ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পরিবেশ দূষণের আশঙ্কা

ঢাবির খেলার মাঠে গাছ কেটে সিটি কর্পোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা

প্রকাশিত: ০৪:৩০, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৬

ঢাবির খেলার মাঠে গাছ কেটে সিটি কর্পোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা

সোহেল তানভীর ॥ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষাকেন্দ্রের খেলার মাঠের এক পাশে ময়লা রাখার জায়গা করা হচ্ছে। এজন্য নিম, আম, কাঁঠাল, পেয়ারাসহ আটটি বড় গাছ কেটে ফেলা হবে! এসব ভেষজ ও ফলদ গাছ কেটে নির্মাণ করা হবে বর্জ্য রাখার জায়গা। শারীরিক শিক্ষাকেন্দ্রের কার্যালয় ও জিমনেশিয়ামের দক্ষিণ পাশে বর্জ্য রাখার ওই জায়গাটি নির্মাণ করছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। সিটি কর্পোরেশন বর্জ্য রাখার এই জায়গার নাম দিয়েছে ‘সেকেন্ডারি ট্রান্সফার প্ল্যান্ট’। সেকেন্ডারি ট্রান্সফার প্ল্যান্ট নির্মাণের জন্য ৬০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৪০ ফুট প্রস্থের জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গাছ কেটে ময়লা রাখার প্ল্যান্ট নির্মাণ কিছুতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। তাছাড়া খুব কাছাকাছি হওয়ায় প্ল্যান্টের কারণে শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের পরিবেশ দূষিত হবে। সিটি কর্পোরেশনের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্জ্য সারাদিন এ জায়গায় থাকবে এবং রাতে অন্য গাড়ি এসে তুলে নিয়ে যাবে। সিটি কর্পোরেশনের দাবি আধুনিক পদ্ধতিতে ওই স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে পরিবেশের ক্ষতি হবে না।সরেজমিনে দেখা যায় নির্ধারিত জায়গাটি বাঁশের বেড়া দিয়ে আলাদা করা হয়েছে। বাঁশের বেড়ার মধ্যে রয়েছে নিম গাছ, আম গাছ, কাঁঠাল গাছ ও একাধিক পেয়ারা গাছ। বর্জ্য ফেলার নির্ধারিত ওই জায়গার সামনে শারীরিক শিক্ষাকেন্দ্রের মাঠের গ্যালারি। গ্যালারির ওপাশেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগ এবং একপাশে সুইমিংপুল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শারীরিক শিক্ষাকেন্দ্রের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী জানিয়েছেন, এখানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা, ব্যয়াম, দৌড়ানো, উন্মুক্ত বাতাস নেয়া ও সুইমিংপুলে সাঁতার কাটতে আসেন। নির্ধারিত ওই এলাকায় বর্জ্য ফেললে তার প্রভাব আশপাশের পরিবেশে পড়বে। এখানে যতই আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হোক গন্ধ ছড়াবেই। এ রকম একটা সুন্দর ও মনোরম পরিবেশে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ভাল হবে না। তারা আরও জানান, জায়গাটি পরিবর্তন করে যদি আরও দক্ষিণ পাশের কোনায় নেয়া হয় তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সুন্দর ও মনোরম পরিবেশটির সৌন্দর্য অক্ষুন্ন থাকবে। মাঠ ব্যবহারকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক ছাত্র জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ময়লা কোথাও না কোথাও ফেলতে হবে । কিন্তু তাই বলে সবুজ শ্যামল এই খেলার মাঠে? এখানে ময়লা ফেললে এখন যে সুন্দর ও মনোরম পরিবেশ আছে সেটি আর থাকবে না। এ মাঠে এসে একটু সতেজ বায়ু নেয়া যায়। যদি বর্জ্য ফেলা হয় তাহলে এই সতেজ নিঃশ্বাস আর নেয়া যাবে না। এ ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষাকেন্দ্রের পরিচালক মোঃ শওকতুর রহমান বলেন, শারীরিক শিক্ষাকেন্দ্রের মাঠের একপাশে সেকেন্ডারি ট্রান্সফার প্ল্যান্ট করবে সিটি কর্পোরেশন। পরিবেশের ক্ষতি হবে কিনা জানতে চাইলে শওকতুর রহমান জানান, সিটি কর্পোরেশন বলেছে আধুনিক পদ্ধতিতে করা হবে। এতে পরিবেশের ক্ষতি হবে না। জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক দৈনিক জনকণ্ঠকে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ দূষণমুক্ত রাখার জন্যই মূলত ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এই উদ্যোগ হাতে নেয়া। পরিবেশের ক্ষতি হোক এমনটি আমরা করব না।
×