ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মোস্তাফা জব্বার

একুশ শতক ॥ পাঁচ বিলিয়নই পারব

প্রকাশিত: ০৩:৫৩, ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬

একুশ শতক ॥ পাঁচ বিলিয়নই পারব

॥ এক ॥ বাংলাদেশের সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি সেবা খাতের বাণিজ্য সংগঠন বেসিস ২০১৮ সালের মধ্যে সফটওয়্যার ও সেবা খাতের রফতানি এক বিলিয়ন ডলারে মানে প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছানোর কথা ঘোষণা করেছিল। ২০২১ সালে এটি ৫ বিলিয়ন করার অঙ্গীকারও রয়েছে। আমি সাধারণভাবে অনুভব করি যে, বেসিসের এই লক্ষ্যমাত্রাকে সহজে কেউ বিশ্বাসযোগ্য মনে করতেন না। সরকারী-বেসরকারী কোন হিসাবেই এটি অর্জন করা সম্ভব এমন কোন অবস্থা বিরাজ করে বলে ধারণা পাই না। কেন্দ্রীয় ব্যাংক মাত্র কয়েক কোটি টাকা, রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো আরেকটু বেশি টাকা ও আইসিটি বিভাগ ৪০০ মিলিয়ন ডলার রফতানির হিসাব দিয়ে থাকেন। বাংলদেশ ব্যাংক এই হিসাব দেয় তাদের কাছে ব্যাংকের মাধ্যম আসা ডলারের হিসাব করে। ইপিবি বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবের সঙ্গে আরও কিছু যোগ করে। বস্তুতপক্ষে এদের কারও হিসাব সঠিক নয়। বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তি রফতানির টাকা কেবল ব্যাংকে আসে না, নানাপথে আসে- অনেক টাকা আসেই না। এতদিন বেসিস নিজে হিসাব করে দেখেনি যে তার সদস্যরা কি পরিমাণ রফতানি করে থাকে। গত ১৫ জুলাই ২০১৬ বেসিসের সভাপতির দায়িত্ব নেয়ার পর আমার নিজেরই মনে হয়েছে যে, যোগ-বিয়োগটা তো নিজেরই করা উচিত। দেখি না আমার নিজের ঘরে কি হিসাব আছে। অবাক হওয়ার মতো ঘটনা এটি যে, আমার নিজের ঘরের হিসাবেই আমি ৮ হাজার কোটি টাকার বেশি রফতানি করি। স্মরণ করা যেতে পারে, বেসিস একই সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তির আরও অনেক খাতে ব্যাপক উন্নয়নের ওয়াদা করেছে। এসব লক্ষ্যমাত্রার মাঝে কর্মসংস্থান, ইন্টারনেট ব্যবহার বৃদ্ধি ইত্যাদি রয়েছে। বেসিসের এই স্লোগানটির নাম ছিল ওয়ান বাংলাদেশ। বেসিস এই লক্ষ্য যখন স্থির করে তখন অনেকেই ভেবেছিলেন এটি এক ধরনের উচ্চাভিলাষী স্বপ্ন। শুরুতে তেমন ধারণা আমারও ছিল। কিন্তু ২০১৬ সালে এসে আমার নিজের কাছে মনে হচ্ছে আমরা সঠিকভাবে হিসাবটা করছি না বলেই অঙ্গীকারটিকে উচ্চাভিলাষী বলে মনে হচ্ছে। এখন আমার নিজের কাছে ২১ সালে ৫ বিলিয়ন ডলার রফতানির লক্ষ্যটাকেও বড় মনে হচ্ছে না। তবে এজন্য সরকারের পাশাপাশি বেসরকারী খাতেরও বেশ কিছু কাজ করতে হবে। বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশের নাগরিক হিসেবে বেসিসের এই স্বপ্নটাকে আমাদের সকলেরই স্বাগত জানানো উচিত। কারণ, আমাদের মতো দেশের অর্থনীতির জন্য রফতানিকে আশীর্বাদ দেশ হিসেবে গণ্য করতে হয়। বৈদেশিক মুদ্রা না থাকলে দেশটাকে তলাহীন ঝুড়ির দেশ মনে করা হয়। ৭২ সালে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার আমাদের তেমনটাই ভেবেছিলেন। সেজন্য আমরা রফতানির