ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বার্লিনে দুরন্ত সাঁতারের আয়রন লেডি হসজু

প্রকাশিত: ০৭:০৭, ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬

বার্লিনে দুরন্ত সাঁতারের আয়রন লেডি হসজু

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সেরা সাফল্যটা কোনভাবেই ধরা দিচ্ছিল না। চার বছর আগে লন্ডন অলিম্পিকে কাতিঙ্কা হসজুর ওপর দারুণ প্রত্যাশা ছিল হাঙ্গেরির। কিন্তু ‘আয়রন লেডি’ খ্যাতি পাওয়া এ তরুণী সাঁতারু কোনকিছুই জিততে পারেননি। তবে এবার রিও ডি জেনিরো অলিম্পিকের পুলে ঝড় তুলেছিলেন। জয় করেছেন ট্রেবল। সেই ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছেন বার্লিন মিটে। বিশ্বকাপ সার্কিটে দুইদিনের এ প্রতিযোগিতায় তিনি মোট ৭টি জয় তুলে নিয়েছেন। তার একক আধিপত্যেই শেষ হয়েছে বার্লিন মিট। ২০০ মিটারের ফ্রিস্টাইল, ব্যাকস্ট্রোক ও ব্যক্তিগত মিডলের ফাইনালে জিতেছিলেন প্রথমদিনেই। দ্বিতীয়দিন হসজু জিতলেন ৪০০ মিটার ফ্রিস্টাইল এবং ১০০ মিটারের ব্যাকস্ট্রোক, ফ্রিস্টাইল ও ৪০০ মিটার ব্যক্তিগত মিডলেতে। সবমিলিয়ে যত পয়েন্ট অর্জন করেছেন সেটা তাকে বিশ্বকাপ র‌্যাঙ্কিংয়ে সার্বিকভাবে তিনি শীর্ষে আছেন। অবশ্য সবেমাত্র ৯ লেগের মধ্যে দুটি শেষ হয়েছে। এই সপ্তাহেই মস্কোয় আরেকটি মিট অনুষ্ঠিত হবে। মঙ্গলবার ১০০ মিটার ব্যক্তিগত মিডলের শর্টকোর্সে নিজের পুরনো বিশ্বরেকর্ডটা ভেঙ্গেছেন রাশিয়ার ভøাদিমির মোরোজভ। তিনি বুধবার ৫০ মিটার ফ্রিস্টাইলেও জয় তুলে নেন। কিন্তু ১০০ মিটার ব্যাকস্ট্রোকে দক্ষিণ আফ্রিকার ক্যামেরন ভ্যান ডার বার্গ জয় পেয়েছেন এবং মোরোজভ হয়েছেন তৃতীয়। এরপরও রাশিয়ান তারকা মোরোজভই পুরুষদের বিশ্বকাপ র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থানে আছেন। ২০০৪ সালে ইউরোপিয়ান সাঁতার চ্যাম্পিয়নশিপসের ৪০০ মিটার মিডলেতে ক্যারিয়ারের প্রথম আন্তর্জাতিক পদক জয় করেন মাত্র ১৫ বছর বয়সী কিশোরী হসজু। জিতেছিলেন ব্রোঞ্জ। খুব কম বয়সে নিজের যোগ্যতার আলো ছড়িয়ে দিলেও সেটাকে ধরে রাখতে পারেননি তিনি। এরপর অনেক উত্থান-পতনের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে গেছে ক্যারিয়ার। সে কারণে ২০০৪, ২০০৮ ও ২০১২ অলিম্পিকে অংশ নিয়েও কিছুই পাওয়া হয়নি আয়রন লেডির। অথচ একই সময়ে পাঁচটি ব্যক্তিগত মিডলে ইভেন্টে বিশ্বরেকর্ডধারী প্রথম সাঁতারু তিনি। এছাড়া হাঙ্গেরির সাঁতারে জাতীয় রেকর্ডসমূহের ৮০ ভাগই গড়েছেন হসজু। ২০১৪ ও ২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক এ্যাকুয়াটিক ফেডারেশনের (ফিনা) বিবেচনায় টানা দুইবার বর্ষসেরা সাঁতারুর পুরস্কারও ওঠে তার হাতে। সেই হসজু লন্ডন অলিম্পিকে ২০০ মিটার মিডলেতে অষ্টম এবং ৪০০ মিটার মিডলেতে চতুর্থ ও ২০০ মিটার বাটারফ্লাইয়ের সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছিলেন। এরপরও রিও অলিম্পিকে বিশেষ দৃষ্টি ছিল হসজুর প্রতি। কারণ ২০০৯, ২০১৩ ও ২০১৫ বিশ্ব সাঁতারে সবমিলিয়ে পাঁচটি দূরপাল্লার সাঁতারে স্বর্ণ জয় করেন। আর স্বল্পপাল্লার সাঁতারে তিনি ততোদিনে জিতে গেছেন আরও ৬টি স্বর্ণপদক। এবার ৪০০ মিটার ব্যক্তিগত মিডলেতে নিজের প্রথম অলিম্পিক সাফল্য পেলেন। তিন যুগের আক্ষেপের অবসান ঘটে ওই ইভেন্টের মধ্য দিয়ে। টানা দুই স্বর্ণ জয়ের পরই মনে হচ্ছিল রীতিমতো রূপকথার সাফল্য পেয়ে গেছেন হসজু। হাঙ্গেরির এই তারকা সাঁতারু পরবর্তীতে রিও অলিম্পিকে বিরল ট্রেবল স্বর্ণ জয়ের কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। ১০০ মিটার ব্যাকস্ট্রোক, ২০০ ও ৪০০ মিটার ব্যক্তিগত মিডলেতে স্বর্ণ এবং ২০০ মিটার ব্যাকস্ট্রোকে রৌপ্য জয় করা হসজু এখন আছেন দারুণ ফর্মে। সেটা অব্যাহত রেখেছেন অলিম্পিক শেষেও। এবার মস্কোয় বিশ্বকাপের পরবর্তী লেগের মিটে ধারাবাহিকতা রাখার চ্যালেঞ্জ আয়রন লেডির।
×