ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

এক হাজার ২শ’ কোটি টাকার প্রকল্প

’১৮ সালের মধ্যে উচ্চগতির ব্রডব্যান্ডের আওতায় সব ইউনিয়ন

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬

’১৮ সালের মধ্যে উচ্চগতির ব্রডব্যান্ডের আওতায় সব ইউনিয়ন

ফিরোজ মান্না ॥ দেশের প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদ ২০১৮ সালের মধ্যে উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট কানেক্টিভিটির আওতায় আসছে। এ জন্য সরকার এক হাজার ২শ’কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নিয়েছে। ইতোমধ্যে এক হাজার ৫ ইউনিয়ন ইন্টারনেট কানেক্টিভিটির আওতায় চলে এসেছে। শহরের সঙ্গে গ্রামের পার্থক্য দূর করার জন্য সরকার এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এ তথ্য জানিয়েছেন। প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ইতোমধ্যে দেশের সব সরকারী প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটকে একটি অভিন্ন প্লাটফর্মের আওতায় নিয়ে আসার কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পাবলিক ওয়েবপোর্টাল ‘জাতীয় তথ্য বাতায়ন’ চালু করা হয়েছে। তথ্য জানতে সঙ্গে গ্রাম পর্যায়ে যোগাযোগের জন্য ইন্টারনেট সবার আগে দরকার। ‘বাংলা গব নেট ও ইনফো সরকার’ প্রকল্পের আওতায় দেশের প্রায় সব উপজেলা ফাইবার অপটিক কেবলে সংযুক্ত হয়েছে। ফলে দেশের ১৮ হাজার ১৩২টি সরকারী সংস্থা অবিভক্ত নেটওয়ার্কের আওতায় চলে এসেছে। এখন সারাদেশের সব মানুষকে একটি ছাতার নিচে নিয়ে আসার জন্য ইউনিয়ন পর্যন্ত কানেক্টিভিটি তৈরি করার প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। ইন্টারনেট সুবিধার আওতায় আনতে ‘অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্ক ডেভেলপমেন্ট এ্যাট উপজেলা লেভেল প্রজেক্ট’ নামের একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল)। এই প্রকল্পের আওতায় ৬৪টি জেলার ১ হাজার ৫টি ইউনিয়নে প্রায় ১১ হাজার কিলোমিটার অপটিক্যাল ফাইবার কেবল ও ট্রান্সমিশন যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হচ্ছে। এর বাইরে চর, নদী নালা বেষ্টিত বিদ্যুতবিহীন দুর্গম এলাকায় ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক স্থাপন করা হচ্ছে। তৃণমূলের উন্নয়নসহ ই-কমার্স পণ্যের বিপণনের তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে তুলে ধরার জন্য ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের (ইউডিসি) ১০ হাজার উদ্যোক্তাকে ইনফোলিডার হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। ফিচার ও প্রতিবেদন লেখা এবং ই-কমার্সের পাশাপাশি আয় বৃদ্ধির জন্য তাদের আউটসোর্সিংয়ের প্রশিক্ষণও দেয়ার কর্মসূচী চলছে। ইউডিসিগুলোর ১০ হাজার উদ্যোক্তার প্রতিবেদন ও ফিচার লেখায় দক্ষ করে তোলার মধ্য দিয়ে তৃণমূলের তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিত হবে। গ্রামবাংলা ও মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের চিত্র তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তারা জনগণ ও বহির্বিশ্বের কাছে পৌঁছে দেবে। ইন্টারনেট ব্যবহার করে শুধুমাত্র তথ্য ও সংবাদ সংগ্রহ করা নয়। তৃণমূলের উন্নয়ন ও সাফল্যের কথা লিখে তা অনলাইনে নিয়ে আসবে। তা বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে পড়বে। পলক বলেন, প্রতিটি ইউডিসি হবে অর্থনীতি ও ব্যবসার কেন্দ্র। উদ্যোক্তাদের আউটসোর্সিং ও ই-কমার্সের প্রশিক্ষণ নিয়ে ইউডিসিগুলোকে বিজনেস প্রসেস সেন্টার হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করবে উদ্যোক্তারা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১০ সালের ১১ নবেম্বর সারাদেশে সাড়ে চার হাজারেরও বেশি ইউডিসি স্থাপন করেন। প্রতি মাসে প্রায় ৪৫ লাখ মানুষ এসব ইউডিসি থেকে তথ্য ও সেবা গ্রহণ করছে। কিন্তু সব ইউনিয়ন ফাইবার অপটিক কেবল সংযুক্ত হয়। মোবাইল অপারেটরদের ইন্টারনেটের ব্যবহার করে এসব ইউডিসি চলছে। ব্রডব্যান্ড সেবা দিতে সরকার দেশের প্রতিটি ইউনিয়নকে ২০১৮ সালের মধ্যে অপটিক্যাল কেবলের সঙ্গে যুক্ত করে নেয়ার প্রকল্প হাতে নিয়েছে। ব্রডব্যান্ড সেবার সঙ্গে গ্রামের মানুষ যুক্ত হলে শহরের সঙ্গে গ্রামের পার্থক্য অনেকাংশে দূর হবে। সূত্র জানিয়েছে, তিন বছর মেয়াদী তৃণমূলের তথ্য জানালা কর্মসূচীর আওতায় সারাদেশের ৬৪ জেলায় সাড়ে চার হাজারেরও বেশি ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তাদের প্রতিবেদন ও ফিচার লেখা, ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি এবং আউটসোর্সিং ও ই-কমার্স পরিচালনায় সক্ষমতা তৈরীর প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। এ কর্মসূচী বাস্তবায়নে সহযোগিতা করছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রোগ্রাম ও বাস্তবায়ন সহযোগী হিসেবে কাজ করছে তথ্যসেবা বার্তা সংস্থা।
×