একটি বড় সফলতাকে হাতের মুঠোয় আনতে চাই। স্বপ্নটাও তাই অনেক বড়। কিন্তু আমরা এটিও মনে করিয়ে দিতে চাই যে, কেবল স্বপ্ন দেখাটাই বড় কথা নয়, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে কার্যকর এবং সঠিক কর্মপন্থা গ্রহণ করে নীতি ও কৌশল অনুযায়ী পথ চলাটাও জরুরী। সফটওয়্যার রফতানি নিয়ে আমি ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেয়ার পর দৈনিক সমকাল এই বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনটি নিম্নরূপ ‘সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর সেবায় বিলিয়ন ডলার রফতানি আয়ের পথে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। বর্তমানে বিশ্বের শতাধিক দেশে বিক্রি হচ্ছে বাংলাদেশী সফটওয়্যার। এ খাতে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৭০০ মিলিয়ন ডলার রফতানি আয় হয়েছে। দেশের সফটওয়্যার খাতের সবচেয়ে বড় সংগঠন বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার এ্যান্ড সার্ভিসেস (বেসিস) সূত্র মতে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর সেবা রফতানির মাধ্যমে বেসিস সদস্যভুক্ত ১৮৫টি কোম্পানি ৬০০ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে। বেসিস সদস্য কোম্পানির সঙ্গে ফ্রিল্যান্স সফটওয়্যার ডেভেলপার ও কলসেন্টার কোম্পানির আয় যুক্ত করলে তা ৭০০ মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর হিসাবে, সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর সেবা খাত থেকে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে রফতানি আয় হয়েছে মাত্র ১৫১ মিলিয়ন ডলার। মূলত বেসিসভুক্ত অধিকাংশ কোম্পানির পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সাররা তাদের আয়ের বড় অংশ বৈধ চ্যানেলে না আনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে প্রকৃত হিসাব থাকছে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এজন্য সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর সেবা থেকে রফতানি আয়ের হিসাব নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে। এ খাতে সরকারের তরফ থেকে কোন ট্যাক্স-ভ্যাট আরোপ করা না হলেও বৈধ চ্যানেলে আইটি কোম্পানিগুলো আয়ের অর্থ আনতে কেন নিরুৎসাহিত হচ্ছে এ সম্পর্কে বেসিসের নবনির্বাচিত সভাপতি মোস্তাফা জব্বার বলেন, বেসিস সদস্যরা অভিযোগ করছেন, বৈধ চ্যানেলে রফতানির আয়ের অর্থ আনার ক্ষেত্রে রফতানির আয়ের উৎস এবং নানা রকম কাগজপত্র দেখাতে বলে হয়রানি করা হয়। এ ধরনের হয়রানি এড়াতে অবৈধ পথে আয়ের অর্থ আনার প্রবণতা বাড়ছে বলে মনে করেন তিনি।’ যঃঃঢ়://নধহমষধ.ংধসধশধষ.হবঃ/২০১৬/০৯/০২/২৩৪৮০৩ আমরা পুরনো কিছু সরকারী হিসাবের দিকে তাকাতে পারি। ‘তথ্যপ্রযুক্তি খাতের রফতানি আয় ২০১৩-১৪ অর্থবছরের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১৯ শতাংশ কম ছিল। বিগত বছরের শেষ দিকে রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাবে রফতানি আয় লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে পারেনি বলে মনে করছিলেন সংশ্লিষ্টরা। তবে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় কম হলেও আগের অর্থবছরের চেয়ে সেই অর্থবছরে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের রফতানি আয় বেড়েছে। