ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

প্লাস্টিক কারখানায় দগ্ধ আরেক শ্রমিকের মৃত্যু

বংশালে স্যুয়ারেজ লাইন নিয়ে মারামারিতে ব্যবসায়ী নিহত

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬

বংশালে স্যুয়ারেজ লাইন নিয়ে মারামারিতে ব্যবসায়ী নিহত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পুরান ঢাকার বংশালে স্যুয়ারেজ লাইন নিয়ে দুপক্ষের মারামারিতে এক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। এদিকে ইসলামবাগের বাঁশপট্টির একটি প্লাস্টিক কারখানায় আগুনে দগ্ধ আরেক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। বনানীতে সড়ক দুঘর্টনায় এক নিরাপত্তাকর্মী নিহত হয়েছে। মঙ্গলবার পুলিশ ও মেডিক্যাল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, পুরান ঢাকার বংশালের আবুল হাসনাত রোডে স্যুয়ারেজ লাইন নিয়ে দুপক্ষের মারামারিতে মোখলেছুর রহমান (৫৫) নামে এক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি ওই এলাকার ৭০/২ নম্বর বাড়িতে থাকতেন। তিনি পর্দার ব্যবসা করতেন। নিহতের ছেলে তারিকুল রহমান মিশু জানান, সোমবার রাতে আবুল হাসনাত রোডের বাসার সামনে স্যুয়ারেজ লাইনের সংস্কার কাজকে কেন্দ্র করে পাশের বাড়ির বাসিন্দা ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল আউয়ালের গাড়ি চালক মোঃ জাহাঙ্গীরের সঙ্গে বাবা মোখলেছুরের কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। বিষয়টি জাহাঙ্গীর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আওয়াল হোসেনকে জানান। আওয়াল হোসেন তখন তার আরও ২০-৩০ জনকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে দেন। পরে কাউন্সিলরের লোকজনের সঙ্গে তার বাবার আবারও কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে প্রতিপক্ষের লোকজন তার বাবাকে ধাক্কা দেয়। ধাক্কায় তিনি স্যুয়ারেজ লাইনের পাশে রাস্তায় পড়ে গিয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে আনেন। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি জানান, তার চাচা মোত্তাকুর রহমান ফারুক ওয়ার্ড কাউন্সিলর নির্বাচনে আওয়াল হোসেনের প্রতিপক্ষ ছিলেন। সে থেকে আওয়াল হোসেন তাদের পরিবারের শত্রু। হাসপাতাল থেকে তার বাবার মরদেহ নিয়ে এলাকায় গেলে স্থানীয়রা কাউন্সিলর আওয়াল হোসেনকে এ ঘটনার জন্য দায়ী করে মিছিল করেন। এলাকাবাসী মোখলেছুর রহমানের হত্যার বিচার দাবি করেন। পরে বংশাল থানা পুলিশ এলাকাবাসীকে শান্ত করে। পুলিশ পুনরায় তার লাশ হাসপাতালে নিয়ে যায়। নিহতের স্বজনদের অভিযোগ, স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরের লোকজন তাকে হত্যা করেছে। নিহত মোখলেছুরের ভাতিজা কামাল হোসেন বলেন, আমার চাচাকে কমিশনারের লোকজন মারধর করে বলেছে তাকে মেরে ফেলবে। জাহাঙ্গীরের লোকজন আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেন মোখলেছুরের ছোট ভাই মোঃ ফারুক হোসেন। বংশালের ওসি নুর আলম সিদ্দিক বলেন, খবর পেয়ে মোখলেছুরের লাশের ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক মর্গে পাঠানো হয়েছে। ওসি জানান, নিহতের পরিবার থেকে অভিযোগের ভিত্তিতে আইন অনুয়ায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। দগ্ধ আরেক শ্রমিকের মৃত্যু ॥ রাজধানীর পুরান ঢাকার ইসলামবাগের বাঁশপট্টির এক প্লাস্টিক কারখানায় আগুনে দগ্ধ কিশোর শ্রমিক হুমায়ুনের (১৭) মৃত্যু হয়েছে। সোমবার গভীররাতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন তার মৃত্যু হয়। এ নিয়ে এই ঘটনায় দগ্ধ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। বার্ন ইউনিটের চিকিৎসক পার্থ শংকর পাল জানান, দগ্ধ তিনজনের শরীরের ৮০ শতাংশের ওপর পুড়ে গিয়েছিল। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মোঃ বাচ্চু মিয়া জানান, বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন সোমবার রাতে দগ্ধ শ্রমিক হুমায়ুনের মৃত্যু হয়। তিনি জানান, এর আগে ঘটনার দিন শুক্রবার রাতেই দগ্ধ আব্দুল বাতেনের (২৭) মৃত্যু হয়। পরদিন শনিবার রাতে মারা যান আব্দুল মজিদ (২৫) নামে আরও একজন। চকবাজার থানার ওসি শামীম উর রশিদ তালুকদার জানান, শুক্রবার দুপুরে ইসলামবাগ বাঁশপট্টির ক্লাবঘাট এলাকায় একটি তিনতলা টিনশেড কারাখানায় আগুন লাগে। এতে শ্রমিক বাতেন, মজিদ ও হুমায়ুন দগ্ধ হয়েছিলেন। ফায়ার সার্ভিস পৌনে এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নেভায়। সড়ক দুর্ঘটনায় নিরাপত্তাকর্মীর মৃত্যু ॥ রাজধানীর বনানীতে যানবাহনের চাপায় তমির উদ্দিন আখন্দ নামে এক নিরাপত্তাকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। নিহত তমিরের গ্রামের বাড়ি বগুড়ার শেরপুর উপজেলায়। তিনি বনানীর ২৭ নম্বর রোডের মীর আক্তার কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কাজ করতেন। বনানী থানার এসআই ইমতিয়াজুর রহমান জানান, মঙ্গলবার ভোরে অজ্ঞাত গাড়ির চাপায় নিরাপত্তাকর্মী তমির উদ্দিনের ঘটনাস্থলেই মৃত্যু ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পাঠায়।
×