ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ঈদ-উল-আযহা ১৩ সেপ্টেম্বর

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬

ঈদ-উল-আযহা ১৩  সেপ্টেম্বর

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার উদযাপিত হবে পবিত্র ঈদ-উল-আযহা। শুক্রবার দেশের আকাশে কোথাও জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। ফলে আজ শনিবার জিলকদ মাসের ৩০দিন পূর্ণ হবে। ৪ সেপ্টেম্বর রবিবার থেকে জিলহজ মাস গণনা শুরু হবে। আর ১০ জিলহজ অনুযায়ী আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর পালিত হবে পবিত্র ঈদ-উল আযহা। শুক্রবার চাঁদ দেখা পর্যালোচনা শেষে এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি। এর আগে ঈদ-উল-আযহার তারিখ নির্ধারণ শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে বৈঠকে বসে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বায়তুল মোকাররম সভাকক্ষে এ চাঁদ দেখা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি বজলুল হক হারুন। এছাড়া সভায় ধর্মসচিব মোঃ আব্দুল জলিলও উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দেশের আকাশে কেথাও জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা না যাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। শুক্রবার সন্ধ্যায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির বৈঠকের পর বজলুল হক হারুন ১৩ সেপ্টেম্বর ঈদ-উল-আযহা উদযাপনের সিদ্ধান্তের কথা জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের কোথাও জিলহজের চাঁদ দেখার খবর পাওয়া যায়নি। তাই জিলহজ মাস শুরু হবে রবিবার থেকে। আর ১০ জিলহজ অনুয়ায়ী ১৩ সেপ্টেম্বর ঈদ-উল-আযহা পালিত হবে। সাধারণ হিজরি পঞ্জিকা অনুসারে জিলহজ মাসের ১০ তারিখে ঈদ-উল-আযহা উদযাপন করে থাকেন সারাবিশ্বের মুসলমানরা। মূলত চাঁদ দেখার ওপরই হিজরি মাসের গণনা নির্ভর করে। ১০ জিলহজে সারা বিশ্বের মুলমানরা সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টি লাভের আশায় পশু কোরবানি দিয়ে থাকেন। ইতোমধ্যে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে আগামী ১২ সেপ্টেম্বর সোমবার ঈদ-উল-আযহা উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সেদেশের আকাশে কোন চাঁদ দেখা না যাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সৌদি আরব বাংলাদেশের পশ্চিমে অবস্থিত হওয়ায় কয়েক ঘণ্টা সময়ের ব্যবধান রয়েছে। মূলত এ কারণে ধর্মীয় উৎসব সেখানে বাংলাদেশের চেয়ে একদিন আগে পালিত হয়ে থাকে। এই হিসাবে ১১ সেপ্টেম্বর আরাফাতের ময়দানে জড়ো হওয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হবে হজের আনুষ্ঠানিকতা। হজ শেষে হাজীরা সেখানে পশু কোরবানি করবেন। অন্য বছরের ন্যয় এবার বাংলাদেশ থেকে এক লাখের বেশি মানুষ হজ পালনের জন্য সৌদি আরবের মক্কায় যাবেন। শুক্রবার চাঁদ দেখা কমিটির সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ধর্ম সচিব মোঃ আব্দুল জলিল, প্রধান তথ্য অফিসার এ কে এম শামীম চৌধুরী, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক ড. মোঃ আলফাজ হোসেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব মোঃ সাইদুর রহমান, ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মোঃ হাফিজ উদ্দিন, তথ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম, বাংলাদেশ টেলিভিশনের পরিচালক (প্রশাসন) মোঃ সাখাওয়াত হোসেন, ওয়াকফ প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ প্রফেসর সিরাজ উদ্দিন আহমাদ, ঢাকা জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ মজিবর রহমান, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক মোঃ সামছুদ্দিন আহমেদ, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম মাওলানা মুহাম্মদ মিজানুর রহমান, লালবাগ শাহী মসজিদের খতিব মাওলানা আবু রায়হান ও চকবাজার শাহী জামে মসজিদের খতীব মাওলানা শেখ নাঈম রেজওয়ানা। সভায় বলা হয়, ১৪৩৭ হিজরির পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা সম্পর্কে সকল জেলা প্রশাসন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়, বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়সমূহ, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর এবং মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান হতে প্রাপ্ত তথ্য নিয়ে পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, শুক্রবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশের আকাশে কোথাও পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ার সংবাদ পাওয়া যায়নি। এমতাবস্থায়, ৩ সেপ্টেম্বর শনিবার জিলকদ মাস ৩০ দিন পূর্ণ হবে। ৪ সেপ্টেম্বর রবিবার থেকে পবিত্র জিলহজ মাস গণনা করা হবে। ১৩ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সারাদেশে পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উদযাপিত হবে। এদিকে ঈদ-উল-আযহা একদিন পিছিয়ে যাওয়ায় বাড়ি ফেরা নিয়ে সরকারী বেসরকারী চাকরিজীবীদের কিছুটা জটিলতায় পড়তে হবে। কারণ ঈদ-উল-আযহা একদিন পিছিয়ে যাওয়ায় সরকারী ছুটিও একদিন পিছিয়ে যাবে। এ কারণে আগামী ১১ সেপ্টেম্বর রবিবার অফিস করতে হবে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ১২ সেপ্টেম্বর ঈদ-উল-আযহার তারিখ ধরে ইতোমধ্যে অনেকেই তাদের অগ্রিম টিকেট সংগ্রহ করে রেখেছেন। বিশেষ এর সঙ্গে সাপ্তাহিক ছুটি শুক্রবার শনিবার ধরে বেশিরভাগই ৯ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থেকে বাড়ি ফিরতে শুরু করবেন। কিন্তু গত শুক্রবার জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা না যাওয়ায় এখন আগামী ১১ সেপ্টেম্বর রবিবারও তাদের অফিস করতে হবে। তবে গত ঈদ-উল-ফিতরের মতো এবার মাঝের একদিন রবিবার সরকার ছুটি ঘোষণা করলে ঈদে বাড়ি ফেরা অনেক সহজ হবে বলে অনেকে জানিয়েছেন। তারা বলেন, সরকারী ছুটি ঘোষণা না করলে এবার একসঙ্গে বাড়ি ফেরার চাপ পড়তে পারে।
×