ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

হবিগঞ্জে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষ ॥ ভাংচুর, লুট আহত দেড়শতাধিক

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬

হবিগঞ্জে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষ ॥ ভাংচুর, লুট আহত দেড়শতাধিক

নিজস্ব সংবাদদাতা, হবিগঞ্জ, ৫ সেপ্টেম্বর ॥ প্রভাবশালী ব্যবসায়ী গ্রুপের দ-, বাধা প্রদান ও চাঁদাবাজির জের ধরে রবিবার রাতে হবিগঞ্জের উপজেলা বাহুবলের মিরপুর বাজারে দু’দল সশস্ত্র গ্রামবাসীর মধ্যে ভয়াবহ সংর্ঘষ, ভাংচুর, লুটপাটসহ পুলিশের মুহুমুহু গুলিবর্ষণ ও টিয়ার শেল নিক্ষেপের ঘটনায় অন্তত পাঁচ পুলিশ সদস্যসহ আহত হয়েছে দেড় শতাধিক লোক। গুরুতর আহত ২০জনকে সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে সাতজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ ঘটনায় ২০টি দোকান-আসবাবপত্র ভাংচুর, মাল ও টাকা লুটসহ ক্ষতির পরিমাণ কোটি টাকা দাঁড়াবে। রবিবার রাত সাড়ে ৭ টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত বেলায়েত ও শামছু মাস্টার গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় এই সংর্ঘষে জড়িয়ে পড়ে চরগাঁও এবং পূর্ব জয়পুর গ্রামবাসী। এ সময় ঢাকা-সিলেট পুরাতন ও নতুন মহাসড়কে অন্তত আড়াই ঘণ্টা যান চলাচলে বিঘœ ঘটে। ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের অভিযোগ, এমন সংর্ঘষের সম্ভাবনা ও জানমালের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা জানিয়ে সহযোগিতা চাইলেও নাকি উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ওসির নীরবতার কারণেই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পুলিশ ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ জানান, ওই উপজেলার নতুন বাজারে অবস্থিত ওমেরা সিলিন্ডার কোম্পানির চার হাজার রিজেক্ট সিলিন্ডার ক্রয় করে মিরপুরের বেলায়েত গ্রুপ। ২৮ আগস্ট এই গ্রুপটি লেবারসহ গাড়িযোগে সিলিন্ডার নিয়ে এগুলো কাটার উদ্দেশ্যে নিজেদের ওমেরা কোম্পানিতে প্রবেশ করতে চাইলে নতুন বাজার এলাকায় বাধা দেয় শামছু গ্রুপ। একই দিন বিকেলে ওমেরা কোম্পানিতে পুনরায় প্রবেশের চেষ্টা চালায় বেলায়েত গ্রুপ। তখনও বাধা দেয় শামছু মাস্টার গ্রুপ। অভিযোগ ওঠে, এসময় শামছু গ্রুপ বেলায়েত গ্রুপের কাছে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করলে উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতিসহ বেলায়েত গ্রুপের একটি গাড়ি ভাংচুর ও চালককে বেদম প্রহার করে শামছু গ্রুপ। পরবর্তীতে এই ঘটনায় চাঁদাবাজির অভিযোগে শামছু গ্রুপের বিরুদ্ধে একটি মামলা করে বেলায়েত গ্রুপ। বেলায়েত বাদী হয়ে দায়েরকৃত এই মামলায় শামছু মাস্টার গ্রুপের প্রধান শামছুসহ সাত জনকে আসামি করা হয়। এই মামলা দায়েরের পরপরই ২৯ আগস্ট শামছু মাস্টারসহ তার কয়েক সহযোগী হবিগঞ্জ যাবার পথে তাদেরকে আটক করে রাখে বেলায়েত গ্রুপ। এদিকে এমন খবর নতুন বাজার এলাকায় পৌঁছুলে প্রতিবাদে একই দিন দুপুরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে শামছু গ্রুপ। এদিকে এই দুই প্রভাবশালী গ্রুপের মধ্যে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানে এক সপ্তাহ যাবত চেষ্টা করে উদ্যোক্তারা ব্যর্থ হলে ভয়াবহ সংর্ঘষের ঘটনা ঘটে। এই সংর্ঘষ নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে অন্তত ১৮ রাউন্ড টিয়ার শেল ও ৩৬৭ রাউন্ড শটগানের গুলি ছুড়তে হয়।
×