ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সিরীয় সৈন্যদের নতুন করে আলেপ্পো অবরোধ

প্রকাশিত: ০৩:৪৬, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬

সিরীয় সৈন্যদের নতুন করে আলেপ্পো অবরোধ

ওয়াশিংটন ও মস্কোর মধ্যে সিরিয়ায় ধ্বংসাত্মক যুদ্ধের নিয়ে চুক্তি স্বাক্ষরের আলোচনা মুখথুবড়ে পড়ার প্রেক্ষাপটে সিরীয় সরকারী সৈন্যরা সোমবার নতুন করে আলেপ্পোর বিদ্রোহী অধিকৃত এলাকাগুলো অবরোধ করেছে। এদিকে এক পর্যবেক্ষক বলেছেন, তুর্কি সৈন্য ও সহযোগী সিরীয় বিদ্রোহীরা ইতোমধ্যে সিরীয় তুর্কি সীমান্তে সর্বশেষ অবস্থান থেকে ইসলামিক স্টেট (আইএস) গ্রুপকে হটিয়ে দিয়েছে। খবর এএফপির। সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় মিডিয়া বলেছে, সেনাবাহিনী ও সহযোগী সৈন্যরা বিদ্রোহী অধিকৃত আলেপ্পোর পূর্বাঞ্চলে পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলো অভিমুখী একমাত্র পথটি বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে এবং শহরের দক্ষিণাঞ্চলে একটি এলাকা দখল করে নিয়েছে। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এক সামরিক সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, সেনাবাহিনী সহযোগী সৈন্যদের সহযোগিতায় আলেপ্পোর দক্ষিণে সামরিক একাডেমি জোনের পুরো নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে এবং এলাকাটি থেকে অবশিষ্ট সন্ত্রাসীদের হটিয়ে দিচ্ছে। টেলিভিশন বলেছে, সৈন্যদের অগ্রযাত্রায় আলেপ্পো প্রদেশের দক্ষিণাঞ্চল থেকে পূর্বাঞ্চলের পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলো ও রামুসা পর্যন্ত সকল সরবরাহ ও চলাচল পথ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এ পরিস্থিতির কারণে, শহরের বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে বসবাসরত প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার মানুষ আবারও বহির্বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং আলেপ্পোর মানবিক সঙ্কটের ব্যাপারে নতুন করে আশঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে। সিরিয়ার এক সময়ের অর্থনৈতিক শক্তি আলেপ্পো শহর যুদ্ধের কারণে আজ বিধ্বস্ত। ২০১১ সালে মাঠে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হওয়ার মধ্য দিয়ে এ গৃহযুদ্ধের সূত্রপাত হয়। শহরটি ২০১২ সালের মাঝামাঝি থেকে সরকার ও বিদ্রোহীদের মধ্যে বিভক্ত হয়ে রয়েছে। শহরের পশ্চিমাংশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে সরকার এবং পূর্বাঞ্চলের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বিদ্রোহীরা। কিন্তু সৈন্যরা সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ক্রমান্বয়ে পূর্বাঞ্চল ঘিরে ফেলছে। তারা জুলাইয়ে বিদ্রোহীদের পার্শ্ববর্তী এলাকাগামী একমাত্র পথটি বিচ্ছিন্ন করে দিলে পূর্বাঞ্চলে খাদ্য ও জ্বালানি সঙ্কট দেখা দেয়। সৈন্যদের এ অবরোধে আন্তর্জাতিক উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। ত্রাণ সংস্থাগুলো মানবিক ত্রাণ ও সরবরাহ নিশ্চিতের জন্য ৪৮ ঘণ্টার অস্ত্রবিরতির আহ্বান জানিয়েছে। আল কায়েদার সাবেক সিরীয় শাখাসহ বিদ্রোহীরা আগস্টে রামুসা এলাকা দিয়ে পূর্বাঞ্চল অভিমুখী একটি নতুন পথ খুলে দেয়ার জন্য শহরের দক্ষিণাঞ্চলে সরকারী সৈন্যদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে লিপ্ত হয়। কিন্তু সম্প্রতি সৈন্যরা সিরীয় ও রুশ যুদ্ধ বিমানের সহায়তায় পাল্টা হামলা শুরু করেছে। সিরীয় সরকারের প্রধান সহযোগী মস্কো গত সেপ্টেম্বরে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সরকারের সমর্থনেও এক বিমান অভিযান শুরু করে। গতকাল সকালেও প্রত্যাশা ছিল যে, মস্কো ও ওয়াশিংটন এ রক্তক্ষয় বন্ধের জন্য একটি চুক্তিতে পৌঁছাচ্ছে বলে ঘোষণা দেবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, দু’দেশ একটি অস্ত্রবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য সারাক্ষণ কাজ করে যাচ্ছে এবং পররাষ্ট্র দফতরের কর্মকর্তারা বলেছেন, অচিরেই একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হচ্ছে। কিন্তু এ দিন পরে প্রত্যাশা মিলিয়ে যায়। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের কর্মকর্তারা বলেছেন, যে বিষয়গুলোতে আমরা একমত বলে মনে হয়েছিলো সেগুলোর মধ্যে কিছু প্রশ্নে দ্বিমত পোষণ করছে রাশিয়া।
×