ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মীর কাশেমের পক্ষে পাকিস্তানের বিবৃতি ন্যক্কারজনক ॥ আওয়ামী লীগ

প্রকাশিত: ০৪:৫৭, ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬

মীর কাশেমের পক্ষে পাকিস্তানের বিবৃতি ন্যক্কারজনক ॥ আওয়ামী লীগ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ একাত্তরের ঘাতক যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতা মীর কাশেম আলীর ফাঁসি কার্যকরের পর তার পক্ষ নিয়ে পাকিস্তানের বিবৃতিকে ‘ন্যক্কারজনক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে আওয়ামী লীগ। দলটির নেতারা বলেছেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে, শতভাগ স্বচ্ছতার সঙ্গে করা হচ্ছে। তবে পাকিস্তান যুদ্ধাপরাধীদের রায়ে প্রতিক্রিয়া দেখাবে, এটা একটা স্বাভাবিক কারণ। এর আগেও তারা অন্য যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকরের সময় এমনটা করেছিল। তবে এ ধরনের প্রতিক্রিয়া অবশ্যই ন্যক্কারজনক। রবিবার ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির ২০তম জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে গঠিত গঠনতন্ত্র উপ-কমিটির বৈঠক শেষে দলটির নেতারা এমন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি সাংবাদিকদের বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে, শতভাগ স্বচ্ছতার সঙ্গে করা হচ্ছে। তবে এ ধরনের প্রতিক্রিয়া ন্যক্কারজনক। পাকিস্তানের এমন প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে আরও বেশি স্পষ্ট হয় যে এরা যুদ্ধাপরাধ করেছে এবং তারা পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর পক্ষে বাংলাদেশী নিরীহ জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ করেছে। তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মধ্য দিয়ে আমরা পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ের বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বের হতে পেরেছি। গঠনতন্ত্র উপ-কমিটির আহ্বায়ক ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, যুদ্ধাপরাধী হিসেবে সর্বোচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী যাদের ফাঁসি দেয়া হচ্ছে, তাদের এখনও নিজেদের লোক মনে করে পাকিস্তান। তাই নিজেদের লোক সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া দেখায় দেশটি। গঠনতন্ত্র উপ-কমিটির বৈঠকের বিষয়ে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, গঠনতন্ত্রের পরিবর্ধন, পরিবর্তন ও সংযোজন করা হবে কি না, সে বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি। আমাদের সুপারিশ দলের কার্যনির্বাহী সভায় আলোচনা হবে। সেখান থেকে সুপারিশ আকারে আগামী সম্মেলনে যাবে এবং এর চূড়ান্ত রূপ দেয়ার ক্ষমতা একমাত্র ডেলিগেটদেরই। দলের কার্যনির্বাহী কমিটির আকার বাড়ানোর সুপারিশের কথা ইঙ্গিত করে ড. রাজ্জাক আরও বলেন, দেশের জনসংখ্যা বেড়েছে; কিন্তু আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী পরিষদ হলো দলের সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ স্তর। এর পদের সংখ্যা বাড়ানো নিয়ে গণমাধ্যমেও অনেক আলোচনা হয় যে দেশের ১৬ কোটি মানুষ আর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটি মাত্র ৭৩ সদস্যের। কিন্তু আওয়ামী লীগ সব সময় বলছে, সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পরিষদের পরিধি ঢাউস করা হবে না। উপ-কমিটির প্রাথমিক সুপারিশ সম্পর্কে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বর্তমানে সাত বিভাগে সাতজন সাংগঠনিক সম্পাদক রয়েছে। কিন্তু এখন নতুন বিভাগ ময়মনসিংহ হওয়ায় সেখানে একজন সাংগঠনিক সম্পাদক এবং কুমিল্লা ও ফরিদপুর বিভাগ করার জন্য সরকারের যে পরিকল্পনা রয়েছে, সেখানেও নতুন সাংগঠনিক সম্পাদক পদ সৃষ্টির সুপারিশ করা হবে। প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক পদের সুপারিশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক পদ সৃষ্টির জন্য আমরা সুপারিশ করব। কারণ এর মাধ্যমে আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। গঠনতন্ত্রে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়ন প্রক্রিয়া অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে জানান তিনি।
×