ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নারী শ্রমিক সম্মেলন

নারী শ্রমিকদের পুরুষের মতো অধিকার ও মর্যাদা দিতে হবে

প্রকাশিত: ০৭:২৪, ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬

নারী শ্রমিকদের পুরুষের মতো অধিকার ও মর্যাদা দিতে হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পুরুষ শ্রমিক যে অধিকার ও মর্যাদা নিয়ে সমাজে বেঁচে থাকেন, নারীদেরও সেই একই অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে। কেবল বাইরের কাজে সমানাধিকার দিলেই চলবে না, তাদের ঘরের কাজেও সমতাভিত্তিক অধিকার দিতে হবে। বাসায় ফিরে পুরুষ শ্রমিক যে বিশ্রামের সুযোগ পায়, নারীকেও বিশ্রামের সেই সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে হবে। অধিকার আদায়ে নারীকেই সোচ্চার হতে হবে, ট্রেড ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত হয়ে নারী শ্রমিকদের আদায় করে নিতে হবে নিজের অধিকার। শনিবার রাজধানীর ক্যাথলিক বিশপস কনফারেন্স অব বাংলাদেশ (সিবিসিবি) সেন্টারে আয়োজিত নারী শ্রমিক সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন। আমরাই পারি পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ জোট ও জাতীয় নারী শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের যৌথ উদ্যোগে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সহযোগিতা করে নেদারল্যান্ডস দূতাবাস। সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মিকাইল শিপার বলেন, শ্রমিক কল্যাণের জন্য সরকারের একটি ফান্ডে ১৭০ কোটি টাকা জমা আছে, যার মধ্যে ব্যয় হয়েছে মাত্র ৩ কোটি টাকা। আবার যেসব শ্রমিকের মধ্যে এ অর্থ বণ্টন করা হয়েছে, সেখানেও নারী শ্রমিকের সংখ্যা ছিল খুবই নগণ্য। তাদের খোঁজে পাওয়া যায় না, অনেকেই জানেন না সরকার তাদের জন্য কী কী পদক্ষেপ নিচ্ছে। তিনি বলেন, গৃহকর্মীদের জন্য নীতিমালা তৈরি হয়েছে। এসব নীতিমালার যথার্থ প্রচারে বেসরকারী সংস্থাকে উদ্যোগ নিতে হবে। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ জোট ‘আমরাই পারি’র চেয়ারপার্সন এ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল বলেন, নারীদের কেবল বাইরের কাজে সমানাধিকার দিলেই চলবে না, তাদের ঘরের কাজেও সমতাভিত্তিক অধিকার দিতে হবে। এজন্য লিঙ্গভিত্তিক শ্রম বিভাজনের পরিবর্তন দরকার। তিনি বলেন, একজন পুরুষ শ্রমিক যে অধিকার ও মর্যাদা নিয়ে সমাজে বেঁচে থাকেন, নারীদেরও সেই একই অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে। আমরা যেন নির্যাতনমুক্ত, সহিংসতামুক্ত জীবনযাপন করতে পারি সে মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি আরও বলেন, একজন পুরুষ যেমন তার বাইরের কাজ করার পর ঘরে এসে বিশ্রামের সুযোগ পান, নারী শ্রমিকদেরও একইরকম বিশ্রামের সুযোগ দিতে হবে। আমরা নারীরা যেন কাজ করার পর বিনোদনের সুযোগ পাই, আমাদের ওপর সংসারের বাড়তি কাজের বোঝা চাপানো না হয় সেটিও দেখতে হবে। বক্তব্যে অংশ নিয়ে ট্রেড ইউনিয়নের প্রতিনিধি ড. ওয়াজেদুল ইসলাম চেঞ্জমেকার নারী শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত থাকার আহ্বান জানান। অক্সফামের এমবি আখতার বলেন, পুরুষের তুলনায় নারী হিসেবে একজন শ্রমিকের অনেক সমস্যা রয়েছে। শ্রমিকদের মর্যাদার প্রশ্নে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। এছাড়া সকল বৈষম্য নিরসনে পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে এবং জাতীয় পর্যায়ে শ্রমিকদের দাবি উত্থাপনের উদ্যোগ নিতে হবে। নারী শ্রমিক নেত্রী হুমাইরা বেগমের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন- নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের প্রতিনিধি মাশফিকা জামান, জাতীয় নারী শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক শাহিদা পারভীন শিখা ও আমরাই পারি জোটের জাতীয় সমন্বয়কারী জিনাত আরা হক। সম্মেলনে অংশ নিয়ে নারী শ্রমিকরা সমকাজের সমমজুরি দাবি জানিয়ে সেøাগান দেন। একই সঙ্গে নারী শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন করার সুযোগ চান তারা। এ আয়োজন থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে মোহাম্মদপুরের ৬টি বস্তিতে বসবাসরত নারী শ্রমিকরা জাতীয় নারী শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয় এবং তাদের নিয়ে ১৫ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটিও গঠন করা হয়।
×