ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

‘আমি কাউকে ধোঁকা দেইনি’

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬

‘আমি কাউকে ধোঁকা দেইনি’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ব্যর্থতার বোতলে বন্দী ছিলেন ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই। বার বার চেষ্টা করেছেন সেই বৃত্ত ভাঙ্গার। কিন্তু পারেননি। লিওনেল মেসি আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে অনুজ্জ্বলই থেকে গেছেন! অথচ এই মেসি প্রশ্নাতীতভাবে বর্তমান বিশ্ব ফুটবলের সেরা তারকা। ক্লাব ফুটবলে বার্সিলোনার হয়ে অবিশ্বাস্য সাফল্যগাঁথার কারণেই এ স্বীকৃতি। অথচ জাতীয় দলের হয়ে অর্জনের ভা-ারটা বরাবরই শূন্য ফুটবলের ক্ষুদে জাদুকরের। বার বার ব্যর্থতার কারণে অপূর্ণতা রেখেই গত ২৭ জুন আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় জানিয়েছিলেন মেসি। এরপর ফুটবল বিশ্বে শুরু হয় হৈচৈ। তাকে ফেরাতে সবাই মরিয়া হয়ে ওঠে। অবশেষে অভিমান ভেঙ্গে জাতীয় দলের হয়ে ফেরার ঘোষণা দেন রেকর্ড সর্বোচ্চ পাঁচবারের ফিফা সেরা তারকা। শুক্রবার মাঠের লড়াইয়েও ফিরেছেন আনুষ্ঠানিকভাবে। দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে উরুগুয়ের বিরুদ্ধে শুধু ফেরেননি, দলের জয়ের নায়কও মেসি। করেন একমাত্র জয়সূচক গোল। ম্যাচ শেষে অবসর ভেঙ্গে ফেরা প্রসঙ্গে প্রথমবারের মতো কথা বলেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। মেসি দৃঢ়চেতা কণ্ঠে বলেন, জাতীয় দলে ফিরে আমি কৃতজ্ঞ। কিন্তু আমি যখন অবসর নিয়েছিলাম, কাউকে ধোঁকা দেইনি। ব্রাজিল বিশ্বকাপের সেরা ফুটবলার আরও বলেন, যা ঘটেছিল তা নিয়ে আমরা খুব হতাশ হয়েছিলাম। কিন্তু এরপর আমি ভাল করে ভেবেছিলাম। কোচ এডগার্ডো বাউজার সঙ্গে কথা হয়েছে আমার এবং এই বিষয়ে যারা আমার পাশে ছিল তাদের সঙ্গেও কথা হয়েছে। অবসরের সিদ্ধান্ত পাল্টানোর পর ফের জাতীয় দলের হয়ে মাঠে নামতে আকুল ছিলেন মেসি। ব্যথা নিয়েও তাই উরুগুয়ের বিরুদ্ধে ম্যাচটি খেলেছেন। খেলতে চান ভেনিজুয়েলার বিরুদ্ধে পরের ম্যাচও। স্প্যানিশ লা লীগায় এ্যাথলেতিক বিলবাওয়ের বিরুদ্ধে বার্সিলোনার হয়ে খেলার পর মেসির বাঁ পায়ের হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট ধরা পড়ে। এরপরও আর্জেন্টিনা আসেন পাঁচবারের বর্ষসেরা ফুটবলার। ব্যথা নিয়েই খেলেছেন উরুগুয়ের বিরুদ্ধে। এ প্রসঙ্গে আর্জেন্টাইন অধিনায়ক মেসি বলেন, ভেনিজুয়েলার বিরুদ্ধে খেলতে পারব কিনা তা আমি জানি না। আমার কুঁচকিতে অনেক ব্যথা কিন্তু আমার কারণে যে ঝামেলা সৃষ্টি হয়েছিল তার পর আমি এখানে আসতে চেয়েছিলাম। এ প্রসঙ্গে আর্জেন্টিনা কোচ এডগার্ডো বাউজা বলেন, ব্যথা থাকার পরও মেসি দারুণ একটি ম্যাচ খেলেছে। সে কুঁচকির চোটে ভুগছে। যাদের এমন হয়েছে তারা জানে এটা কতটা যন্ত্রণাদায়ক। মেসি ভেনিজুয়েলার বিরুদ্ধে খেলতে পারবে কিনা তা জানতে আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। তিনি আরও বলেন, পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বুঝতে পারব তার অবস্থা কেমন। তবে তাকে নিয়ে আমরা ঝুঁকি নেব না। শুধু নিজ দলেই নয়, মেসির গুণমুদ্ধ শত্রুশিবিরও। উরুগুয়ের কোচ অস্কার তাবারেজও যেমন আর্জেন্টিনার অধিনায়কের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। তাবারেজ বলেন, আর্জেন্টিনার সব আক্রমণই মেসির মাধ্যমে হয়েছে। সে এমন একজন খেলোয়াড় যার বর্ণনা আপনি করতে পারবেন না। আপনি শুধু তার খেলা দেখতে পারবেন, মুগ্ধ হতে পারবেন আর সে যা করে তার প্রশংসা করতে পারবেন। তিনি আরও বলেন, অনেক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কিছু অসাধারণ খেলোয়াড় আছে আর্জেন্টিনার। ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে তারা বিশ্বের সেরা দল। আমিও এর সঙ্গে একমত। জাতীয় দলে মেসির একযুগের ক্যারিয়ার খুব একটা সুখকর নয়। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট আন্তর্জাতিক প্রীতিম্যাচে হাঙ্গেরির বিরুদ্ধে অভিষেক হয় এই বিস্ময় বালকের। ম্যাচের ৬৩ মিনিটে বদলি খেলোয়াড় হিসেবে বুদাপেস্টের মাঠে নেমেছিলেন। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই লালকার্ড দেখে মেসির অভিষেকটা হয়েছিল কালিমাময়।
×