ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

রেল প্রকল্পে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেতে তদ্বির

প্রকাশিত: ০৪:৩৯, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৬

রেল প্রকল্পে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেতে তদ্বির

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ রেলে অভিজ্ঞতার দোহাই দিয়ে পদ্মাসেতুসহ রেলের বিভিন্ন প্রকল্পে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন এক কর্মকর্তা। তবে রেলের চলমান মেগা প্রকল্পগুলো পরিচালনায় দক্ষ অনেক কর্মকর্তা জ্যেষ্ঠতা তালিকায় রয়েছে। অনৈতিকভাবে চুক্তিভিত্তিক এ নিয়োগ দেয়া হলে জ্যেষ্ঠতার তালিকা অনুযায়ী ৩০ কর্মকর্তার পদোন্নতি পিছিয়ে যাবে কমপক্ষে দু’বছর। এছাড়া জ্যেষ্ঠতার তালিকায়ও কর্মকর্তাকে দ্রুত পদোন্নতির ক্ষেত্রে কারসাজির প্রমাণ মিলেছে। এদিকে ওই পাবলিক সার্ভিস কমিশনের বিসিএস ক্যাডার তালিকায় প্রকৌশল বিভাগের ক্যাডার আইডি অনুযায়ী জন্মতারিখের ভিত্তিতে রেল ভবনে কর্মরত প্রকল্প পরিচালক ও প্রকৌশলী সাগর কৃষ্ণ চক্রবর্তী আগামী ৩ সেপ্টেম্বর চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের কথা থাকলেও অবসরে যাচ্ছেন ৩১ আগস্ট। দুই দিন আগে অবসরে যাওয়ার পেছনে মূল কারণ হচ্ছে দুদিন সরকারী ছুটি। প্রশ্ন উঠেছে, অধস্তন অনেক অভিজ্ঞ কর্মকর্তা থাকার পরও অবসরে যাওয়ার অপেক্ষায় এ কর্মকর্তা চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের আবেদন করেছেন জন প্রশাসন মন্ত্রণালয়ে। তবে এ ধরনের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ আগে দেয়া হয়নি বলে নিশ্চিত করেছেন ডিজির দফতরের এক কর্মকর্তা। অভিযোগ উঠেছে, এ আবেদনে রেলমন্ত্রী ও রেলের ডিজি আমজাদ হোসেন সুপারিশ করেছেন। সুপারিশে এ কর্মকর্তার অভিজ্ঞতার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে এক্ষেত্রেও মন্ত্রণালয়ের কয়েক অসাধু কর্মকর্তা ওই চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাইয়ে দিতে আর্থিক সুবিধা নিয়েছেন বলে রেলের কয়েক কর্মকর্তা মৌখিকভাবে জানিয়েছেন। চুক্তিভিত্তিক এ নিয়োগের আবেদন বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে রয়েছে। উল্লেখ্য, মেগা প্রকল্প পরিচালনার মতো অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কর্মকর্তা রেলওয়েতে থাকলে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের কোন প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করেছেন কয়েক কর্মকর্তা, যারা পদোন্নতির অপেক্ষায় রয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে, রেলমন্ত্রী মজিবুল হক ও রেলের ডিজি আমজাদ হোসেনকে রবিবার কর্ম সময়ে কয়েক দফায় যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও মোবাইল রিসিভ করেননি। ঢাকার রেল ভবনে থাকা ডিজির দফতর সূত্রে জানা গেছে, রেলের বিভিন্ন মেগা প্রকল্প পরিচালনার অভিজ্ঞতা রয়েছে অনেক কর্মকর্তার। যারা সাগর কৃষ্ণ চক্রবর্তী অবসরে যাওয়ার পর পদোন্নতি পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন। রেলের কয়েকটি মেগা প্রকল্পের দায়িত্বপালন করেছেন রেল ভবনে কর্মরত মহাব্যবস্থাপক ও প্রকল্প পরিচালক (কক্সবাজার-দোহাজারি প্রকল্প) প্রকৌশলী মোজাম্মেল হক, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অবকাঠামো) প্রকৌশলী রফিকুল আলম, পূর্বাঞ্চলীয় জিএম প্রকৌশলী আবদুল হাই, দ্বিতীয় ভৈরব সেতু ও দ্বিতীয় তিতাস সেতুর প্রকল্প পরিচালক হিসাবে এখনও চলতি দায়িত্বে কাজ করছেন। লাকসাম-চিনকি আস্তানা ডাবল লাইন প্রকল্পের পরিচালক হিসেবে মহাব্যবস্থাপক ও প্রকৌশলী খায়রুল আলম এবং কয়েকটি ছোট প্রকল্পের অভিজ্ঞতা নিয়ে কাজ করেছেন প্রকৌশলী মোঃ মজিবুর রহমান। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, রেলের ইতিহাসে অনেক অভিজ্ঞতা থাকার পরও গত দশ বছরে কোন চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের নজির নেই। তবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের জন্য রেলের ডিজি রেজাউল করিম, ডিজি মোস্তাফিজুর রহমান ও ডিজি টি আই চৌধুরী আবেদন করেও নিয়োগ পাননি। এছাড়াও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের আবেদন দিয়েও লাকসাম-আখাউড়া ডাবল লাইন প্রকল্পের জিএম প্রজেক্ট প্রকৌশলী লিয়াকত আলী সর্বশেষ এডিজি (মার্কেটিং এ্যান্ড কর্পোরেট প্লানিং) পদ থেকে অবসরে গেছেন। একই পদমর্যাদা থেকে মকবুল আহমেদ গত ১৪ জুন অবসরে গেছেন। তিনিও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের জন্য আবেদন করে নিয়োগ পেতে ব্যর্থ হন।
×