ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা কমেছে

প্রকাশিত: ০৪:০৫, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৬

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা কমেছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্যাংক ৭৭২ কোটি ৫১ লাখ টাকা পরিচালন মুনাফা করেছে, যা আগের অর্থবছরে হয়েছিল ১ হাজার ৩৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা। সে হিসেবে গত অর্থবছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা কমেছে ২৬৬ কোটি ২৯ লাখ টাকা। আর ২০১৩-১৪ অর্থবছরে পরিচালন মুনাফা হয়েছিল ২ হাজার ৩৮ কোটি টাকা। এতে করে প্রতিবছরই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা অব্যাহতভাবে কমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত অর্থবছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ক্ষতি দাঁড়িয়েছে ৬১৯ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। এই ক্ষতি ২০১৪-১৫ অর্থবছরে অনেক বেশি ছিল। সে সময় ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল ৩ হাজার ৬৬১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। সে হিসাবে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে মুদ্রা বিনিময় হারের ক্ষতি কমেছে ৩ হাজার ৪২ কোটি ২৭ লাখ টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা জনকণ্ঠকে বলেন, গত অর্থবছরে সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ অনেক কম নিয়েছে। এতে ঋণ দিয়ে যে পরিমাণের মুনাফা করার কথা ছিল তা হয়নি। তাছাড়া ব্যাংকগুলোর কাছে বিনিয়োগযোগ্য তহবিল উদ্বৃত্ত ছিল, সে কারণে তারা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিশেষ তহবিল সহায়তা বা রেপো সহায়তা গ্রহণ করেনি। সুতরাং এ খাত থেকেও সুদ আয় অনেক কমেছে। এতে এবার বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা কিছুটা কম হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মতে, বাংলাদেশ ব্যাংক অন্যান্য বাণিজ্যিক ব্যাংকের মতো কোন প্রতিষ্ঠান নয়। তারপরও সরকারের ব্যাংক হিসেবে কিছু আয়-ব্যয় হয়ে থাকে। এতে করে পরিচালন মুনাফা কখনও বাড়ে আবার কখনও কমে। আর নিট মুনাফা হিসাব করা হয় রিজার্ভের মুনাফা বা লোকসান ধরে। তবে চূড়ান্ত হিসাবে রিজার্ভের হিসাব থাকে না। ফলে সরকারকে মুনাফা ও কর্মকর্তাদের বোনাস দেয়া সম্ভব হয়। চূড়ান্ত হিসাবে রিজার্ভের হিসাব থাকলে মুনাফা বা বোনাস দেয়া সম্ভব হতো না। বৈদেশিক মুদ্রায় সংরক্ষণে ক্ষতি কমে আসায় এক বছরের ব্যবধানে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিট মুনাফা করতে পেরেছে। আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিট মুনাফা হয়েছে ১৫৩ কোটি টাকা, যা এর আগের অর্থবছরে নিট লোকসান হয়েছিল ২ হাজার ৬২২ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। যদিও এর আগে অধিকাংশ সময়েই কেন্দ্রীয় ব্যাংক বড় অঙ্কের নিট মুনাফা করেছে। গত সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ২০১৫-১৬ অর্থবছরের ব্যালান্স শিট (বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন) চূড়ান্ত অনুমোদন করে। এতে গত ফেব্রুয়ারিতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে চুরি হওয়া ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পৃথক সম্পদ হিসেবে ‘প্রটেস্টেড বিল’ হিসেবে দেখানো হয়েছে। যে হারানো অর্থ ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি, তা আন্তর্জাতিক প্রচলন অনুসারে এ খাতে দেখানো হয়ে থাকে। এ খাতে রাখার সুবিধা হলো- কেন্দ্রীয় ব্যাংককে এই অর্থের বিপরীতে কোন নিরাপত্তা সঞ্চিতি তথা প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হচ্ছে না।
×