ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দেশী গরুর দাম বেশি

জমে উঠছে পশুহাট

প্রকাশিত: ০৪:৩৫, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৬

জমে উঠছে পশুহাট

মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী ॥ কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে জমে উঠতে শুরু করেছে রাজশাহীর পশুহাট। সীমান্তে ভারতীয় গরু আমদানির পাশাপাশি এবার হাটগুলোতে দেশী গরুর আমদানি ও চাহিদাও বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে দেশী গরুর দামও। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সীমান্তে কড়াকড়ি ও পথ খরচ বেড়ে যাওয়ায় ভারত থেকে গরু-মহিষ আমদানিতে আগ্রহ হারিয়েছেন তারা। ভারতে ব্যবসায়ী বা পালনকারীর কাছ থেকে একটি গরু কেনার পর তা বাংলাদেশের হাটে পৌঁছাতে পথ খরচ হয়ে থাকে ২১ থেকে ২২ হাজার টাকা। তবে বিজিবি বলছে, সীমান্ত হত্যা বন্ধ আর দেশের গবাদিপশুর খামার রক্ষায় ভারত থেকে গরু আমদানি সহনীয় পর্যায়ে রাখা হচ্ছে। তারপরেও গরুর আমদানি বাড়ছে। এদিকে ঈদ সামনে রেখে এখন ক্রমেই জমে উঠছে উত্তরাঞ্চলের অন্যতম বড় পশুর হাট রাজশাহী সিটি হাট। সপ্তাহে দুইদিন হাটবার হলেও কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে সেখানে প্রতিদিন গরু কেনাবেচা হচ্ছে। দেশী গরুর পাশাপাশি হাটে আসছে ভারত থেকে আমদানি করা গরুও। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে পাইকাররাও আসছেন এ হাটে। দেশী গরুর চাহিদা বেশি হলেও দাম চড়া বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বুধবার রাজশাহীর সিটি হাটে গিয়ে দেখা গেছে, হাটজুড়ে গরুর আমদানি। পাইকারি গরু কিনতে আসা কুমিল্লার ব্যবসায়ী আজগর আলী জানান, প্রয়োজনের তুলনায় ভারতীয় গরু হাটে আমদানি কম। দেশী গরুর আমদানি বেশি হলেও দাম বেশি। তার মতে, গত বছরের তুলনায় এবার শুরুতেই গরু প্রতি ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। রাজশাহী জেলা পশু সম্পদ কর্মকর্তা মহির উদ্দিন বলেন, এবারের কোরবানি ঈদে বিক্রির জন্য জেলায় প্রায় ৫০ হাজার দেশী গরু পালন করেছেন খামারীরা। দামও সহনীয় পর্যায়ের মধ্যে রয়েছে। ফলে কোরবানির চাহিদা মেটাতে বিদেশী গরুর উপর নির্ভর করতে হবে না বলে জানান তিনি। পাবনায় খামারিদের মুখে হাসি নিজস্ব সংবাদদাতা পাবনা থেকে জানান, পাবনা-সিরাজগঞ্জের পশুর হাটগুলোতে প্রচুর দেশী গরু আমদানি হচ্ছে। ভারত সরকার গরু রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় ভারতীয় গরু আমদানি হচ্ছে না। এতে দেশী গরুর দাম ও চাহিদা বেড়েছে। ফলে গোখামারী ও চাষীদের মুখে হাসি ফুটেছে। এদিকে সীমান্ত পথে নেপাল, ভুটান ও মিয়ানমার থেকে গরু-মহিষ আমদানির খবরে তাদের মধ্যে কিছুটা হতাশা কাজ করছে। তবে এবার কোরবানির ঈদে গরু বিক্রি করে খামারী ও চাষীরা লাভবান হবে বলে অনেকেই আশা প্রকাশ করেছেন। গবাদিপশু বিশেষ করে গরু ব্যবসার সাথে জড়িত কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, বেড়ার সিএ্যান্ডবি চতুরহাট, সাঁথিয়ার ধুলাউড়িহাট, আতাইকুলার পুষ্পপাড়াহাট, দাসুড়িয়াহাট, চাটমোহরের অমৃতকু-া, শাহজাদপুরের তালগাছি, উল্লাপাড়ার গোয়ালিয়া হাট, গ্যাসের হাট, তারাশ চলনবিল এলাকার নওগাঁহাট, চৌহালীর এনায়েতপুর হাট ও বেলকুচির সমেশপুর পশুরহাটে দেশী জাতের প্রচুর গরু আমদানি হচ্ছে। পশুরহাটগুলোতে ভারতীয় গরু-মহিষের আমদানি নেই। নেপাল ও ভুটানের গরু-মহিষ আমদানি হচ্ছে, তবে পরিমাণে খুবই কম। বরিশালে গরু সংগ্রহ শুরু স্টাফ রিপোর্টার বরিশাল থেকে জানান, বেপারীরা বিভিন্ন এলাকা থেকে গরু সংগ্রহ করে স্থানীয়ভাবে মজুদ করা শুরু করেছেন। গরু ব্যবসায়ীরা জানান, দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্নস্থানে গড়ে ওঠা প্রায় ৫ সহস্রাধিক ক্ষুদ্র ও মাঝারি খামার থেকে এবার কমপক্ষে একলাখ গরু স্থানীয় হাট-বাজারে বেচাকেনা হবে। ইতোমধ্যে খামারি ও পাইকারদের আগাম অর্থসহ দাদন দিয়ে রেখেছেন দক্ষিণাঞ্চলের গরু ব্যবসায়ীরা। বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্নস্থানে গড়ে ওঠা ক্ষুদ্র ও মাঝারি পর্যায়ের খামার থেকেও ভালমানের গরু এবারের কোরবানির বাজারে আসবে। কালকিনিতে পশু কম নিজস্ব সংবাদদাতা কালকিনি, মাদারীপুর থেকে জানান, কালকিনি উপজেলা সদরসহ সবকটি হাটে কোরবানির পশু বেচাকেনা এই মুহূর্তে বেশ জমে উঠেছে। পশুর হাটগুলোতে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। ক্রেতাদের চাহিদার তুলনায় পশু কম আমদানি হচ্ছে হাটগুলোতে। ফলে গত বছরের তুলনায় এ বছর পশুর দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতা পশু কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন। তবে ক্রেতাদের মাঝে এখন শুধু একটাই আতঙ্ক অল্প দিনে মোটাতাজাকরণের জন্য পশুকে স্টেরয়েডের ব্যবহার করা হচ্ছে। পশু ব্যবসায়ীরা অধিক লাভের আশায় ট্যাবলেট ও ইনজেকশন ব্যবহার করছেন বলে ব্যাপক অভিযোগ উঠেছে।
×