ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নাটোরে শিশু সন্তান হত্যা মামলায় বাবা ও সৎ মায়ের ফাঁসি

প্রকাশিত: ০৬:১৪, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৬

নাটোরে শিশু সন্তান হত্যা মামলায় বাবা ও সৎ মায়ের ফাঁসি

নিজস্ব সংবাদদাতা, নাটোর, ৩১ আগস্ট ॥ বড়াইগ্রামে ৮ বছরের শিশু সন্তান ইমনকে হত্যার মামলায় বাবা ও সৎ মাকে মৃত্যুদ- দিয়েছে জেলা ও দায়রা জজ আদালত। বুধবার দুপুরে বিচারক রেজাউল করিম এ রায় দেন। জানা যায়, ২০০৩ সালে বড়াইগ্রামের কামারদহ গ্রামের মৃত আছির উদ্দিনের ছেলে ইমদাদুল হক মিলনের সঙ্গে শ্রীখ-ী গ্রামের মৃত আবুল বাসারের মেয়ে কুলসুমা বেগমের বিয়ে হয়। তাদের ঘরে ছেলে ইয়াছিন আরাফাত ইমন জন্ম নেয়। বিয়ের পর কুলসুমা বেগম জানতে পারেন যে, তার স্বামী বাস-ট্রাকে রাতে ডাকাতি করে এবং একটি হত্যা মামলার আসামি। মিলনকে সুপথে আনতে মায়ের কাছ থেকে নগদ অর্থ এনে দেয় কুলসুমা। এরপরও পারিবারিক বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকত। এরই এক পর্যায়ে ২০১৩ সালে মিলন কুলসুমা বেগমকে মারপিট করে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। তবে ছেলে ইমনকে নিজের কাছে রেখে দেয়। পরে মিলন নাহিদা বেগমকে বিয়ে করে। বিয়ের পর থেকে নানা অজুহাতে স্বামী-স্ত্রী মিলে শিশুপুত্র ইমনকে নির্যাতন করতে থাকে। গত বছরের ২৭ আগস্ট এমদাদুল হকের শিশু সন্তান ইমনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। খবর পেয়ে কুলসুমা বেগম তার স্বজনদের নিয়ে মিলনের বাড়িতে গিয়ে নিহত ইমনকে বিছানার ওপর দেখতে পায়। তার গলায় আঘাতজনিত কালো চিহ্ন দেখে তার মৃত্যু সম্পর্কে মা কুলসুমা বেগম সন্দিহান হয়ে পড়ে। পরে ঘটনাস্থল থেকে মোবাইল ফোনে বড়াইগ্রাম থানা পুলিশকে জানালে পুলিশ এসে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন করে লাশ থানায় নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ওইদিনই নিহত ইমনের মা কুলসুমা বেগম বাদী হয়ে তার স্বামী এমদাদুল হক ও ইমনের সৎ মা নাহিদা বেগমকে অভিযুক্ত করে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত করে পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট প্রদান করে। মামলাটির শুনানি শেষে বুধবার আদালতের বিচারক রেজাউল করিম অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় এমদাদুল হক ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী নাহিদা বেগমকে মৃত্যু দ-াদেশ দেন। ঘটনার পর থেকেই নিহতের বাবা এমদাদুল হক কারাগারে রয়েছেন। তবে জামিন নিয়ে পলাতক রয়েছে সৎ মা নাহিদা বেগম। মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী এ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম ও নিহতের মা কুলসুমা বেগম আদালতের এই রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। বাদীপক্ষের দাবি দ্রুত তাদের মৃত্যুদ- কার্যকর করা হোক। বগুড়ায় এক ব্যক্তির ফাঁসি ॥ স্টাফ রিপোর্টার বগুড়া থেকে জানান, শিশুকে অপহরণ করার পর মুক্তিপণ দাবি ও হত্যা মামলায় বগুড়ায় এক ব্যক্তির মৃত্যুদ-াদেশ দিয়েছে আদালত। মৃত্যুদ-প্রাপ্ত আসামির নাম আল আমিন ওরফে সোহাগ (২১)। সে বগুড়া শহরের পুরান বগুড়া এলাকার আনোয়ার হোসেনের ছেলে। বগুড়ার প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোঃ হাফিজুর রহমান বুধবার বিকেলে এই রায় ঘোষণা করেন। সাত দিনের মধ্যে উচ্চ আদালতে আপীল না করলে উচ্চ আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত ফাঁসিতে ঝুলিয়ে এই রায় কার্যকর করার কথা বলা হয়। আসামির বিরুদ্ধে মোট ৪টি মামলার বাকিগুলোর রায়ে যাবজ্জীবন কারাদ-, ১০ বছর ও ৩ বছর সশ্রম কারাদ-াদেশ দেয়া হয়।
×