মুহাম্মদ ফরিদ হাসান
প্রতিদিন ঘুম ভেঙে ভাবি এই বুঝি দেখবো অজস্র বকুল ঝরছে তোমার চুল থেকে কিংবা দ্বিগি¦জয়ী সূর্যটা লাল টিপ হয়ে ঝুলে আছে তোমার কপালে। সেই কবে থেকে এমন ভাবনা নিয়ে আমি রাতের পর রাত ঘুমিয়ে পড়েছি, বারবার জেগে উঠেছি আরক্তিম সূর্যের সাথে। যে পথে হেঁটে যাও, ভাসিয়ে দাও সমস্ত দুপুর কিংবা যেখানে বসে থাকো এক স্বপ্নভরা বিকেল নিয়ে-ভাবি, তোমার স্পর্শে হঠাৎ বুঝি সে পথ হয়ে যাবে রূপালি ঝর্ণা, আর ছুটে চলবে এক আদিগন্তের দিকে-সেখানে প্রেমিকব্যতীত কেউ থাকে না!
প্রতিদিন ঘুম ভেঙে ভাবি এই বুঝি দেখবো তোমার হাতভরা কাঁচের চুড়ি একতারার শব্দে বাজছে আর ভর শ্রাবণের মতো তোমার কথারা ঝরে যাচ্ছে আমার কানে- সেই কবে থেকে উৎকীর্ণ রেখে আছি কান, খুলে আছি হৃদয় দুয়ার- কেউ মাড়ায়নি চৌকাঠ, কেউ কখনো বলে নি-এসো খুনরাঙা হই... এসো আজ তুমুল বৃষ্টি নামাই।
তবু প্রতিদিন ঘুম ভেঙে ভাবি এই বুঝি দেখবো অজস্র বকুল ঝরছে তোমার চুল থেকে কিংবা দ্বিগি¦জয়ী সূর্যটা লাল টিপ হয়ে ঝুলে আছে তোমার কপালে...
** কবিতার হকার
ইকবাল পারভেজ
পুরনো খবরের কাগজের সাথে
আমার স্ত্রী
কবিতার খাতটিও বিক্রি করেছে হকারের কাছে
আমি কবিতার হকারকে খুঁজে বেড়াই
অলি গলি খুপরি ঘরে
বাদামের ঠোংগায় মুদি দোকানে
কবিতা আমার স্ত্রীর মতো
হারিয়ে গেলে হাতরে মরি
হিল্লা দিয়ে স্ত্রীকে ঘরে তুলি
কবিতা ঘরে ফিরে না
যাদু আমার কোথায় ঘুমায়
কোন বাঁদাড়ে
হকার কবিতা কেনে কেজি মূল্যে।
** আলো অসুখের গান
রেজওয়ান তানিম
অথবা সাক্ষ্য দিক আলো অসুখ
ম্যারিয়ান গির্জা, এইভাবে শুয়ে থাকা পাশাপাশি
জলপাই দিন, আর রোদের দরদ
লুকনো যাপন, নোখে আঁকা নীল প্রেম।
শুনেছি সূর্যাস্তের সময়, নগ্ন হতে নেই
এমনকি নিজের কাছেও! অবিশ্বাস নিজস্ব আগুন
বিকিকিনি করে, শিরীষ পাতার প্রেম
গ্লানিময় ঘৃণা তখন, নিষিদ্ধ আপেল!
কেউ মনে রাখেনি সে ডুবি ভাসি চিলেকোঠা,
বেদনার পায়ে নদীর নূপুর, পোড়া চিবুকের ভাষাহীন কথা!
এই শীত শিখিয়ে গেছে অবজ্ঞার মন্ত্র, তাই
একবার চুমু লিখে পুনর্জন্ম নিলো ইতিহাস!
শাড়িতে রক্তের পার একে দিয়ে,
কখন বারুদ ভুলে গেছে গতজন্মপাপ-
বলেনি বেহায়া ঘুণ্টিঘর! অপেক্ষার
তীব্র তমোহর, ভুল বিপ্লব এনেছে বারবার!
অনেক মাতাল, মহুয়ার বনে
বসে লিখে যাচ্ছে নেশা, ধুতুরার গান।
আমি শুধু দেখি বিবর্তনের ধারায়
উল্টে যাচ্ছে সময়, ম্লান শেষে চেনাদুপুর রঙ পাল্টায়।
** সোনালি ঘোড়া
শিউল মনজুর
নিঃসঙ্গতা নিয়ে কিছু সোনালি শিশির উড়ছে আমাদের আঙ্গিনায়। নিঃসঙ্গতা নিয়ে রাবারের গোল চাকায় ঘুরছে কিছু সোনালি ঘোড়া এবং নিঃসঙ্গতায় পোড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে ফুল বাগানের কিছু রঙ্গিন প্রজাপতি। তবু নিঃসঙ্গতাকে কেউ কেউ বাজার দরে সেলাই করে বাবলি রোডের জেসমিন টেইলার্সে আর কেউ কেউ কাঁচাবাজারে সদাই করে বুয়ার হাতে ধরিয়ে দেয় বাজারের থলি।
শীর্ষ সংবাদ: