ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশের ক্রিকেটকে আরও উঁচুতে নিতে চাই ॥ ওয়ালশ

প্রকাশিত: ০৪:২৬, ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬

বাংলাদেশের ক্রিকেটকে আরও উঁচুতে নিতে চাই ॥ ওয়ালশ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দীর্ঘ ভ্রমণ শেষে শনিবার রাতে বাংলাদেশে এসেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক পেসার কোর্টনি ওয়ালশ। জিম্বাবুইয়ের হিথ স্ট্রিকের স্থলাভিষিক্ত হিসেবে এখন তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের বোলিং কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন তিনি ২০১৯ বিশ্বকাপ পর্যন্ত। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সঙ্গে তিন বছরের চুক্তি তার। তবে ওয়ালশ নিজেকে কোচ হিসেবে নয়, বরং একজন বাবার মতো ভাল পরামর্শক হিসেবে ভাবতেই বেশি পছন্দ করেন। তিনি চান বাংলাদেশ ক্রিকেট যে উন্নতির পর্যায়ে রয়েছে সেটাকে আরও উঁচুতে নিয়ে যেতে। সেক্ষেত্রে তার অন্যতম প্রচেষ্টা থাকবে সাবেক ক্যারিবীয় পেসার কার্টলি এ্যামব্রোস হিসেবে কাউকে তৈরি করার। এজন্য কঠোর পরিশ্রম, আত্মনিয়োগ, ভাল ফিটনেস ধরে রাখা এবং ধারাবাহিক নৈপুণ্য ধরে রাখার দিকেই মনোযোগ থাকবে বলে জানিয়েছেন ওয়ালশ। রবিবার বিকেলে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ওয়ালশ। বাংলাদেশ ক্রিকেট ক্রমেই উন্নতির পথে ধাবিত হচ্ছে। তরুণ ক্রিকেটারদের সাম্প্রতিক সময়ের নৈপুণ্যে দারুণ মুগ্ধ ওয়ালশ। কিন্তু তিনি নির্দিষ্ট করে কারও নাম নিতে নারাজ। কারণ দায়িত্বের অন্যতম লক্ষ্য থাকবে বাংলাদেশ ক্রিকেট থেকে একজন কার্টলি এ্যামব্রোসের মতো পেসার বের করা। ওয়ালশ-এ্যামব্রোস একসময় বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম ভীতিকর পেস জুটি ছিলেন। ওয়ালশের লক্ষ্য এমন একটি জুটি বের করে আনা বাংলাদেশ দল থেকে। এ বিষয়ে ওয়ালশ বলেন, ‘আমরা যদি দ্বিতীয় কোন এ্যামব্রোস পাই বাংলাদেশ থেকে আমি খুবই খুশি হব। তিনি আসার পর দুজন মিলে আমরা বিশ্বসেরা স্ট্রাইকিং জুটি গড়ে তুলেছিলাম। আমি যদি এ বিষয়টা বাংলাদেশের দু’জন ফাস্ট বোলারের মধ্যে আনতে পারি আমি খুবই সন্তুষ্ট হব। আমিও কাউকে নাম দিয়ে চিনতে চাই না। মাঝে মাঝে আমি অনেকের নাম নিয়েছি এবং দেখা গেছে সে টানা দুই/তিন ম্যাচে কোন নৈপুণ্যই দেখাতে পারেনি। আমি বাংলাদেশের কিছু তরুণ ফাস্ট বোলারদের নিয়ে বেশ উত্তেজিত। তারা অনেক উন্নতি করেছে এবং আমি যদি তাদের আরও কিছুটা সহায়তা করতে পারি সেটাই হবে চাবিকাঠি।’ উপমহাদেশে অনেক ভাল পেসার তৈরি হয়। কিন্তু অনেকেই হারিয়ে যায়। এমনটা হতে দিতে নারাজ ওয়ালশ। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অনেক ভাল মানের বোলার আছে। কিন্তু দেখতে হবে তাদের কিভাবে পরিচর্যা করা হয় এবং কতদিন স্থায়ী হয়। আমি আসলে সেজন্যই এখানে এসেছি। সবাইকে বলা হবে কাজের চাপগুলোর সঙ্গে মানিয়ে ওঠার জন্য ঠিকভাবে পরিচর্যা চালিয়ে যেতে এবং একইসঙ্গে ফর্মেও থাকতে হবে। আমি খুবই মনোযোগী ফিটনেসের পর্যায়টা সঠিক অবস্থায় রাখার বিষয়ে। এটা শুধু কঠোর পরিশ্রম, আত্মনিয়োগ এবং সবসময় সেরাটা চাওয়ার মাধ্যমেই আসতে পারে। আমি ধারাবাহিকতা ও কঠোর পরিশ্রমের জন্যই ক্ষুধার্ত থাকব।’ তবে কাজের ক্ষেত্রে কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে হলেও আসলে ক্রিকেটারদের কাছে একজন বাবার মতো পরামর্শক হতেই বেশি মনোযোগ ওয়ালশের। এ বিষয়ে এ পেসার বলেন, ‘আমি প্রথমত চেষ্টা করব প্রতিজনের বিষয়ে যতটা সম্ভব জানতে পারি। আর আমি আমার জানার বিষয়গুলো তাদের মধ্যে ছড়িয়ে দেব। তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য জেনে আমি বের করার চেষ্টায় থাকব যে তারা কিভাবে নিজেদের খেলার উন্নতি ঘটাতে চায়। আমি নিজেকে খুব বেশি পরিমাণে কোচ হিসেবে দেখতে চাই না, আমি নিজেকে একজন বিজ্ঞ পরামর্শক হিসেবে দেখতে চাই। আমি তাদের সঙ্গে কোচ হিসেবে কাজ করব এবং অবশ্যই একজন বাবার মতো পরামর্শক হিসেবে।’ ১৭ বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেললেও বাংলাদেশের মাটিতে কখনও খেলেননি। তবে বাংলাদেশ দলের বিপক্ষে কয়েকবার খেলার সুযোগ হয়েছে ওয়ালশের। এবার এদেশেরই একজন বোলিং কোচ হতে পেরে দারুণ খুশি ওয়ালশ বলেন, ‘আমি সবসময়ই স্বপ্ন দেখেছি একটা আন্তর্জাতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে। একটা বিষয় যা আমি বাংলাদেশের ছেলেদের জানাতে চাই, সেটা হচ্ছে তোমাদের অবশ্যই অনেক শক্ত হতে হবে এবং কঠোর পরিশ্রমের জন্য প্রস্তুত হতে হবে, শারীরিকভাবে এবং ধারাবাহিকতা রাখার বিষয়টিতে মনোযোগী হতে হবে। আমরা যদি এ দুটি বিষয় নিয়ে কাজ করে যেতে পারি সেক্ষেত্রে সঠিক পথেই এগিয়ে যাব। আমি সবসময় চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করি এবং সবশেষে সবকিছুর সমাপ্তিতে একটি সন্তোষজনক ফলাফল চাই। আশা করছি যখন আমি বাংলাদেশ ত্যাগ করব তখন অনেক বেশি উন্নতি দেখব। অবশ্যই তারা র‌্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি করতে চায় এবং আমি সেটার অংশ হতে চাই।’
×