স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ পারফর্মেন্সের ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছেন এ্যাঞ্জেলিক কারবার। দারুণ জয়েই ইউএস ওপেনের সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার জার্মানির এই টেনিস তারকা শেষ আটের লড়াইয়ে ৭-৫ এবং ৬-০ গেমে পরাজিত করেছেন ইতালিয়ান তারকা রবার্তা ভিঞ্চিকে। নিউইয়র্কের ফ্লাশিং মিডোতে এ্যাঞ্জেলিক কারবারের এটি দ্বিতীয় সেমিফাইনাল। এর আগে ২০১১ সালেও ইউএস ওপেনের শেষ চারে জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি। এরপর মাঝে কিছুটা নিষ্প্রভ থাকলেও চলতি বছরে ধারাবাহিক পারফর্ম করেই সেমিফাইনালের টিকেট কাটেন কারবার। সেমিফাইনালে তার প্রতিপক্ষ এখন ক্যারোলিন ওজনিয়াকি। ড্যানিশ টেনিস তারকা এদিন কোয়ার্টার ফাইনালের অন্য ম্যাচে ৬-০ এবং ৬-২ সেটে পরাজিত করেন লাটভিয়ার এ্যানাস্তাসিজা সেভাস্তোভাকে।
চলতি বছরেই ক্যারিয়ারের প্রথম মেজর শিরোপা জয়ের স্বাদ পান এ্যাঞ্জেলিক কারবার। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে আমেরিকান টেনিসের জীবন্ত কিংবদন্তি সেরেনা উইলিয়ামসকে হারিয়ে। এরপর উইম্বলডন এমনকি রিও অলিম্পিকেও ফাইনালে উঠেছিলেন তিনি। কিন্তু দুর্ভাগ্য তার। শিরোপা নিজের করে নিতে পারেননি কারবার। তবে বছরের শেষ গ্র্যান্ডসøাম টুর্নামেন্টের সেমিতে জায়গা করে নিতে পেরে দারুণ রোমাঞ্চিত এই জার্মান তারকা। ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনে এ প্রসঙ্গে ২৬ বছরের কারবার বলেন, ‘দুই সেটে জিততে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। আমার কাছে এটা অনেক কিছুই। কেননা রবার্তার বিপক্ষে খেলা সবসময়ই কঠিন। সে সব সময় নিজের সেরাটা ঢেলে দেয়ার লক্ষ্য নিয়েই কোর্টে নামে।’ পাঁচ বছর আগে ইউএস ওপেনের সেমিফাইনালে উঠাটা ছিল এ্যাঞ্জেলিক কারবারের জন্য বড় বিস্ময়। কিন্তু এই মুহূর্তে টেনিস কোর্টে প্রতিপক্ষের সবচেয়ে আতঙ্ক। কেননা এই মৌসুমে অলিম্পিকসহ তিন টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলেছেন তিনি। তাই সেই কারবার আর এই কারবারের মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাত। জার্মান তারকা নিজেও জানেন তা। তাই তো ফাইনালে উঠার ম্যাচের আগে রীতিমতো প্রতিপক্ষের জন্য সতর্কবার্তাই দিয়ে দিলেন অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের চ্যাম্পিয়ন। সাফ জানিয়ে দিয়েছেন নিজের আত্মবিশ্বাসের কথা, ‘২০১১ সালের সেমিফাইনালটা এখনও মনে পড়ে আমার। সেটা হতে পারে আমার জন্য কিছুটা বিস্ময়ের। সেবার আমার হারানোর কিছ্ইু ছিল না। কোর্টে অসাধারণ খেলেছিলাম। তবে এখন আমি সম্পূর্ণরূপেই ভিন্ন একজন খেলোয়াড়। আমি এখন আত্মবিশ্বাসে ভরপুর একজন খেলোয়াড় এবং বড় ম্যাচে যে কিভাবে জিততে হয় সেটাও বেশ ভালই জানা।’ তবে অভিজ্ঞতার বিচারে ক্যারোলিন ওজনিয়াকিও কিন্তু পিছিয়ে নেই। ২৮ বছরের ওজনিয়াকি কারবারের চেয়ে দুই বছরের বড়। বিশ্ব টেনিস র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থানটাও দখল করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। কিন্তু ড্যানিশ টেনিস তারকার আফসোস শুধু গ্র্যান্ডসøামটাই জেতা হয়নি। তারপরও না পাওয়ার হতাশা কখনই কাবু করতে পারেনি ওজনিয়াকিকে। প্রতিনিয়তই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। মজার বিষয় হলো বিশ্ব টেনিস র্যাঙ্কিংয়ের সাবেক নাম্বার ওয়ান ওজনিয়াকি এবার নিউইয়র্কে মিশন শুরু করেন ৭৪তম অবস্থানে থেকে। পুরনো চাল ভাতে বাড়ে। অধিক ব্যবহারে ক্লিশে হয়ে যাওয়া এই প্রবাদটাকেই যেন আবারও বাস্তবে প্রমাণ করলেন ওজনিয়াকি। তবে প্রতিপক্ষ হিসেবে কারবারকে সমীহ করছেন ড্যানিশ তারকা। শুধু তাই নয়, কারবারের এমন পারফর্মেন্সে তৃপ্ত যেন ওজনিয়াকির হৃদয়ও। তাই তো ওজনিয়াকি বলেন, ‘এ্যাঞ্জির এই বছরটা দুর্দান্ত কেটেছে। তার জন্য আমার আনন্দ হয়।’ এর পেছনের কারণ হলো তাদের উভয়ের মধ্যেই রয়েছে যে পোল্যান্ডের রক্ত। তাছাড়া আরেকটি জায়গাতেও তাদের মিল। সেটি হলো দুজনই কঠোর পরিশ্রমী। ওজনিয়াকি বলেন, ‘একটি জায়গাতে আমাদের মিল রয়েছে তা হলো দু’জনেই কঠোর পরিশ্রমী।’ তবে বয়সে কারবারের চেয়ে ওজনিয়াকি বড় হলেও কোর্টের লড়াইয়ে কিন্তু পিছিয়ে ড্যানিশ তারকা। এখন পর্যন্ত মুখোমুখি লড়াইয়ে কারবার ৭-৫ ব্যবধানে এগিয়ে। তবে গ্র্যান্ডসøামে এর আগে কখনই মুখোমুখি হননি তারা। তাই ফ্লাশিং মিডোতে আজকের সেমিফাইনালটা যে বেশ জমবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: