ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শেষ দৃশ্যের দর্শক নেই

প্রকাশিত: ০৪:০৫, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬

শেষ দৃশ্যের দর্শক নেই

নাটোরের কিংবদন্তি নাট্যাভিনেত্রী পুতুল রায়। ১৯৪৫ সালের ১ জানুয়ারি নাটোর শহরের লালবাজার এলাকায় অভিনেত্রী পুতুল রায়ের জন্ম । বাবার নাম বৈদ্যনাথ রায়। মা মনিকা রায়। চার ভাইবোনের মধ্যে তিনি মেজো। ছোট বেলায় গান শিখেছেন মায়ের কাছে। পুতুল রায়ের অভিনয়ের হাতে খড়ি হয় মাত্র ১২ বছর বয়সে। অভিনয় করেছেন মঞ্চ, বেতার ও টেলিভিশনে। ১৯৬৯ সালে তৎকালিন পূর্ব পাকিস্তানে নাট্য প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয় ঢাকায়। সে আমলে প্রখ্যাত অভিনেতা, অভিনেত্রী নায়করাজ রাজ্জাক, আনোয়ার হোসেন, সুমিতা দেবী, মোস্তফা প্রমুখের সঙ্গে অভিনয় করেছেন নবাব সিরাজউদ্দৌলা নাটকের ঘসেটি বেগম চরিত্রে। টেলিভিশনে অভিনয় করেছেন লালনের মা তারামন বিবি চরিত্রে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর অত্যাচারে দেশ ত্যাগ করেন। এসময় তিনি পরিবারের অন্যান্য সদস্যের সঙ্গে ছিলেন ভারতের রানাঘাটে। সেখানেও তিনি থেমে থাকেননি। মুক্তিযোদ্ধা ও শরনার্থীদের সাহায্যের জন্য তিনি সৌমেন ঠাকুরের উদ্যেগে রানাঘাটে মঞ্চ নাটকে অভিনয়ে করেন। ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত রাজশাহী বেতারে অসংখ্য নাটকে অভিনয় করেছেন। তার মধ্যে ঈশা খাঁ, সাতরং, সিরাজউদ্দৌলা নাটক উল্লেখযোগ্য। রাজশাহীর রঙ্গমঞ্চ এবং নাটোরের সাকাম সাংস্কৃতিক মঞ্চ প্রতিষ্ঠার পর তিনি নিয়মিত অভিনয় করেছেন। অভিনয়ের সুবাদে তিনি ঘুরে বেড়িয়েছেন দেশের বিভিন্নস্থানে। জেলা শিল্পকলা একাডেমীসহ বিভিন্ন সংগঠনের তরফ থেকে তিনি নানা সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন। হাস্যোজ্জ্বল মমতাময়ী এই নারী পরিবারের মা, ভাই বোনদের দেখাশুনার করার জন্য নিজে বিয়ে করেননি। চিরকুমারী থেকে গেছেন। আর পরিবারের কারণেই তাঁকে শেষ পর্যন্ত অভিনয় জগত ছাড়তে হয়েছে। কিংবদন্তি এই শিল্পীর বর্তমান বয়স ৭১। ডায়াবেটিসসহ বার্ধক্যজনিত জটিল রোগে আক্রান্ত। বর্তমানে বোনের ছেলে বিজন বসাকের সঙ্গে লালবাজারে বসবাস করছেন। আক্ষেপ করে তিনি বলেন, জীবনের খেলাঘরে অনেক নাটকেই তো অভিনয় করলাম, এখন শেষ দৃশ্যে অভিনয় করার অপেক্ষায় বসে আছি। তবে এ দৃশ্য দেখার কোন দর্শক নেই। Ñকালিদাস রায়, নাটোর থেকে
×