ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

যশোরের জঙ্গী রাব্বীর ঘনিষ্ঠ আরও দুজনকে পুলিশ পরিচয়ে তুলে নেয়ার অভিযোগ

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬

যশোরের জঙ্গী রাব্বীর  ঘনিষ্ঠ আরও  দুজনকে পুলিশ পরিচয়ে তুলে নেয়ার অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ নারায়ণগঞ্জে নিহত যশোরের জঙ্গী ফজলে রাব্বীর ঘনিষ্ঠ আরও দুজনকে পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এরা হলেন যশোর উপশহরের যুব উন্নয়ন অধিদফতর মসজিদের ইমাম মনিরামপুর উপজেলার গৌরীপুর গ্রামের বাসিন্দা মোহাম্মদ ওবায়দুল্লাহ ও যুব উন্নয়ন এলাকার আইয়ুব হোসেনের ছেলে তৈয়বুর রহমান সুমন। এর আগে রাব্বীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ মসজিদের ইমাম মোহাম্মদ ইয়াহিয়াকেও তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠে। এই তিনজনই এখন নিখোঁজ রয়েছেন। গত এপ্রিলে রাব্বী নিখোঁজের পর তার পিতার করা সাধারণ ডায়েরির অন্তর্ভুক্ত চারজনের মধ্যে তিনজনকে পুলিশ পরিচয়ে তুলে নেয়া হলো। গত ২৭ আগস্ট নারায়ণগঞ্জে জেএমবি নেতা তামিম আহমেদ চৌধুরীর সঙ্গে নিহত হয় যশোরের জঙ্গী ফজলে রাব্বী। সে যশোরের কিসমত নওয়াপাড়ার বাসিন্দা উপশহর ডিগ্রী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ হাবিবুল্লাহ’র ছেলে ও যশোর সরকারী এমএম কলেজের পদার্থ বিজ্ঞানের ২য় বর্ষের ছাত্র ছিল। স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ৫ এপ্রিল ফজলে রাব্বী বাড়ি ছাড়ার পর ৭ এপ্রিল তার বাবা যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় জিডি করেন। জিডিতে তিনি চারজনের নাম উল্লেখ করেছিলেন। এর মধ্যে সেই সময় কিসমত নওয়াপাড়া বিশ্বাসপাড়া মসজিদের ইমামের দায়িত্ব থাকা সদর উপজেলার কিসমত রাজাপুর গ্রামের শহিদুজ্জামানের ছেলে মোহাম্মদ ইয়াহিয়া এবং ওবায়দুল্লাহ ও তৈয়বুর রহমান সুমন এবং কিসমত নওয়াপাড়ার দোকানদার রাশেদের নাম ছিল। ফজলে রাব্বীর সঙ্গে ইমাম ইয়াহিয়া, ওবায়দুল্লাহ ও তৈয়বুর রহমান সুমনের সখ্য ছিল। রাব্বী নিহত হওয়ার পর তার বাবার করা সাধারণ ডায়েরির সূত্র ধরে তাদের আটক করা হয়েছে বলে এলাকাবাসীর ধারণা। তবে তাদের তুলে নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করছে পুলিশ। রাব্বী নিহত হওয়ার একদিন পর (২৮ আগস্ট) স্থানীয় মসজিদের ইমাম ইয়াহিয়াকে পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। সর্বশেষ গত ৩১ আগস্ট দিবাগত রাতে পুলিশ পরিচয়ে যুব উন্নয়ন অধিদফতর মসজিদের ইমাম মনিরামপুর উপজেলার গৌরীপুর গ্রামের বাসিন্দা মোহাম্মদ ওবায়দুল্লাহ ও যুব উন্নয়ন এলাকার আইয়ুব হোসেনের ছেলে তৈয়বুর রহমান সুমনকে তুলে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিখোঁজ তৈয়বুর রহমান সুমনের বাবা আইয়ুব হোসেন জানান, বুধবার রাতে একদল পুলিশ এসে তার ছেলেকে তুলে নিয়ে গেছে। পরে থানায় খোঁজ নিয়ে পাওয়া যায়নি। রাব্বীর সঙ্গে সুমনের কোন যোগাযোগ ছিল কী না তা তিনি জানেন না। তবে সে তবলিগ জামায়াত করত জানেন। ইমাম ওবায়দুল্লাহর ভগ্নিপতি মোহাম্মদ কামরুজ্জামান জানান, ৩১ আগস্ট (বুধবার) রাতে পুলিশ ওবায়দুল্লাহকে যুব উন্নয়ন ক্যাম্পাসের মসজিদ থেকে তুলে নিয়ে গেছে। পরে আর সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। অপর ইমাম ইয়াহিয়ার চাচা আসাদুজ্জামান জানান, গত রবিবার সাদা পোশাকে দুজন পুলিশ ইয়াহিয়াকে বাহাদুরপুর দারুস সুন্নাহ মাদ্রাসা ও এতিমখানা থেকে মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে যায়। পরে স্থানীয় ফাঁড়ি ও থানায় খোঁজ নিয়ে তারা আর ইয়াহিয়াকে খুঁজে পাননি। এ প্রসঙ্গে যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্ত (ওসি) ইলিয়াস হোসেন জানান, মোহাম্মদ ইয়াহিয়া, মোহাম্মদ ওবায়দুল্লাহ ও তৈয়বুর রহমান সুমন নামে কাউকে থানা পুলিশ আটক করেনি।
×