ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সাতক্ষীরা সীমান্তে এক নারীকে গণধর্ষণ

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬

সাতক্ষীরা সীমান্তে  এক নারীকে  গণধর্ষণ

স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা ॥ উপর্যুপরি ধর্ষণের শিকার হয়ে নীরবে মুখ লুকিয়ে পালিয়ে গেলেন খুলনার এক নারী। এর আগে এক জনপ্রতিনিধি ধর্ষকদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে থানা পুলিশ ও বিজিবির ভয় দেখিয়ে গ্রাম থেকে সরিয়ে দিয়েছেন ধর্ষিতাকে। বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনাটি ঘটে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার সীমান্তবর্তী দক্ষিণ তলুইগাছায়। ধর্ষিতা নারী ভারত থেকে চোরাপথ দিয়ে পার হয়ে সাতক্ষীরার তলুইগাছায় আসার পর গণধর্ষণের শিকার হন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে গ্রামের কয়েকজন জানান, ৩৩ বছর বয়সী খুলনার ওই নারী ভারতের তারালি এলাকা থেকে পাচারকারীদের মাধ্যমে বিনা পাসপোর্টে বাংলাদেশে আসেন। সন্ধ্যায় তাকে পাচারকারীরা তলুইগাছার চোরাচালানি আবদুল আহাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে আহাদ, তার সঙ্গী ইয়ারুলসহ তিনজন ওই নারীকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। ‘এ কথা সবাইকে জানিয়ে দেব’ বলতেই ধর্ষকরা তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে রাত ৯টার দিকে আহাদের বাড়ি থেকে রাস্তায় বের করে দেয়। এদিকে অচেনা জায়গায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে ধর্ষিতা ঐ নারী কান্নাকাটি করার সময় বাঁশদহা ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আবদুস সামাদের নজরে পড়েন তিনি। সামাদ ওই নারীর কাছ থেকে সব কথা শুনে তিনি ধর্ষকদের ডেকে পাঠান। দুই পক্ষকে মুখোমুখি বসিয়ে কথা বলার পর ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হতেই তিনি ধর্ষকদের কাছে ঘুষ দাবি করেন। অন্যথায় পুলিশের হাতে তুলে দেয়ারও হুমকি দেন তাদের। একই সময়ে তিনি বিষয়টি পুলিশের এক এসআইকে জানিয়ে তাকে ম্যানেজ করে নেন। এর পর তাদের দু’জনের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা আদায় করে নেন সামাদ। পরে ওই নারীকে একই গ্রামের জামিলা খাতুনের বাড়িতে রাতে রেখে দেয়া হয়। শুক্রবার সকাল হতেই তাকে তিনি এক মুহূর্ত দেরি না করে ইচ্ছা মতো চলে যাবার নির্দেশ দেন। অন্যথায় পুলিশ কিংবা বিজিবি তাকে গ্রেফতার করবে এই ভয় দেখান। ইউপি সদস্যের এই হুমকিতে ভয়ে ওই নারী সকালে তলুইগাছা ত্যাগ করেন বলে এলাকাবাসী জানান। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য আবদুস সামাদ সাংবাদিকদের বলেন, বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় তিনি ওই নারীকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে কাঁদতে দেখে তার আকুতিতে স্থানীয় জামিলা খাতুনের বাড়িতে রেখে দেন। সকালে তাকে তার গন্তব্যে চলে যাবার কথা বলেছেন বলে জানান। তাকে ধর্ষণ করা কিংবা গা ঢাকা দিতে ধর্ষকদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার বিষয়ে কিছু জানেন না বলে দাবি করেন। তবে গ্রামবাসী বলছেন, ইউপি সদস্য সামাদ ধর্ষকদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ভারতের পাচারকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে সকালে সেখানেই তাকে পাঠিয়ে দেন। এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ হোসেন মোল্লা জানান, অভিযোগটি তিনি শুনেছেন। এ ব্যাপারে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন বলে তিনি জানান।
×