ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জুলাই শেষে ঋণ ও আমানত উভয় ক্ষেত্রেই সুদহার কমিয়েছে ব্যাংকগুলো

২৩ ব্যাংকের স্প্রেড বেশি

প্রকাশিত: ০৪:১৭, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৬

২৩ ব্যাংকের স্প্রেড বেশি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়মে কোন ব্যাংকের ঋণ ও আমানতের (স্প্রেড) সুদ ব্যবধান ৫ শতাংশীয় পয়েন্টের বেশি হতে পারবে না। কিন্তু চলতি বছরের জুলাই শেষে ২৩টি ব্যাংকের স্প্রেড কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশিত সীমার বাইরে রয়েছে। এ তালিকায় বেসরকারী খাতের ১৬টি, বিদেশী খাতের ৬টি ও সরকারী খাতের ১টি ব্যাংক রয়েছে। এ সময়ে সবচেয়ে বেশি স্প্রেড রয়েছে বেসরকারী ব্র্যাক ব্যাংকের। তবে এ মাসে ব্যাংকিং খাতে গড় স্প্রেড দশমিক ১ শতাংশীয় পয়েন্ট কমেছে। এর আগে টানা ৩ মাস বৃদ্ধির পর জুনে গড় স্প্রেড দশমিক ৫ শতাংশীয় পয়েন্ট কমেছিল। এদিকে জুলাইয়ে ব্যাংকের ভোক্তা খাতে বিতরণ করা ঋণ বাদ দিয়েও স্প্রেডের হিসাব দেখিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এক্ষেত্রেও স্প্রেড সীমা বেশি রয়েছে ২৩টি ব্যাংকের। এ তালিকায় বেসরকারী খাতের ১৫টি, বিদেশী খাতের ৫টি ও সরকারী খাতের ২টি ব্যাংকের নাম রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, আমানতের অনুপাতে ঋণের হার না কমায় স্প্রেড প্রত্যাশিত হারে কমছে না। এর জন্য খেলাপিঋণ বৃদ্ধিকে দায়ী করেন তারা। গত ২১ জুন এক চিঠিতে ১৫ দিনের মধ্যে স্প্রেড ৫ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের সে নির্দেশনা উপেক্ষা করেছে এসব ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, জুলাই শেষে ঋণ ও আমানত উভয় ক্ষেত্রেই সুদহার কমিয়েছে ব্যাংকগুলো। তবে আমানতের চেয়ে ঋণের সুদ তুলনামূলক কম কমেছে। এ সময়ে দেশের ৫৬টি ব্যাংকের ঋণের গড় সুদহার দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ৩২ শতাংশ। যা আগের মাসে ছিল ১০ দশমিক ৩৯ শতাংশ। এ সময়ে আমানতের গড় সুদহার দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ। যা আগের মাসে ছিল ৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ। আমানতের পাশাপাশি ঋণের সুদ কমায় জুলাইয়ে গড় স্প্রেড দশমিক ১ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ৮৪ শতাংশীয় পয়েন্ট। যা জুনে ছিল ৪ দশমিক ৮৪ শতাংশীয় পয়েন্ট। এছাড়া মে মাসে এ খাতে ৪ দশমিক ৯০ শতাংশীয় পয়েন্ট স্প্রেড ছিল। তবে এ সময়ে ব্যাংকিং খাতে গড় স্প্রেড ৫ শতাংশের নিচে অবস্থান করলেও বিদেশী খাতের ব্যাংকগুলোর গড় স্প্রেড এখনও ৬ শতাংশীয় পয়েন্টর ওপরে রয়েছে। প্রতিবেদনে দেখা যায়, জুলাই মাসে বিদেশী খাতের ৬টি ব্যাংকের স্প্রেড নির্ধারিত সীমার বাইরে রয়েছে। এগুলো হলোÑ স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের ¯েপ্রড ৮ দশমিক ৯৩ শতাংশীয় পয়েন্ট, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার ৬ দশমিক ৩০ শতাংশীয় পয়েন্ট, সিটি ব্যাংক এন এ ৬ দশমিক ২৩ শতাংশীয় পয়েন্ট, উরি ব্যাংক ৫ দশমিক ৮৩ শতাংশীয় পয়েন্ট, কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলনের ৫ দশমিক ২৪ শতাংশীয় পয়েন্ট এবং দ্য হংকং এ্যান্ড সাংহাই ব্যাংক কর্পোরেশন লিমিটেডের (এইচএসবিসি) ¯েপ্রড দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৯৮ শতাংশীয় পয়েন্টে। এ সময়ে বেসরকারী খাতের ১৬টি ও সরকারী খাতের একটি ব্যাংকের স্প্রেডও নির্ধারিত সীমা অতিক্রম করেছে। সরকারী ব্যাংকগুলোর মধ্যে অগ্রণী ব্যাংকের স্প্রেড দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ২০ শতাংশীয় পয়েন্ট। আর বেসরকারী ব্যাংকের মধ্যে ব্র্যাক ব্যাংকের ¯েপ্রড ৯ দশমিক ৩৮ শতাংশীয় পয়েন্ট, যা একক ব্যাংক হিসেবে ব্যাংকিং খাতে সবচেয়ে বেশি। এছাড়া ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের ৭ দশমিক ২৩ শতাংশীয় পয়েন্ট, ওয়ান ব্যাংকের ৫ দশমিক ৯১ শতাংশীয় পয়েন্ট, আইএফআইসির ৫ দশমিক ৯২ শতাংশীয় পয়েন্ট, ইস্টার্ন ব্যাংকের ৫ দশমিক ৪৪ শতাংশীয় পয়েন্ট, দ্য সিটি ব্যাংকের ৫ দশমিক ১৫ শতাংশীয় পয়েন্ট, এবি ব্যাংকের ৫ দশমিক ২১ শতাংশীয় পয়েন্ট, পূবালী ব্যাংকের ৫ দশমিক ১০ শতাংশীয় পয়েন্ট, উত্তরা ব্যাংকের ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশীয় পয়েন্ট ও ট্রাস্ট ব্যাংকের ৫ দশমিক ৪৭ শতাংশীয় পয়েন্ট স্প্রেড রয়েছে। এছাড়া নতুন প্রজন্মের ৯টি ব্যাংকের মধ্যে ৬টিরও স্প্রেড ৫ শতাংশীয় পয়েন্টের ওপরে অবস্থান করছে।
×