ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বাঁধ ভেঙ্গে তিন বছর আমন আবাদ বন্ধ

কলাপাড়ায় ১৪ গ্রামের কৃষক দিশেহারা

প্রকাশিত: ০৬:২৮, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬

কলাপাড়ায় ১৪ গ্রামের কৃষক দিশেহারা

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ৬ সেপ্টেম্বর ॥ লালুয়ার রামনাবাদপাড়ের ১৪ গ্রামের অন্তত তিন হাজার পরিবারের ফের কপাল পুড়েছে। এ বছর তাদের আমন আবাদ ভেস্তে যাচ্ছে। রামনাবাদ নদীর অস্বাভাবিক জোয়ারের পশুরবুনিয়া থেকে ব্যুরো জালিয়া পার্যন্ত প্রায় আট কিলোমিটার বেড়িবাঁধের অন্তত চার কিলোমিটার ভেঙ্গে জমির সঙ্গে মিশে গেছে। স্বাভাবিক জোয়ারেও এখন নদীর পানি ঢুকছে ভিতরে। জনপদ এখন পানিতে থৈ থৈ করছে। পর পর তিনটি বছর আমন ফসল পায়নি এসব কৃষক। গেল বছর রিং বেড়িবাঁধ নির্মাণ করায় আমনের বাম্পার ফলন পেয়েছিল। কিন্তু ফের এ বছর বেড়িবাঁধে ভাঙ্গন দেখা দেয়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৪৭/৫ পোল্ডারের দীর্ঘ বেড়িবাঁধটি এবারের জলোচ্ছ্বাসে ছিন্নভিন্ন হয়ে ভেসে গেছে। এখন আবাদি জমি আর বাঁধের লেভেল এক হয়ে গেছে। আমন আবাদ তো দূরের কথা, মানুষ এখন বসবাস করতে পারছে না। অপরদিকে পায়রা বন্দরের জন্য অধিগ্রহণ করার প্রক্রিয়া চলছে ওই এলাকায় ফলে কৃষকসহ সাধারণ মানুষ নিতান্ত ঠেকায় পড়ে দুই-এক শতক জমি বিক্রি করবে তাও পারছেন না। কারণ ওই মৌজার জমি বেচাকেনায় রয়েছে সরকারী নিষেধাজ্ঞা। মানুষ এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। সরেজমিনে দেখা গেছে, পশুরবুনিয়া, চারিপাড়া, চৌধুরীপাড়া, গাজীরখাল, মুন্সিপাড়া, ব্যুরোজালিয়াসহ অন্তত আটটি পয়েন্টে চার কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে গেছে। বাঁধের অস্তিত্ব পর্যন্ত বিলীন হয়ে গেছে। বাঁধঘেষা মানুষ বাড়িঘর স্থানান্তরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। চারিপাড়া, চৌধুরীপাড়া, নেওয়াপাড়া, পশুরবুনিয়া, ছোট পাঁচ নং, বড় পাঁচ নং, ধঞ্জুপাড়া, ১১নং হাওলা, বানাতিপাড়া ও মুন্সিপাড়ার মানুষের দুর্ভোগ সবচেয়ে বেশি। আমন মৌসুম শেষ হয়ে যাচ্ছে অথচ এখন পর্যন্ত হাজার হাজার কৃষক পরিবারের হাজার হাজার একর জমি অনাবাদি পড়ে আছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মসিউর রহমান জানান, বিধ্বস্ত বাঁধ জরুরী মেরামত না করলে রামনাবাদপাড়ের বহু কৃষি জমি এ বছর অনাবাদি থাকার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। কারণ আমন আবাদের মৌসুম একেবারে শেষ পর্যায়ে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম সাদিকুর রহমান জানান, তিনি নিজে ওই এলাকা পরিদর্শন করেছেন। মানুষের দুর্ভোগের প্রকৃত অবস্থা প্রত্যক্ষ করেছেন। অবহিত করেছেন জেলা প্রশাসকসহ উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে। জানিয়েছেন পানিউন্নয়ন বোর্ডকে।
×