ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

১৪ যুদ্ধাপরাধীর আপীল শুনানির অপেক্ষায়

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬

১৪ যুদ্ধাপরাধীর আপীল  শুনানির অপেক্ষায়

আরাফাত মুন্না ॥ একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদ- এবং বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ১২ মামলায় ১৪ যুদ্ধাপরাধীর আপীল শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। অন্যদিকে দ- ঘোষণার পরও যেসব আসামি পলাতক রয়েছে, তাদের গ্রেফতারের পরেই দ- কার্যকর করা যাবে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠনের পর থেকে এখন পর্যন্ত ২৬টি মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে, এদের মধ্যে পাঁচ কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুদ- ইতোমধ্যে কার্যকর করা হয়েছে। এছাড়া বিচার চলাকালে মারা গেছেন দশজন। সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগে ১২টি মামলায় ১৪ যুদ্ধাপরাধীর আপীল শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। এই ১৪ যুদ্ধাপরাধী হলেন- মৃত্যুদ-প্রাপ্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার ও সাবেক জামায়াত নেতা মোবারক হোসেন, জাতীয় পার্টির সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও সাবেক এমপি সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সার, জামায়াতের নায়েবে আমির আবদুস সুবহান, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম, নেত্রকোনার মোঃ ওবায়দুল হক তাহের, রাজাকার আতাউর রহমান ননী এবং আমৃত্যু কারাদ-প্রাপ্ত চাঁপাইনবাবগঞ্জের মাহিদুর রহমান। আমৃত্যু কারাদ- মাথায় নিয়ে পলাতক জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি ইঞ্জিনিয়ার আবদুল জব্বারের সর্বোচ্চ সাজা চেয়ে আপীল করেছেন রাষ্ট্রপক্ষ। এছাড়া মৃত্যুদ-প্রাপ্ত বাগেরহাটের সিরাজুল হক সিরাজ মাস্টার, আমৃত্যু কারাদ-প্রাপ্ত আকরাম হোসেন খান এবং মৃত্যুদ-প্রাপ্ত পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের মোঃ ফোরকান মল্লিক, করিমগঞ্জের পাঁচ রাজাকারের মধ্যে মৃত্যুদ-প্রাপ্ত কিশোরগঞ্জ জেলা বারের আইনজীবী শামসুদ্দিন আহমেদ রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করেছেন। হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জের দুই সহোদর মহিবুর রহমান বড় মিয়া ও মুজিবুর রহমান আঙ্গুর মিয়ার দ-ের বিরুদ্ধেও আপীল করা হয়েছে। সর্বশেষ গত ১০ আগস্ট এক রায়ে যশোর ৬ আসনের সাবেক এমপি মাওলানা শাখাওয়াত হোসেনের মৃত্যুদ- দিয়ে রায় ঘোষণা করেন ট্রাইব্যুনাল। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপীল আবেদন করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী। দ- কার্যকরের প্রক্রিয়া চলছে মীর কাশেমের ॥ যুদ্ধকালীন সময়ে চট্টগ্রামে ত্রাস কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী মীর কাশেম আলীর মৃত্যুদ- কার্যকরের প্রক্রিয়া চলছে। গত মঙ্গলবার মীর কাশেম আলীর রিভিউ আবেদন খারিজ করে সুপ্রীমকোর্ট রায় ঘোষণার পর থেকেই এ প্রক্রিয়া শুরু হয়। এরপর এই যুদ্ধাপরাধীর সামনে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণ ভিক্ষা চাওয়ার সুযোগ থাকলেও, তিনি সেই সুযোগ গ্রহণ করবেন না বলে শুক্রবার জানিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ। ফলে যে কোন মুহূর্তে এই যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুদ- কার্যকর করা হবে। পাঁচ যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুদ- কার্যকর ॥ অপরদিকে, মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর পাঁচ নেতার ফাঁসির দ- কার্যকর করা হয়েছে। এরা হলেন, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লা ও মোহাম্মদ কামারুজ্জামান, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের সাকা চৌধুরী এবং জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী। পাঁচ যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুদ- কার্যকর হতে পারে গ্রেফতারের পরই ॥ চার মামলায় সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদ-প্রাপ্ত পলাতক পাঁচজন যুদ্ধাপরাধী আপীল না করায় গ্রেফতার হলেই ফাঁসি কার্যকরের সম্ভাবনা রয়েছে। তারা হলেন, জামায়াতের সাবেক নেতা আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকার, আশরাফুজ্জামান খান ও চৌধুরী মাঈনুদ্দিন, ফরিদপুরের নগরকান্দা পৌরসভার বহিষ্কৃত মেয়র ও পৌর বিএনপির সাবেক নেতা জাহিদ হোসেন খোকন এবং কিশোরগঞ্জের তাড়াইল থানার সৈয়দ মোঃ হাসান আলী ওরফে হাছেন আলী। এছাড়া কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জ, যশোরের পৃথক পৃথক মামলায় দ-প্রাপ্ত পালাতকদের খোঁজ নিতে সরকার ইন্টারপোলে পরোয়ানা জারির নোটিস জারি করেছে। মারা গেছে ১০ জন ॥ বিচার চলাকালে মারা গেছে ১০ যুদ্ধাপরাধী। এরা হলেন, যুদ্ধাপরাধীদের শিরোমণি জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযম ও আমৃত্যু কারাদ-প্রাপ্ত বিএনপির সাবেক মন্ত্রী ও নেতা আব্দুল আলীম। ফলে তাদের আপীলের নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত। এছাড়া বিচার শেষ পর্যায়ে থাকা অবস্থায় জামায়াতের সিনিয়র নায়েবে আমির একেএম ইউসুফ ও রায় অপেক্ষমাণ থাকা অবস্থায় বাগেরহাটের আব্দুল লতিফ তালুকদার মারা গেছেন। যশোরের কেশবপুরের মোঃ লুৎফর রহমান মোড়ল, তদন্ত শেষে কক্সবাজারের মহেশখালীর শামসুদ্দোহা ও মোঃ জিন্নাহ ওরফে জিন্নাত আলী, নেত্রকোনার পূর্বধলার আহাম্মদ আলী, ময়মনসিংহের মোঃ আমজাদ আলী এবং তদন্তাধীন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের এমদাদুল হক ওরফে টাক্কাবালী।
×