ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আহসানউল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলায় হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬

আহসানউল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলায় হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এক যুগ আগে গাজীপুরে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আহসানউল্লাহ মাস্টার হত্যার ঘটনায় গত ১৫ জুন দেয়া হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হয়েছে। বুধবার ১৮২ পৃষ্ঠার এ রায় সুপ্রীমকোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। এ রায়ে বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম সরকারসহ ছয়জনের মৃত্যুদ- বহাল রাখা হলেও বিচারিক আদালতে মৃত্যুদ- অথবা যাবজ্জীবন কারাদ- পাওয়া ১১ আসামিকে খালাস দিয়েছে হাইকোর্ট। বিচারিক আদালতে দ- পাওয়া জীবিত ২৬ আসামির মধ্যে ৮ জনকে যাবজ্জীবন কারাদ-াদেশ দেয়া হয়েছে। আগে যাবজ্জীবন কারাদ-প্রাপ্ত একজন পলাতক থাকায় তার বিষয়ে কোন মন্তব্য করেনি আদালত। পূর্ণাঙ্গ রায়ে আদালত বলেছে, প্রকাশ্য দিবালোকে জনসভা স্থলে সংঘটিত এ আক্রমণ পরিচালনায় অভিযুক্তরা কোন মুখাবরণও (মাস্ক) ব্যবহার করেনি। এটি অভ্রান্তভাবে ইঙ্গিত করে যে, অপরাধ সংঘটনকারী হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার কোন ভয় বা শঙ্কা তাদের ছিল না। গত ১৫ জুন আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যার ডেথ রেফারেন্স ও আপীল মামলার রায় দেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ। রায়ে হাইকোর্ট জানায়, অপরাধ সংঘটনের ধরন, স্থান ও সময় এবং পারিপার্শ্বিক অবস্থা দ্বিধাহীনভাবে এ ইঙ্গিত দেয় যে, তারা (আসামিরা) নিশ্চিত ছিল যে, চিহ্নিত হলেও দলীয় সুরক্ষায় ও পৃষ্ঠপোষকতায় তারা আইনের বাইরেই থেকে যাবে। তাদের এ আচরণ প্রমাণ করে যে, তারা কতটা বেপরোয়া ও সহিংস ছিল। চরম বেপরোয়া উচ্ছৃঙ্খল রাজনৈতিক দুর্বৃত্তরাই কেবল এ ধরনের শক্তির ধারণ ও চর্চা করতে পারে। প্রতিটি হত্যাকা-ই অমানবিক যা সমাজে ক্ষত সৃষ্টি করে, জনমানুষের নিরাপত্তাবোধে চরম আঘাত হানে। সুসংগঠিত আক্রমণের ফলশ্রুতিতে সংঘটিত যে হত্যাকা-কে কেন্দ্র করে এই ডেথ রেফারেন্স আমাদের কাছে পাঠানো হয়েছে, তা নিঃসন্দেহে জঘন্যতম ও কাপুরুষোচিত ঘটনা। এ নির্মম ঘটনা কেবল ঘটনার শিকার ব্যক্তিদের প্রাণ কেড়ে নেয়নি, রক্তাক্ত করেছে সভ্য সমাজকে, মানুষের সুস্থ চেতনাকে, মানবতাকে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এ ধরনের পৈশাচিক হত্যাকা- অতীতে খুব কমই সংঘটিত হয়েছে। এ ঘটনায় রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের স্পষ্ট চিত্র প্রতিফলিত হয়েছে বলেও রায়ে উল্লেখ করে হাইকোর্ট। আদালত আরও জানায়, টঙ্গীর নোয়াগাঁও এমএ মজিদ স্কুল প্রাঙ্গণে অসংখ্য জনমানুষের উপস্থিতিতে পরিচালিত সুসংগঠিত আক্রমণের মাধ্যমে যে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত হয় তা থেকে এটি সম্যক উপলব্ধি করা যায় যে, রাজনীতিতে দুর্বৃত্তায়ন কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে।
×