ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ফল প্রকাশ

সাড়ে ৯ হাজার নার্স নিয়োগ পাচ্ছেন

প্রকাশিত: ০৫:০০, ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬

সাড়ে ৯ হাজার নার্স নিয়োগ পাচ্ছেন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সরকারী হাসপাতালগুলোতে সিনিয়র স্টাফ নার্স নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করেছে সরকারী কর্মকমিশন (পিএসসি)। এতে মোট ৯ হাজার ৪৮৪ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে। স্থগিত আছে ১২৫ জনের ফল। এদিকে দ্রুত ও স্বচ্ছতার সঙ্গে পিএসসির পরীক্ষার ফল প্রকাশের লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো প্রয়োগ করা হয়েছে ‘অটোমেশন’ পদ্ধতি। যার ফলে একদিকে যেমন মেধা তালিকা থেকে স্বচ্ছতার সঙ্গে সকল কোটা বণ্টন করা গেছে, তেমনি মাত্র পাঁচ মাসের মাথায় ফল প্রকাশ করা সম্ভব হয়েছে। পরীক্ষার ফল কমিশনের ওয়েবসাইটে (িি.িনঢ়ংপ.মড়া.নফ) পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া টেলিটক মোবাইলের মাধ্যমে এসএমএস পাঠিয়ে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে। দ্রুত ও স্বচ্ছতার সঙ্গে প্রায় ১০ হাজার জনবল নিয়োগের পরীক্ষা সম্পন্ন করতে পারায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন পিএসসির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক ও কমিশনের সদস্যসহ সংশ্লিষ্টরা। চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক বলেছেন, এবারের নার্স নিয়োগ পরীক্ষার ফল প্রকাশে প্রথমবারের মতো অটোমেশন পদ্ধতির প্রয়োগ করেছি আমরা। এ কারণে দ্রুত এত বড় নিয়োগ পরীক্ষা শেষ করা গেছে। চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণরা সকলেই দেশের সরকারী হাসপাতালগুলোতে সিনিয়র স্টাফ নার্স পদে নিয়োগ পাবেন। ৯ হাজার ৪৮৪ জনের মধ্যে ৮ হাজার ৭৩৯ জন মহিলা ও ৭৪৫ জন পুরুষ। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও তথ্য বিভ্রাট ও প্রশাসনিক কারণে ১২৫ জনের পরীক্ষার ফল স্থগিত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে কমিশন। ফল স্থগিত থাকা প্রার্থীদের কমিশন গঠিত কমিটির কাছে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট সনদ, তথ্য, নথিপত্র উপস্থাপন করতে বলা হয়েছে। সম্প্রতি সিনিয়র নার্স পদটিকে বর্তমান সরকার দ্বিতীয় শ্রেণীতে উন্নীত করায় পিএসসির মাধ্যমে এই নিয়োগ হচ্ছে। প্রথমবারের মতো পিএসসির অধীনে অনুষ্ঠিত সিনিয়র স্টাফ নার্সের লিখিত পরীক্ষায় ১৮ হাজার ৬৩ জনের মধ্যে ১১ হাজার ৯৫ জন পাস করেছিলেন। মৌখিক পরীক্ষায় ১০ হাজার ৯০০ জন উপস্থিত ছিলেন। পিএসসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সুপারিশকৃত প্রার্থীদের সনদ, ডকুমেন্টস ও কাগজপত্রের সত্যতা যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে যাচাই করে চূড়ান্ত নিয়োগ দেয়া হবে। সুপারিশকৃত কোন প্রার্থীর যোগ্যতা বা কাগজপত্রের ঘাটতি ধরা পড়লে, দুর্নীতি, সনদ জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়া গেলে, অসত্য তথ্য দিলে বা কোন গুরুতর ত্রুটি পাওয়া গেলে প্রার্থিতা বাতিল ছাড়াও আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে। মেডিক্যাল বোর্ড স্বাস্থ্য পরীক্ষায় যোগ্য ঘোষণা ও যথাযথ এজেন্সি কর্তৃক প্রাক-নিয়োগ জীবনবৃত্তান্ত যাচাইয়ের পর নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ হিসেবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সুপারিশকৃত প্রার্থীদের নিয়োগ দেবে। কোটায় নিয়োগ পাওয়াদের কোটা-সংশ্লিষ্ট সনদসহ অন্যান্য সনদ যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে যাচাই করা হবে। সুপারিশকৃত সব প্রার্থীকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। কোটা অনুযায়ী এবার তিনজন প্রতিবন্ধী প্রার্থীকে সিনিয়র স্টাফ নার্স পদে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে বলে কমিশনের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। এদিকে পিএসসির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক বলেছেন, দ্রুত ও স্বচ্ছতার সঙ্গে পিএসসির পরীক্ষার ফল প্রকাশের লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো প্রয়োগ করা হয়েছে ‘অটোমেশন’ পদ্ধতি। যার ফলে মাত্র পাঁচ মাসের মাথায় ফল প্রকাশ করা সম্ভব হয়েছে। চেয়ারম্যান বলেন, এ বছরের ২৮ মার্চ নার্স নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়েছে। এখন ফল প্রকাশ করা হলো। ৫ মাস ৬ দিনের মধ্যে চূড়ান্ত নিয়োগের সুপারিশ করা হলো। আমরা ২৯ কার্যদিবসে ১১ হাজার ৯৫ প্রার্থীর মৌখিক পরীক্ষা নিয়েছি। প্রতিদিন প্রায় ৪০০ জনের মৌখিক পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। এটা বিশাল কর্মযজ্ঞ ছিল। এর পাশাপাশি বিসিএসসহ পিএসসির অন্যান্য কার্যক্রমও চলেছে। তাহলে অটোমেশন পদ্ধতিটা আসলে কি? কিভাবেই তার প্রয়োগ করা হয়েছে? পিএসসির চেয়ারম্যান বলছিলেন, মেধা তালিকা থেকে কোটা বণ্টনের কাজটি প্রযুুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে করার জন্য আমাদের একজন সদস্য ও আইসিটির বিশেষজ্ঞরা বিশেষ একটি সফটওয়্যার ডেভেলপ করেছেন। এটি আমরা প্রয়োগ করে দেখেছি এটি যেমন স্বচ্ছ তেমনি দ্রুত কাজ করে। এর সুফল আমরা পেয়েছি। এ কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত কমিশনের সেই সদস্য বুয়েটের অধ্যাপক ড. আবদুল জব্বার খান বলছিলেন, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার পর যে মেধা তালিকা করা হয় সেখান থেকে সকল কোটা বণ্টন করার কাজটি এতদিন ছিল ম্যানুয়ালি। আসলে এ কাজটি ম্যানুয়ালি করা যেমন জটিল তেমনি সময় সাপেক্ষ। ভুল হওয়ার আশঙ্কাও অনেক। এবার আমরা সেই কাজকে ডিজিটালাইজ করেছি। একটি সফটওয়্যার তৈরি করা হয়েছে। এখন থেকে অটোমেশনের সুবিধা আমরা নিতে পারব অন্যান্য পরীক্ষায়ও। এতে উপকৃত হবেন পরীক্ষার্থীরা।
×