ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ফারাক্কা বাঁধের সঙ্গে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক বন্যার কোন সম্পর্ক নেই ॥ ভারত

প্রকাশিত: ০৬:১৫, ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬

ফারাক্কা বাঁধের সঙ্গে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক বন্যার কোন সম্পর্ক নেই ॥ ভারত

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশের সাম্প্রতিক বন্যার সঙ্গে ফারাক্কা বাঁধের কোন সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেছে ভারত। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে গঙ্গা নদীর পানিপ্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে ফারাক্কা বাঁধ খোলাই থাকে বলে জানিয়েছে দেশটি। ভারতের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, ফারাক্কা নিয়ে গণমাধ্যমে ভুল ও বিভ্রান্তিকর খবর প্রকাশিত হয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে শনিবার ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন এ তথ্য জানিয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেছেন, বর্ষা মৌসুমে গঙ্গা নদীর পানিপ্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে ফারাক্কা বাঁধ খোলাই থাকে, এর কোন বিকল্প নেই। রাজশাহী-কুষ্টিয়া অঞ্চলে সাম্প্রতিক বন্যার জন্য ফারাক্কা বাঁধের সব গেট খুলে দেয়াকে কারণ হিসেবে দেখিয়ে যেসব সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে সেগুলো ভুল ও বিভ্রান্তিকর। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, তাদের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় স্পষ্ট জানিয়েছে, গঙ্গা নদীর পানিপ্রবাহ ঠিক রাখার জন্যই ফারাক্কা বাঁধের গেটগুলো পরিচালিত হয়। বাংলাদেশের একটি সংবাদমাধ্যমের খবর উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ভারত হঠাৎ করে ফারাক্কার গেট খুলে দেয় না। বর্ষা মৌসুমে ফারাক্কা ব্যারাজ দিয়ে পানিপ্রবাহের জন্য সব গেট খুলে দেয়া হয়, এটা নতুন কিছু নয়। ফারাক্কার গেট খোলা সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের নদী কমিশনের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতেই হয় বলে দাবি করেন মুখপাত্র। তিনি বলেন, নিয়মিত প্রক্রিয়া হওয়ায় গেট খুলে দেয়ার বিষয়ে বিশেষ কোন সতর্কতা বা এ্যালার্ট জারি করা হয় না। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রকে উদ্ধৃত করে বাংলাদেশের মিডিয়াতেই বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পানি বৃদ্ধি ছিল স্বাভাবিক। আগস্ট মাসের জন্য এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, এমনকি বাংলাদেশের পানিসম্পদমন্ত্রীর বরাত দিয়ে বাংলাদেশের একটি গণমাধ্যম গত ৩১ আগস্ট খবর প্রকাশ করেছে, ভারত হঠাৎ করে ফারাক্কা বাঁধ খুলে দেয়নি এবং বাংলাদেশে বড় ধরনের কোন বন্যা হওয়ার আশঙ্কা নেই। আর ফারাক্কা বাঁধ খুলে দেয়া নতুন কোন ঘটনা নয়। বাংলাদেশে ব্যাপক বিরোধিতার মধ্যে চার দশক আগে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ ও মালদহ জেলায় অভিন্ন নদী গঙ্গায় ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণ করে ভারত সরকার। ওই ব্যারাজের মাধ্যমে ভারতের পানি প্রত্যাহারে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আপত্তি জানানো হয়। এরপর বাংলাদেশ তার প্রাপ্য পানির দাবি জানালে ঢাকা ও নয়াদিল্লীর মধ্যে চুক্তি হয়। গঙ্গার মূল প্রবাহ পদ্মা চাঁপাইনবাবগঞ্জের কাছ দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে যমুনা নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, শুষ্ক মৌসুমে ভারত তার প্রয়োজন মেটাতে পানি আটকে রাখলেও বর্ষা মৌসুমে নিজেদের এলাকায় বন্যা এড়াতে পানি ছেড়ে দেয়, যা বাংলাদেশকে প্লাবিত করে।
×