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) প্রকাশিত সর্বশেষ রফতানি প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। ...২০১২-১৩ অর্থবছর এ খাতের রফতানি আয় প্রথমবারের মতো ১০০ মিলিয়ন বা ১০ কোটি ডলার ছাড়ায়। ওই অর্থবছর খাতটি থেকে রফতানি আয় হয় ১০ কোটি ১৬ লাখ ৩০ হাজার ডলার। ২০১৩-১৪ অর্থবছর তথ্যপ্রযুক্তি খাত থেকে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৫ কোটি ৪৪ লাখ ৫০ হাজার ডলার। অর্থবছরটিতে রফতানি আয় হয়েছে ১২ কোটি ৪৭ লাখ ২০ হাজার ডলার। তবে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় কম হলেও ২০১২-১৩ অর্থবছরের তুলনায় এ আয় ২৩ শতাংশ বেশি। চলতি অর্থবছর এ খাত থেকে ১৩ কোটি ডলার রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।’ এর পরের রফতানি আয়ের হিসাবটি আমার হাতের কাছে নেই বলে এর পরের অগ্রগতির তুলনাটা করা গেল না। তবে এটি আমি জানি যে সরকারী হিসাবে এতে আমূল কোন পরিবর্তন নেই। বলাইবাহুল্য, স্বপ্নের তুলনায় এসব হিসাব উল্লেখ করার মতো নয়। ১০ সেপ্টেম্বর ১৪ সকালে এসব বিষয় নিয়েই কথা বলতে এসেছিলেন ভারতীয় দুটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের দুজন পরামর্শক। এদের একজন হলেন এয়ন হিউইটের নেইল শাস্ত্রী এবং আরেকজন হলেন থলনসের রবার্টো কার্লোস এ ফ্লরো। শাস্ত্রী ভারতীয়। ফলে বাংলাদেশ বিষয়ে তার জ্ঞান অনেক পাকা। ফ্লরো পুরো আলোচনায় কথাও কম বলেছে। সম্ভবত এখনও তাকে বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাত সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে হচ্ছে। ওদের সঙ্গে করে নিয়ে এসেছিলেন কম্পিউটার কাউন্সিলের জাহাঙ্গীর নামক একজন কর্মকর্তা। অনেকক্ষণ আলাপ করার ফাঁকে তারা জানালেন যে, জনসম্পদ তৈরির বিষয়ে একটি স্বল্পকালীন রোডম্যাপ তৈরির পরিকল্পনা আছে তাদের। তখনকার বেসিস সভাপতিসহ অনেকের সঙ্গেই তারা কথা বলেছেন। তাদের পরামর্শ যেরকম ছিল তার চাইতে আমার আলোচনাটি বিপরীত মেরুর এমন একটি মন্তব্য আমাকে বিস্মিত করেনি। আমি খুব ভাল করেই জানি যে, আমার কথাগুলো শ্রুতিমধুর লাগেনি। কারণ আমি বলেছিলাম, রফতানি আয় বাড়াতে দেশীয় বাজার বাাড়তে হবে। দেশীয় বাজার না বাড়লে কর্মসংস্থান হবে না এবং মানবসম্পদ গড়ে তোলার কাজটি সঠিকভাবে হবে না। আমার যে বক্তব্যটি কেউ সহজে গ্রহণ করতে পারে না সেটি হচ্ছে- বাংলাদেশ বিগত সময়গুলোতে সরকার ও ট্রেডবডিগুলো নীতি ও কর্মপন্থার ক্ষেত্রে সঠিক পথে চলতে পারেনি বলেই এত ঢাক-ঢোল পেটানোর পরও আমরা আমাদের প্রত্যাশিত সফলতা পাইনি। এমনকি এখনও সফটওয়্যার রফতানি ও দেশীয় শিল্পখাত গড়ে তোলায় নীতি ও কর্মপন্থা সঠিক নয়। এসব যদি এখনও সঠিক পথে না চলে তবে স্বপ্নতো স্বপ্নই থেকে যাবে। এক