ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কিরগিজস্তানের জালে বাংলাদেশের ১০ গোল

প্রকাশিত: ০৬:০০, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৬

কিরগিজস্তানের জালে বাংলাদেশের ১০ গোল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সোনায় মোড়ানো সাফল্য পেয়ে চলেছে বাংলাদেশ অনুর্ধ ১৬ মহিলা ফুটবল দল। ঢাকায় চলমান এএফসি অনুর্ধ ১৬ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপ বাছাইপর্বে ‘সি’ গ্রুপ টানা তিন ম্যাচে দাপুটে জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশের কিশোরীরা। বুধবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ অনুর্ধ ১৬ মহিলা দল ১০-০ গোলের বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করে কিরগিজস্তান অনুর্ধ ১৬ মহিলা দলকে। যা এবারের আসরে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ দলীয় গোলের রেকর্ড। এর আগে বাংলাদেশের মেয়েরা নিজেদের প্রথম ম্যাচে শক্তিশালী ইরানকে ৩-০ ও সিঙ্গাপুরকে ৫-০ গোলে পরাজিত করে। ম্যাচের প্রথমার্ধে এক হালি গোল আদায় করে বাংলাদেশের মেয়েরা। বিরতির পর আরও আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে কোচ গোলাম রাব্বানী ছোটনের শিষ্যরা। শেষ ৪৫ মিনিটে কিরগিজদের কাছ থেকে হাফডজন গোল আদায় করে নেয় লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। সিঙ্গাপুরকে পাঁচ গোলে হারানোর ম্যাচে হ্যাটট্রিক করতে না পারার আপসোস ছিল বাংলাদেশ অধিনায়ক কৃষ্ণা রানীর। তবে কিরগিজদের বিপক্ষে সেই আপসোসে পুড়তে হয়নি তাকে। সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে কৃষ্ণ করেছেন দুর্দান্ত হ্যাটট্রিক। এছাড়া জোড়া গোল করেছেন দু’জন। এরা হলেন- ডিফেন্ডার সামছুন্নাহার ও ফরোয়ার্ড অনুচিং মগিনি। একটি করে গোল করেন নারগিস খাতুন, মারজিয়া ও মারিয়া। ম্যাচের শুরু থেকেই একতরফা প্রাধান্য বিস্তার করে খেলতে থাকে বাংলাদেশের মেয়েরা। তবে প্রথম ২০ মিনিটে গোলের দেখা পায়নি ছোটনের শিষ্যরা। ২১ মিনিটে গোলবন্যার সূচনা করে অনুচিং মগিনি। ডি বক্সের মধ্যে জটলা থেকে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি। ৩০ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে বাংলাদেশ। ডানদিক থেকে আসা ক্রস কিরগিজস্তানের ডিফেন্ডার বিপদমুক্ত করতে না পারলে ফাঁকায় বল পেয়ে যান মারজিয়া। বাঁ পায়ের জোরালো শটে বল জালে জড়িয়ে দেন এই ফরোয়ার্ড। ৪২ মিনিটে অধিনায়ক কৃষ্ণা রানী ও প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে কর্নার থেকে হেডে গোল করেন অনুচিং। বিরতির পর শুরুতেই কৃষ্ণা দৃষ্টিনন্দন গোল করে হতাশায় ডোবান অতিথিদের। অসাধারণ বাঁকানো শটে লক্ষ্যভেদ করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ৬৮ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করেন সামছুন্নাহার। ৭৫ মিনিটে ডিফেন্ডার নার্গিস করেন চোখ ধাঁধান গোল। প্রায় ৩৫ গজ দূর থেকে নেয়া তার ফ্রিকিক কিরগিজস্তানের গোলরক্ষককে কোন সুযোগ না দিয়ে জালে আশ্রয় নেয়। ৮০ মিনিটে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন কৃষ্ণা। বক্সের মধ্য থেকে জোরালো শটে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি। ৮৪ ও ৮৫ মিনিটে আরও দুই গোল আদায় করে বাংলাদেশ। গোল করেন যথাক্রমে মারিয়া ও সামছুন্নাহার। ম্যাচের শেষ মুহূর্তে আরও একটি গোল করে স্বাগতিকরা। তবে অফসাইডের কারণে সেটা বাতিল করেন রেফারি। বাংলাদেশের পরের ম্যাচটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ৩ সেপ্টেম্বর পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে থাকা চাইনিজ তাইপের বিপক্ষে খেলবে গোলাম রব্বানি ছোটনের শিষ্যরা। ওই ম্যাচ জিতলেই চূড়ান্ত পর্বে খেলার পথ পরিষ্কার হয়ে যাবে কষ্ণা রানীর দলের। সেক্ষেত্রে শেষ ম্যাচে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষেও জয় পেতে হবে। বাংলার মেয়েরা যে ছন্দে আছে তাতে আমিরাতকেও গোলবন্যায় ভাসাল অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। তবে বাংলাদেশ কোচ ছোটনের চিন্তা চেতনায় এখন শুধুই চাইনিজ তাইপের বিপক্ষে ম্যাচ। ম্যাচ শেষে এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের পরের প্রতিপক্ষ চাইনিজ তাইপে। যারা অনেক শক্তিশালী দল। ম্যাচটির আগে আমরা দু’দিন বিশ্রাম পাব। আশা করি মেয়েরা ওই ম্যাচেও ভাল খেলবে।’ মেয়েদের দুরন্ত পারফর্মেন্স প্রসঙ্গে ছোটন বলেন, ‘দলটা গত দুই বছর একসঙ্গে খেলছে। প্রচুর পরিশ্রম করছে তারা। এটাই ওদের সাফল্যের রহস্য।’ বর্তমানে তিন ম্যাচ শেষে সবই জয় পেয়েছে বাংলাদেশ ও চাইনিজ তাইপে। পূর্ণ ৯ পয়েন্ট ভা-ারে দল দুটির। তবে গোলগড়ে এগিয়ে থেকে এক নম্বরে তাইপে আর দুইয়ে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচে তাইপে করেছে ২১ গোল, আর হজম করেছে ১। আর বাংলাদেশ তিন ম্যাচে প্রতিপক্ষের জালে বল পাঠিয়েছে ১৮ বার। গোল হজম করেনি একটিও। অর্থাৎ দুই গোলের ব্যবধানে এগিয়ে চাইনিজ তাইপে। এর আগে নিজ নিজ ম্যাচে জয় পায় চাইনিজ তাইপে ও ইরান। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রথম ম্যাচে সিঙ্গাপুরকে ৯-০ গোলে বিধ্বস্ত করে আসরের অন্যতম শক্তিশালী দল চাইনিজ তাইপে। দ্বিতীয় ম্যাচে ইরান ৫-০ গোলে হারায় আরব আমিরাতকে।
×