ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

অ দ্ভু ত ঘরবাড়ি

প্রকাশিত: ০৬:৫০, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৬

অ দ্ভু ত ঘরবাড়ি

পাথরবাড়ি পর্তুগালের নাস মন্টানহাস ডি ফাফেতে রয়েছে একটি অদ্ভুত পাথরবাড়ি। এই বাড়িটির নাম কাসাডো, পেনেডো বা পাথরের বাড়ি। চারটি বিরাট বড় পাথরের চাঁই দিয়ে তৈরি হয়েছে বাড়িটির ভিত্তি, ছাদ এবং দেয়াল। ১৯৭২ সালে এই পাথরবাড়ি তৈরির কাজ শুরু হয় এবং তা শেষ হয় দুই বছর পরে। অদ্ভুত সুন্দর এই বাড়িটি দেখলে মনে হয় এটি বুঝি পাথরের ফাঁকে চাপা পড়ে গেছে। শুরুতে বাড়ির মালিক ছুটি কাটানোর জন্য এই বাড়ি ব্যবহার করলেও পরবর্তীতে এটিকে একটি ছোট জাদুঘরে রূপান্তরিত করা হয়। বিমানবাড়ি যুক্তরাষ্ট্রের ওরিগনের এক ইঞ্জিনিয়ার একটি আস্ত বিমানকেই বানিয়ে ফেলেছেন নিজের বাড়ি। ব্রুস ক্যাম্পবেল নামের এই ইঞ্জিনিয়ার ১৯৯৯ সালে একটি পরিত্যক্ত বোয়িং ৭২৭ মডেলের বিমানটি কেনেন। ১০০০ ডলার খরচ করে কেনা সেই বিমানটিকে সাজিয়ে-গুছিয়ে থাকার উপযোগী করে তোলেন তিনি। আর এই কাজে তিনি ব্যয় করেন ১২০০০০ ডলার। বিমানের ককপিট এবং কেবিনের মধ্যে থাকার উপযোগী জায়গা রয়েছে ১০৬৬ স্কোয়ার ফিট। ব্রুসকে বছরে ছয় মাস থাকতে হয় জাপানে। বাকি ছয় মাস তিনি কাটান ওরিগনে তার বিমানবাড়িতে। তবে এখন তিনি বোয়িং ৭৪৭ মডেলের একটি পরিত্যক্ত বিমান কিনে জাপানেও একটা বাড়ি বানিয়ে ফেলার পরিকল্পনা করেছেন। বিয়ারের বোতলের বাড়ি বিয়ার ক্যান হাউস নামের এই বাড়ির অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের হাউসটনে। পুরো বাড়িটিই ঢেকে ফেলা হয়েছে বিয়ারের বোতল, ছিপি, বিয়ারের ক্যান দিয়ে। এজন্য ব্যবহার করা হয়েছে প্রায় ৫০,০০০ বিয়ারের ক্যান। ষাটের দশকের শেষদিকে জন মিলকোভিসচ নামের এক ব্যক্তি তার হাউসটনের বাড়িটিকে বিয়ার ক্যানের বাড়িতে রূপান্তরের কাজ শুরু করেন। বর্তমানে দ্য অরেঞ্জ শো সেন্টার ফর ভিশনারি আর্টের পরিচালনায় এই বাড়িটি একটি লোকশিল্প জাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। জলপ্রপাতে বাড়ি জলপ্রপাতের ওপরে বাড়ি তৈরি কি সম্ভব? হ্যাঁ, সম্ভব। সেটাই প্রমাণ করেছেন স্থপতি ফ্র্যাঙ্কলয়েড রাইট। জলপ্রপাতের ওপরে অবস্থান হওয়ায় বাড়িটির নাম ফলিংওয়াটার। ১৯৩৫ সালে লিলিয়ান কাউফম্যান এবং তার পরিবারের ছুটি কাটানোর স্থান হিসেবে বাড়িটি তৈরি করা হয়। এটি পেনিসিলভানিয়ায় অবস্থিত। এই বাড়ির কিছুটা অংশ একটি জলপ্রপাতের ওপর অবস্থিত। বাড়িটি দেখলে মনে হয় বুঝি সেখান থেকেই ঝর্ণা নেমে এসেছে। বাড়িটি তৈরি করতে খরচ হয়েছে ১৫৫০০০ ডলার। স্বচ্ছ বাড়ি সউ ফুজিমোতো আরকিটেক্সের তৈরি স্বচ্ছ বাড়ি আধুনিক স্থাপত্যের এক অনন্য নিদর্শন। জাপানের