ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

জঙ্গী অর্থায়ন

সিঙ্গাপুরে আরও দুই বাংলাদেশীর কারাদণ্ড

প্রকাশিত: ০৮:৩৬, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৬

 সিঙ্গাপুরে আরও দুই বাংলাদেশীর কারাদণ্ড

বিডিনিউজ ॥ জঙ্গী অর্থায়নের দায়ে চার মাস আগে আটক দৌলত ও মামুন নামে আরও দুই বাংলাদেশীকে কারাদ- দিয়েছে সিঙ্গাপুরের আদালত। এদের মধ্যে দৌলতুজ্জামানকে (৩৪) দুই বছর এবং লিয়াকত আলী মামুনকে (২৯) আড়াই বছর কাটাতে হবে সে দেশের জেলে। মঙ্গলবার সিঙ্গাপুরের জেলা জজ আদালত এই দুজনের সাজা ঘোষণা করেছে বলে স্ট্রেইটস টাইম ও চ্যানেল নিউজ এশিয়া জানায়। দৌলত ও মামুন এর আগে অভিযোগ অস্বীকার করলেও মঙ্গলবার দোষ স্বীকার করলে আদালত এ রায় দেয়। রাষ্ট্রপক্ষ আদালতে বলেছে, বাংলাদেশে সশস্ত্র জঙ্গীবাদ চালাতে অস্ত্র কেনার অর্থ যোগানোর জন্য নির্মাণশ্রমিক দৌলত ২শ’ এবং মামুন ৮শ’ সিঙ্গাপুরী ডলার দিয়েছে চাঁদা হিসেবে। গত এপ্রিলে আট বাংলাদেশীকে সিঙ্গাপুরের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা আইনে আটক করার পর ছয়জনকে জঙ্গীবাদে মদদ দেয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত করে আদালত। তাদের মধ্যে মিজানুর রহমান (৩১), রুবেল মিয়া (২৬), জাবেদ কায়সার হাজী নুরুল ইসলাম সওদাগর (৩০) ও ইসমাইল হাওলাদার সোহেলকে (২৯) গত ১২ জুলাই দুই থেকে পাঁচ বছরের কারাদ- দেয় আদালত। জঙ্গী কর্মকা-ে সহায়তার জন্য কয়েক হাজার ডলার সংগ্রহ ও তা সরবরাহের কথা তারা আদালতে স্বীকার করার পর এ রায় দেয়া হলো। এই ছয় বাংলাদেশীর সবাই কাজ নিয়ে সিঙ্গাপুরে গিয়ে জঙ্গীবাদে জড়িয়েছে বলে জানায় সিঙ্গাপুরের পুলিশ। প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে আদালতে বলা হয়, মধ্যপ্রাচ্যের জঙ্গী দল আইএসের সঙ্গে যোগাযোগের পর গত মার্চে মিজানুর সিঙ্গাপুরপ্রবাসী কয়েক বাংলাদেশীকে নিয়ে একটি দল গড়ে, যার নাম দেয়া হয় ইসলামিক স্টেট ইন বাংলাদেশ। আইএসের যুদ্ধে যোগ দেয়ার জন্য মিজানুর তিন দফা চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। তুরস্ক ও আলজিরিয়া তার ভিসার আবেদন নাকচ করে দেয়। এরপর সে কাজ নিয়ে সিঙ্গাপুরে যায়। স্ট্রেইটস টাইমসের এক রিপোর্টে বলা হয়, দলের প্রত্যেকের সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব ভাগ করা ছিল। মিজানুর ছিল দলনেতা, মামুন তার ডেপুটি। রুবেলের দায়িত্ব ছিল কোষাধ্যক্ষের আর জাবেদের কাজ ছিল জনসংযোগের। এছাড়া দৌলতুজ্জামান ও সোহেলকে দলের নিরাপত্তা ও সামরিক শাখার প্রধান বানিয়েছিল মিজানুর। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, জাবেদের কাছে জঙ্গী কর্মকা-ের জন্য সংগ্রহ করা এক হাজার ৩৬০ মার্কিন ডলার ছিল যার মধ্যে এক হাজার ৬০ ডলার সংগ্রহ করে দিয়েছিল রুবেল। ওই দলের সবাই নিজেরাও ৬০ থেকে ৫০০ ডলার পর্যন্ত চাঁদা দিয়েছেন ‘জিহাদের’ জন্য। গত এপ্রিলে ওই ছয়জনের সঙ্গে সোহাগ ইব্রাহিম (২৭), শরিফুল ইসলাম (২৭) নামে আরও দুজনকে গ্রেফতার করে সিঙ্গাপুরের পুলিশ। তবে সিঙ্গাপুরের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আট বাংলাদেশীকে গ্রেফতারের খবর প্রকাশ করে মে মাসের শুরুতে। তাদের গ্রেফতারের পর সিঙ্গাপুরের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, মিজানুরের কাছে বাংলাদেশের সরকার ও সামরিক কর্মকর্তাদের একটি তালিকা পাওয়া গেছে, যাদের ওপর হামলার পরিকল্পনা তারা করেছিল। এই গোষ্ঠীর অন্তত আরও দুইজন সদস্য বাংলাদেশে রয়েছে।
×