বা পাঁচ বিলিয়নের স্বপ্ন পূরণের জন্য কিছু করণীয় বিষয়ে দুয়েকটি মোটা দাগের বিষয় নিয়ে কথা বলা যায়। শুরুতেই আমি আমাদের নিজের বাজারের দিকে তাকাতে চাই। অভ্যন্তরীণ বাজার : আমি অতি বিনয়ের সঙ্গে বলতে চাই যে, রফতানি বাড়ানোর প্রথম পূর্বশর্ত হচ্ছে অভ্যন্তরীণ বাজার। এতদিন আমাদের অভ্যন্তরীণ বাজার গড়ে তোলার সুযোগ ছিল না, তাই এই বিষয়ে বেশি কথাও বলার সুযোগ ছিল না। তবে এখন আমাদের বিশাল অভ্যন্তরীণ বাজার রয়েছে। সেটিতে নিজেদের কাজ নিজেদের করার ব্যবস্থা করতে হবে। দুঃখজনকভাবে সরকার ও তথ্যপ্রযুক্তি খাত দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারকে চরমভাবে উপেক্ষা করে যাচ্ছে। সকল পক্ষেরই ধারণা যে দুবাই, নিউইয়র্ক, লন্ডন, জার্মানি ঘুরলেই সফটওয়্যার রফতানি বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে। তারা কোনদিন হিসাব করে দেখে না যে, তথ্যপ্রযুক্তিতে রফতানির চেয়ে আমদানির পরিমাণ একেবারে কম নয়। শুধু অর্থ খাতে বাংলাদেশ যে পরিমাণ সফটওয়্যার ও সেবা আমদানি করে সেই পরিমাণ রফতানি কি আমরা করি? অথচ ইচ্ছা করলেই আমরা বিদেশনির্ভরতা অনেকটাই কমিয়ে আনতে পারি। আমরা অপারেটিং সিস্টেম বা বড় ধরনের ডাটাবেজ সফটওয়্যার বানাতে পারব না- কিন্তু আমরা কি এ্যাকাউন্টিং সফটওয়্যার বা ইআরপিও বানাতে পারি না? দেশীয় সফটওয়্যার শিল্প খাত গড়ে তোলার জন্য যেসব পদক্ষেপ নেয়া উচিত ছিল সেগুলো তো সঠিকভাবে করা হচ্ছেই না, বরং যেসব পদক্ষেপ অভ্যন্তরীণ বাজার ও রফতানি দুই খাতেই সহায়ক হবে সেসব কাজও আমরা গুছিয়ে করি না। কেমন করে জানি সংশ্লিষ্টদের এমন ধারণা হয়েছে যে, তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক আন্তর্জাতিক মেলায় অংশ নিলেই দেশ সফটওয়্যার রফতানিতে বিপুল অগ্রগতি সাধন করতে পারবে। সেজন্য কমডেক্স ফল থেকে সিবিট পর্যন্ত সকল মেলাতেই আমাদের হাফডান অংশগ্রহণ হয়েই চলেছে। আমি নিজে নিজে হাসি যখন দেখি যে, আমরা দেশের বাজার বাড়ানোর জন্য লন্ডনে গিয়ে মেলা করি। দেশের ভেতরেও সফটওয়্যার বা সেবা খাত নিয়ে যেসব মেলার আয়োজন হয় তাতে নানা পুরস্কার আর ঢাকঢোলে সময় যায়, সেলিব্রিটি তৈরি হয়, কাজের কাজ তো কিছুই হয় না। সফটওয়্যার ও সেবা খাতের বাজার তৈরির কোন প্রচেষ্টাই চোখে পড়ে না। আমি নিজে মনে করি যে, অভ্যন্তরীণ বাজারটাকে যথাযথভাবে গড়ে তুলতে পারলে সবচেয়ে বড় উপকারটা হতো মানবসম্পদ তৈরিতে। আমরা বিদেশে সফটওয়্যার ও সেবা রফতানির ভিতটা নিজের বাড়িতেই গড়ে তুলতে পারতাম। কিন্তু এখন সরকারের ডিজিটাইজেশনের বড় কাজগুলোতো বিদেশীরাই করছে- আমরা নিজেরা না। সেটি উল্টাতে হবে। এসব কাজ আমাদের করতে দিতে হবে। আমাদের অভ্যন্তরীণ বাজার নিয়ে আরও কিছু আলোচনা করব। ঢাকা, ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ লেখক : তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, দেশের প্রথম ডিজিটাল নিউজ সার্ভিস আবাস-এর চেয়ারম্যান, বিজয় কীবোর্ড ও সফটওয়্যারের জনক ॥ [email protected] w.bijoyekushe.net, ww w.bijoydigital.com
×