টোকিওতে অবস্থিত এই বাড়ির পুরোটাই স্বচ্ছ। এই বাড়িটির আয়তন ৯১৪ স্কোয়ার ফুট। এক তরুণ দম্পতির অনুরোধে এই স্বচ্ছ বাড়িটি তৈরি করা হয়। বাড়িটির প্রতিটি দেয়ালই স্বচ্ছ। বাইরে থেকে ভেতরের পুরোটুকু স্পষ্টভাবে দেখা যায়। অদ্ভুত এই বাড়িটির নাম দেয়া হয়েছে হাউস এনএ। বাড়িটিতে আধুনিক জীবনযাপনের সব সুযোগ-সুবিধাই আছে, নেই শুধু গোপনীয়তা। উল্টো বাড়ি হঠাৎ বাড়িটি দেখলে মনে হবে বুঝি কোন দৈত্য এসে উল্টে দিয়েছে এটি। জার্মানির ট্রাসেনহেইডের বাল্টিক সি আইল্যান্ডে অবস্থিত এই বাড়িটির নক্সা করা হয়েছে উল্টো করে। বাড়ির নাম দেয়া হয়েছে ‘ডাই ওয়েল্ট স্টেহট কপফ’ যার অর্থ ‘বিশ্ব দাঁড়িয়ে তার মাথায়।’ ইংরেজীতে বাড়িটিকে বলা হয় ‘দ্য ওয়ার্ল্ড স্ট্যান্ডস অন ইটস হেড।’ এই অদ্ভুত বাড়িটি তৈরির চিন্তা আসে ক্লডিউসজ গোলোস এবং সেবাস্টিয়ান মাইকিকিউক নামে দুই ব্যক্তির মাথা থেকে। বাড়িটি শুধু দেখতেই উল্টো নয়, এর ভেতরের সব আসবাবপত্রও রাখা উল্টো করে। অর্থাৎ বাড়িতে ঢুকলে মাথার ওপর ছাদ থেকে ঝুলে থাকে আসবাবপত্রগুলো। ডাইনিং টেবিল, টয়েল্ট, চুলা- এমনকি শোয়ার বিছানাটাও উল্টোভাবে রাখা আছে এই বাড়িতে। চীনামাটির বাসনে তৈরি বাড়ি অদ্ভুত হলেও সত্যি যে চীনের এক ব্যক্তি চীনামাটির বাসন দিয়েই বানিয়ে ফেলেছেন আস্ত একটা বাড়ি। প্রাচীন নিদর্শন সংগ্রহকারী এই ব্যক্তির নাম ঝ্যাং লিয়ানঝি। পোরসেলেইন হাউস বা ইউইবাও হাউস নামের এই বাড়ি বানাতে ব্যবহার করা হয়েছে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ভাঙা চীনামাটির বাসনের টুকরো, ৫০০০ পুরনো ফুলদানি, ৪০০০ বাটি এবং পেট, ২০ টনের বেশি ক্রিস্টাল পাথর এবং ৪০০ শ্বেতপাথর। বাড়িটি তৈরি করতে খরচ হয়েছে প্রায় ৬৫ মিলিয়ন ডলার। ২০ বছর ধরে এই বাড়ি তৈরির সামগ্রী সংগ্রহ করেছেন ঝ্যাং। বাড়িটির সাজানোর কাজ শেষ করতে লেগেছে ৫ বছর। বর্তমানে এই বাড়িটি চীনের প্রাচীন নিদর্শনের জাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। প্লাস্টিক বোতলের বাড়ি এল স্যালভাদরের সান মিগুয়েল প্রদেশের একটি গ্রাম এল বরবলন। এই গ্রামে বসবাস করেন ৭৬ বছর বয়সী মারিয়া। তবে তাকে অন্যদের চেয়ে আলাদা করেছে তার প্লাস্টিক বোতলের তৈরি বাড়ি। তবে শখের বশে এই বাড়ি বানাননি তিনি। সাধারণ বাড়ি বানানোর সামর্থ্য না থাকায় তিনি থাকার জন্য ফেলনা প্লাস্টিক বোতল দিয়ে বাড়ি বানিয়ে ফেলেছেন। বাড়িটির দেয়াল এবং ছাদে ব্যবহার করা হয়েছে প্লাস্টিকের বোতল। মেঝে ঢেকে দেয়া হয়েছে বোতলের ছিপি দিয়ে। আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে এমন বাড়ি তৈরি করলেও মারিয়ার এই বোতল বাড়িটি অত্যন্ত শৈল্পিক। রঙিন এই বাড়িটি তার সৃষ্টিশীল মনেরই পরিচয় তুলে ধরে।
×