ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শিল্পের আলোয় বঙ্গবন্ধু- শেষ হলো মাসব্যাপী আয়োজন

প্রকাশিত: ০৬:১২, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৬

শিল্পের আলোয় বঙ্গবন্ধু- শেষ হলো মাসব্যাপী আয়োজন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আলোচনা, কবিতা পাঠ, গীতি ও নাট্যালেখ্যর মধ্য দিয়ে শেষ হলো জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪১তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠান। ‘শিল্পের আলোয় বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক মাসব্যাপী এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। বুধবার সন্ধ্যায় একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে শেষ দিনের আয়োজনে ছিল ‘বঙ্গবন্ধু ও বিশ্ব শান্তি’ ও ‘বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বিষয়ক আলোচনা, কবিকণ্ঠে কবিতা পাঠ, গীতি আলেখ্য ‘যখন আমার পিতার নাম শেখ মুজিবুর রহমান’ এবং নাট্যালেখ্য ‘মুজিব মানে মুক্তি’। আলোচনা পর্বে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. হারুন অর রশিদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব হুমায়ুন খালিদ, কবি নির্মলেন্দু গুণ ও নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। আলোচনা শেষে সাংস্কৃতিক পর্বে পরিবেশিত হয় কবিকণ্ঠে কবিতা পাঠ। এরপর মহাকাল নাট্য সম্প্রদায় পরিবেশন করে গীতি আলেখ্য ‘যখন আমার পিতার নাম শেখ মুজিবুর রহমান’। গীতি আলেখ্যর গ্রন্থনা ও পরিকল্পনায় ছিলেন মীর জাহিদ হাসান এবং কোরিওগ্রাফিতে ছিলেন কামরুল হাসান ফেরদৌস ও আমিনুল আশরাফ। এছাড়াও মঞ্চাস্থ হয় লিয়াকত আলী লাকীর রচনা ও নির্দেশনায় নাট্যালেখ্য ‘মুজিব মানে মুক্তি’। রবীন্দ্র-নজরুল স্মরণে কবিতার আসর ॥ একজন বাঙালীকে বিশ্বের দরবারে পরিচিত করে তুলেছিলেন। আরেকজন বাঙালীদের মাথা উঁচু করে এগিয়ে যাওয়ার জয়গান শিখিয়েছেন। বাংলা এবং বাঙালীর সবক্ষেত্রেই বিশাল স্থান দখল করে আছে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম। কবিগুরুর জাতীয় সঙ্গীতে বাঙালী যেমন প্রাণের স্পন্দন খুঁজে পায়, ঠিক তেমনি নজরুলের রণসঙ্গীতে খুঁজে পায় অন্যায়ের প্রতিবাদে দীপ্ত প্রত্যয়ে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি ও প্রেরণা। এই দুই মহীরুহ স্মরণে ‘রবীন্দ্র-নজরুল সন্ধ্যা’ শীষক কবিতার আসরের আয়োজন করেছে আবৃত্তি সংগঠন আবৃত্তি মেলা। বুধবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এই আয়োজনে রবিঠাকুর ও নজরুল বন্দনায় মেতে উঠেন বাচিকশিল্পীরা। অনুষ্ঠানের শুরুতেই কবিগুরুর প্রার্থনাবিষয়ক কবিতা ‘অন্তর মম বিকশিত করো’ সমবেতভাবে পরিবেশন