুটবলে শুরুতেই সুইজারল্যান্ডকে চেপে ধরে পর্তুগাল। তবে খেলার ধারার বিপরীতে ২৪ মিনিটে এগিয়ে যায় সুইসরা। হেডে বল জালে জড়ান ব্রিল এমবোলো। গোলটির আগে ডি বক্সের বাইরে ফ্রিকিক পায় স্বাগতিকরা। রিকার্দো রড্রিগেজের নেয়া বুলেট গতির ফিকিক কোনমতে ফেরান পর্তুগালের গোলরক্ষক রুই পাট্টিসিও। কিন্তু ফিরতি বলে ক্যামেরুনে জন্ম নেয়া ১৯ বছর বয়সী সুইস ফরোয়ার্ড এমবোলো হেডে সহজেই লক্ষ্যভেদ করেন। হারিস সেফারোভিচ ও আডমির মেহমেডির দারুণ বোঝা পড়ায় ৩০ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে সুইজারল্যান্ড। পাল্টা আক্রমণ থেকে সেফারোভিচের কাছ থেকে বল পেয়ে দুই খেলোয়াড়ের মাঝখান দিয়ে দারুণ দক্ষতায় জাল খুঁজে নেন মেহমেডি। মেহমেডি ডি বক্সের মাথা থেকে চোখ ধাঁধানো শটে লক্ষ্যভেদ করেন। গোলরক্ষক ও এক ডিফেন্ডার শুধু দাঁড়িয়ে দেখেন কিভাবে বলটি জালে জড়াচ্ছে। বিরতির পর একের পর এক আক্রমণ করেও গোলের দেখা পায়নি পর্তুগাল। পাল্টা আক্রমণ থেকে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ আসে সুইসদের সামনেও। তবে তাদের কোন আক্রমণই সফল হয়নি। যোগ করা সময়ে স্বাগতকি মিডফিল্ডার গ্রানিট জাকা দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন। টানা ১৪ প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে দলকে অপরাজিত রেখেছিলেন পর্তুগীজ কোচ সান্টোস। যে যাত্রায় ছিল গত ইউরো জয়ও। সেবার চোটের কারণে ফাইনালের বেশির ভাগটাই মিস করা রোনাল্ডোর যেটি ছিল ক্যারিয়ারে প্রথম আন্তর্জাতিক সাফল্য। কিন্তু সেন্ট জ্যাক পার্কে পর্তুগালের অজেয় যাত্রা থামিয়েছে সুইসরা। বেলারুশের বিপক্ষে স্পষ্ট ফেবারিট হিসেবেই মাঠে নেমেছিল ফ্রান্স। ফুটবল ঐতিহ্য, সম্প্রতি পারফর্মেন্স, শক্তির বিচারে সবদিক দিয়েই এগিয়ে ছিল ফরাসীরা। কিন্তু মাঠে সৌরভ ছড়াতে ব্যর্থ হন জিনেদিন জিদানের দেশের উত্তরসূরিরা। বরিজভ এ্যারানায় ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ের ৭০ নম্বর স্থানে থাকা বেলারুশের জালই খুঁজে পাননি গ্রিজম্যান, বেনজেমারা। ফ্রান্সের একের পর এক আক্রমণ নস্যাত হয়ে যায় বেলারুশের রক্ষণভাগে এসে। শেষ পর্যন্ত তাই হতাশার ড্র নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় অতিথিদের।
×