ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জুলাই মাসে এজেন্টের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ১৩ হাজার

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেন কমেছে ২৩ শতাংশ

প্রকাশিত: ০৪:১৯, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৬

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেন কমেছে ২৩ শতাংশ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে চলতি অর্থবছরের জুনে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে ৭শ কোটি টাকার লেনদেন হলেও জুলাইতে লেনদেন হয়েছে সাড়ে ৫শ কোটির কিছু বেশি। এক মাসের ব্যবধানে লেনদেনের পরিমাণ কমেছে ২৩ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত জুলাই মাসে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ৫৮৭ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। এর আগের মাসে গড় লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৭৭১ কোটি ৭১ লাখ টাকা। অর্থাৎ ১ মাসের ব্যবধানে লেনদেন কমেছে ২৩ শতাংশ। এতে করে স্বাভাবিকভাবেই কমে গেছে মোট লেনদেনের পরিমাণ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত জুনে ঈদ-উল-ফিতরের আগে মানুষ মোবাইল ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহার করে বেশি অর্থ স্থানান্তর করেছে। ফলে এ মাসে বেশি লেনদেন হয়েছে। আর জুলাইতে যে পরিমাণ লেনদেন হয়েছে তা মূলত স্বাভাবিক অবস্থায় রয়েছে। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে রেমিটেন্স আহরণের পরিমাণও বেশ কমে গেছে। উল্লিখিত সময়ে রেমিটেন্স এসেছে ৫ কোটি ৯১ লাখ টাকা, যা আগের মাসের তুলনায় ১৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ কম। আগের মাসে রেমিটেন্স এসেছিল ৭ কোটি ৯ লাখ টাকা। এছাড়া ক্যাশ ইন ও ক্যাশ আউটের পরিমাণও কমেছে। তথ্য মতে, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বেতন ভাতা পরিশোধ পরিমাণ কমেছে ৭২ দশমিক ৫১ শতাংশ। জুলাইয়ে ১২০ কোটি টাকার বেতন প্রদান করা হয়েছে এ মাধ্যমে। যা আগের মাসে ছিল ৪৩৭ কোটি টাকা। এছাড়া ইউটিলিটি বিল পরিশোধ করা হয়েছে ১৭৪ কোটি টাকার। যা আগের মাসে ছিল ২২৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে বিল পরিশোধেও ২৩ শতাংশ লেনদেন কম হয়েছে। তবে কেনাকাটা, ট্যাক্সি ক্যাবের বিল, হাসপাতালের বিল মেটানোসহ কয়েকটি ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে ৩৬৩ কোটি টাকা। জানা যায়, নিয়মানুযায়ী শুধু মোবাইল ব্যাংকিং এ্যাকাউন্ট রয়েছে এমন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এ মাধ্যমে লেনদেন করবে। তবে বেশিরভাগ এজেন্ট এ নিয়ম না মেনে নামে-বেনামে এ্যাকাউন্ট খুলে টাকা পাঠায়। এর ফলে মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহার করে ঘুষ-দুর্নীতিসহ অবৈধ লেনদেনের অভিযোগ ওঠে। এর পর এ ক্ষেত্রে বেশ কড়াকড়ি আরোপ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এক্ষেত্রে আরও বেশি কড়াকড়ি হতে শুরু করেছে মোবাইল সিমের বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের পর। প্রতিবেদনের তথ্যমতে, জুলাই পর্যন্ত ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ বেড়ে এজেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ১৩ হাজারে। যা জুনে ছিল ৬ লাখ ৪ হাজার। প্রতিবেদনে দেখা গেছে, লেনদেন কমলেও এক মাসের ব্যবধানে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের গ্রাহক বেড়েছে। বর্তমানে নিবন্ধিত গ্রাহক রয়েছে ৩ কোটি ৬৫ লাখ ৭৯ হাজার। যা আগের মাস জুনে ছিল ৩ কোটি ৬২ লাখ। এর মধ্যে চালু এ্যাকাউন্টের সংখ্যা ১ কোটি ৩৪ লাখ। কোন এ্যাকাউন্ট থেকে টানা তিন মাস লেনদেন না হলে তা ইন-এ্যাকটিভ বা নিষ্ক্রিয় এ্যাকাউন্ট হিসেবে বিবেচিত হয়। অবশ্য বড় কোন অনিয়ম না পাওয়া গেলে এ্যাকাউন্ট বন্ধ করে না ব্যাংক। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা বলেন, লেনদেন কমে গেছে এতে অসুবিধার কিছু নেই। কারণ এটিই বর্তমান সময়ে মোবাইল ব্যাংকিং লেনদেনে স্থিতিশীল অবস্থা। আগের মাসে ঈদ ছিল বলে লেনদেন বেড়ে গিয়েছিল।
×