করেন আয়োজক সংগঠন আবৃত্তিমেলার শিল্পীরা। এরপর রবিঠাকুর ও নজরুলের কবিতার একক আবৃত্তি নিয়ে মঞ্চে আসেন শিল্পীরা। পালাক্রমে তারা কবিগুরু ও জাতীয় কবির কবিতার শৈল্পিক ও ব্যঞ্জনাময় পরিবেশনার মাধ্যমে উপভোগ্য করে তোলেন রবীন্দ্র-নজরুল বন্দনার এই কবিতার আসর। অনুষ্ঠানে রবিঠাকুরের ‘নির্ভয়’ কবিতা পরিবেশন করেন শুভ্রা নিলাঞ্জনা, ‘একটি নমস্কারে প্রভু’ পরিবেশন করেন সাজেদা বানু হেলেন, ‘উদ্বোধন, পরিবেশন করেন নাযাহ রাইদা হাকিম,‘নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ’ পরিবেশন করেন লাইলুন নাহার, ‘বাঁশি’ কবিতাটি পরিবেশন করেন সাঈদা নাঈম, ‘প্রশ্ন’ মাসুদ নূর, ‘মেঘলা দিনে, পরিবেশন করেন শ্যামলী ইসলাম, ‘হঠাৎ দেখা’ পরিবেশন করেন শফিউল হান্নান, ‘কৃপণ, আবৃত্তি করেন লাভলী ইয়াসমিন, ‘একটি দিন, আবৃত্তি করেন গোলাম নবু, ‘অপমানিত’ পরিবেশন করেন মঈন উদ্দিন, ‘দুই পাখি’ পরিবেশন করেন লিজা চৌধুরী, ‘এক গাঁয়ে, আবৃত্তি করেন আছাদুজ্জামান, ‘দায়মোচন’ পরিবেশন করেন মরিয়ম আক্তার লিপি, ‘পথের বাঁধন, আবৃত্তি করেন তানজিনা লাবণ্য, ‘দুঃসময়, শোনান মোঃ নজরুল ইসলাম, তানজিনা আফরোজ শোনান ‘পত্রলেখা, নাহরীন তানিয়া পরিবেশন করেন ‘অনন্ত প্রেম’। এতে নজরুলের ‘এক বৃন্তে দুটি কুসুম’, কবিতা একক কণ্ঠে তোলেন নাঈম আহমেদ, জাতীয় কবির কবিতা ‘হে সর্ব শক্তিমান’ পরিবেশন করেন সমা খান, ‘বিদায় মাভৈ:’ পরিবেশন করেন তুনাজ্জিনা দেওয়ান শিফা, জাতীয় কবির ‘বাংলাদেশ’ কবিতাটি শোনান মোঃ জুনাইদ আহমেদ, ‘নারী’ পরিবেশন করেন সোনিয়া আক্তার, ‘ক্ষমা করো হযরত’ কণ্ঠে তোলেন মোঃ রায়হান আহমেদ, ‘বাসন্তী’ কবিতাটি পরিবেশন করেন রায়হান আলী রনি, শিল্পী মাহমুদা পরিবেশন করেন জাতীয় কবির ‘কার বাঁশি বাজিল, সালেহ আহমেদ পরিবেশন করেন ‘জাতের বজ্জাতি, আফরোজা আক্তার আঁখি পরিবেশন করেন ‘আগুনের ফুলকি ছোটে, তামান্না আক্তার হ্যাপি শোনান ‘ফাল্গুনি, সিরাজুর রহমান আবৃত্তি করেন ‘শায়ক বেঁধা পাখি’ ও জাতীয় কবির ‘অভিভাষণ’ কবিতাটি আবৃত্তি করেন মোঃ শরীফুল ইসলাম খান। অনুষ্ঠানের বিশেষ আকর্ষণ আবৃত্তিশিল্পী মাহিদুল ইসলাম বিশ্বকবি ও জাতীয় কবি দুই কবির কবিতা পরিবেশন করে রবীন্দ্র ও নজরুল অনুরাগীদের মুগ্ধ করেন। তিনি রবিঠাকুরের তিনটি ও নজরুলের একটি কবিতা আবৃত্তি করেন। মাহিদুল ইসলাম পরিবেশন করেন কবিগুরুর ‘পায়ে চলার পথ, আজি ঝড়ের রাতে’ ও ‘পরিচয়’। মাহিদুল ইসলামের কণ্ঠে কাজী নজরুলের ‘বিদ্রোহী’ কবিতাটির শৈল্পিক পরিবেশনার মধ্য দিয়েই শেষ হয় ‘রবীন্দ্র-নজরুল সন্ধ্যা’ শীর্ষক এই কবিতার আসর। অনুষ্ঠানের আবহকণ্ঠে ছিলেন দেবাশিস কায়সার। বাঁশিতে ছিলেন উত্তম চক্রবর্তী। কী বোর্ডে ছিলেন প্রবাল বর্মন। পরিকল্পনা, গ্রন্থনা ও নির্দেশনায় ছিলেন মাহিদুল ইসলাম।
×