ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পিকনিক মুডে ক্রিকেটাররা!

প্রকাশিত: ০৬:৩১, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬

পিকনিক মুডে ক্রিকেটাররা!

স্পোর্টস রিপোর্টার, কক্সবাজার থেকে ॥ ‘চ্যাম্পিয়ন, চ্যাম্পিয়ন’ গানটি যেই বাজে, সঙ্গে সঙ্গে নেচে ওঠেন সাবেক ক্রিকেটাররা। ছক্কা মারলেও নাচেন। চার মারলেও নাচেন। উইকেট পেলেও নাচেন। আবার ইনিংস শেষ হলে একসঙ্গে নাচেন। মাঠ থেকে বের হওয়ার সময়ও দলবেঁধে নাচেন। আবার মাঠে ঢোকার সময়ও দলবেঁধে নাচেন। এমনই অবস্থা, মাঠ ও মাঠের বাইরে পুরোদমে পিকনিক মুডেই আছেন সাবেক ক্রিকেটাররা। কক্সবাজারের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ‘মাস্টার্স ক্রিকেট কার্নিভালে’ অংশ নিতে গিয়ে এমন আনন্দই করছেন সাবেকরা। আর এ আনন্দের কার্নিভালের শেষের ঘণ্টাও বেজে আসছে। কার্নিভাল থেকে দলগুলো ছিটকে পড়ছে। আবার সেমিফাইনালেও চারটি দল উঠে গেছে। আকরাম খানের ইস্পাহানি ‘চিটাগং মাস্টার্স’ ও খালেদ মাসুদ পাইলটের রেনেসাঁ গ্রুপ ‘রাজশাহী মাস্টার্স’ কার্নিভাল থেকে বিদায় নিয়েছে। সেমিফাইনালে উঠে গেছে চারটি দল। খালেদ মাহমুদ সুজনের কনফিডেন্স গ্রুপ ‘ঢাকামেট্রো মাস্টার্স’ ও হাবিবুল বাশার সুমনের জেমকন গ্রুপ ‘খুলনা মাস্টার্স’ এবং নাঈমুর রহমান দুর্জয়ের জেবি গ্রুপ ‘ঢাকা বিভাগ মাস্টার্স’ ও সেলিম শাহেদের লঙ্কা বাংলা ‘অল স্টার্স মাস্টার্স’ সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে। আজ সকাল সাড়ে নয়টায় দুটি ম্যাচই অনুষ্ঠিত হবে। যে দুটি দল জিতবে, ৬ সেপ্টেম্বর মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে রাত ৭টায় ফ্লাডলাইটে ফাইনাল ম্যাচ খেলবে তারা। ‘মাস্টার্স ক্রিকেট কার্নিভালে’ হার-জিত আসলে মুখ্য নয়। তা শুরু থেকেই বোঝা গেছে। কোন দলের ক্রিকেটাররাই আসলে খেলার দিকে বেশি ঝুঁকছে না। সবাই কার্নিভালটাকে আনন্দের উপলক্ষ হিসেবেই নিয়েছে। ৯০ জন সাবেক ক্রিকেটার এখন আছেন কক্সবাজারে। ক্রিকেট খেলছেন। তবে খেলার চেয়ে বেশি আড্ডাতেই মাতোয়ারা হয়ে থাকছেন। কখনই যে এত ক্রিকেটার একসঙ্গে হন না। তাই সময়টাকে উপভোগই করে চলেছেন। বৃষ্টি পড়েই চলেছে। এরপরও ক্রিকেটারদের আনন্দে কোন ভাটা পড়ছে না। মাঠে ক্রিকেট হোক আর না হোক; আড্ডা, আনন্দ, হাসি-তামাশা চলছেই। কেউ যদি ভাল একটা ইনিংস খেলেন, তাকে দাঁড়িয়ে স্যালুট করছেন। বলছেন, ‘বাহ, বাহ; ফাটিয়ে দিলি। এখনও কি ব্যাটিং করছ যে ভাই!’ আবার কেউ যদি ভাল বোলিং করেন, তাহলে বলেন, ‘কিরে এখনও এত ভাল বোলিং করছ কেমনে!’ বৃহস্পতিবার বৃষ্টির বাধায় একটি ম্যাচ হয়। তাতে জিতেছিল ঢাকা মেট্রো। কার্নিভালের দ্বিতীয় দিনে শুক্রবার আগেই নির্ধারিত চারটি ম্যাচের মধ্যে বৃহস্পতিবারের বাকি থাকা একটি ম্যাচও হয়। মোট ৫ ম্যাচ হয়। সকালে রাজশাহী বিভাগকে ১৩ রানে হারায় অল স্টার্স। ম্যাচে ওপেনার জাভেদ ওমর বেলিম সর্বোচ্চ ২৫ রান করেন। টানা দুই ম্যাচ হারে বিদায় ঘটে রাজশাহীর। চিটাগংকে ২১ রানে হারায় ঢাকা বিভাগ। ম্যাচে রাশেদুল হক সর্বোচ্চ ৩৩ রান করেন। দুপুরে অল স্টার্সকে ৩৬ রানে হারায় ঢাকা মেট্রো। ম্যাচটিতে মনিরুজ্জামান টিংকু ৫ ছক্কা ও ১ চারে অপরাজিত ৬৪ রান করেন। তার এ দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে সবার আগে সেমিফাইনালে খেলা নিশ্চিত করে ঢাকা মেট্রো। বিকেলে মাত্র ৫ ওভারের খেলায় ২৫ রানে জিতে খুলনা। চিটাগংকে হারায় তারা। দুপুরে আরেকটি ম্যাচে খুলনাকে ৮ উইকেটে হারায় ঢাকা বিভাগ। টানা দুই জয়ে ঢাকা বিভাগও সেমিফাইনালে খেলা নিশ্চিত করে নেয়। খুলনা ও অল স্টার্স একটি করে ম্যাচ জিতেও সেমিফাইনালে খেলবে। কারণ দুই গ্রুপের মধ্যে ‘এ’ গ্রুপের তিনটি দল হচ্ছেÑ অল স্টার্স, ঢাকা মেট্রো ও রাজশাহী আর ‘বি’ গ্রুপের তিনটি দল হচ্ছেÑ ঢাকা বিভাগ, চিটাগং ও খুলনা। দুই গ্রুপ থেকে দুটি করে দল উঠেছে সেমিফাইনালে। রাজশাহী ও চিটাগং কোন ম্যাচই জিততে পারেনি। ঢাকা মেট্রো ও ঢাকা বিভাগ দুটি ম্যাচই জিতেছে। অল স্টার্স ও খুলনা একটি করে ম্যাচ জিতেছে। লীগপর্ব শেষ। এখন সেমিফাইনালে খেলার অপেক্ষা। লীগপর্ব শেষে সবচেয়ে বেশি প্রশংসা কুড়াচ্ছেন ঢাকা মেট্রোর মনিরুজ্জামান। লীগপর্ব শেষে তিনিই যে একমাত্র অর্ধশতক করা ব্যাটসম্যান। তাই সব সাবেক ক্রিকেটারই তাকে ‘বাহবা’ জানান। পিকনিক মুডে ক্রিকেট খেললেও মনিরুজ্জামান দেখিয়ে দিলেন একটু সিরিয়াস হলেই বড় ইনিংসও খেলা সম্ভব। আজ সেমিফাইনালে সেটি বজায় থাকলে সুজনের দল ঢাকা মেট্রো ফাইনালেই উঠে যেতে পারে।
×