ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

’৭১ সালকে বলে গণ্ডগোলের বছর!

প্রকাশিত: ০৩:৫৭, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৬

’৭১ সালকে বলে গণ্ডগোলের বছর!

গুজবে কান দিবেন না এ আপ্তবাক্য এখন আর কেউ শোনে না। গুজবে মানুষ বিশ্বাস করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গুজব খুবই অমার্জনীয় অপরাধ। গুজব মহামারীর মতো দ্রুত বিস্তার লাভ করে। এ রকম একটি গুজব রটনার ফলে মানুষের জানমালের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। আর গুজবটি রটানো হয়েছিল ২০১৩ সালে ফেব্রুয়ারিতে। ওই সময় রটনাকারী মসজিদের মাইকে গুজব রটায় যে, যুদ্ধাপরাধী সাঈদীকে চাঁদে দেখা গেছে। এই গুজব শুনে ধর্মান্ধ মানুষ ঐ এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর অত্যাচার, নির্যাতন ও লুটপাট শুরু করে। এই যে সাঈদীকে চাঁদে দেখা গেছে বলে যারা গুজব রটাল এবং এর ফলে যে লঙ্কাকা- ঘটে গেল তা কি কোন সভ্যসমাজ মেনে নেবে? কিন্তু ঐ সময় যদি গুজবে কান না দিয়ে সত্য-মিথ্যা যাচাই করা হতো তাহলে সংখ্যালঘুদের এভাবে জীবন দিতে হতো না। যারা এ অপকর্ম করেছে এরা সমাজ ও মানবতার শত্রু। একইভাবে অপপ্রচার আরও একটি জঘন্য অপরাধ। অপপ্রচার আর গুজব প্রায় সমার্থক শব্দ। গুজব রটনাকারী আর অপপ্রচারকারীর চরিত্র ও বৈশিষ্ট্য একই। অপপ্রচার আরও ভয়ঙ্কর জিনিস। যা অপরাধীদের একটি মোক্ষম অস্ত্র। অপরাধীরা নিজেদের কুকর্মকে আড়াল করার জন্য নিরন্তর অপপ্রচার চালিয়ে যায়। এভাবে স্বাধীনতাবিরোধীরা তাদের জঘন্য অপরাধকে আড়াল করার জন্য মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করে অপপ্রচার করে যাচ্ছে। এসব স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকাররা বর্তমান প্রজন্মের কাছে অপপ্রচার করে যে, ’৭১ সালে এখানে কোন মুক্তিযুদ্ধ হয়নি। ’৭১-র ঘাতকরা ’৭১ সালকে কখনও বলে গ-গোলের বছর আবার কখনও বলে হিন্দুস্তান-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধের বছর। এভাবে ঘাতকরা বর্তমান প্রজন্মের কাছে জাতির ইতিহাসকে বিকৃত করে অপপ্রচার করে। যারা মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি তারা রাজাকার বোঝে না, আলবদর বোঝে না, মুসলিম লীগ, শান্তি কমিটি এসব কোন কিছুই ভালভাবে বোঝে না। ’৭৫ উত্তর দীর্ঘ ২১ বছর তরুণ প্রজন্ম এই শব্দই শোনেনি। এভাবে স্বাধীনতাবিরোধী ’৭১-এর ঘাতকরা ধর্মকে ব্যবহার করে ইনিয়ে বিনিয়ে বর্তমান প্রজন্মের কাছে জাতির ইতিহাস বিকৃত করে অপপ্রচার করছে। যারা জাতির ইতিহাসের অপপ্রচার করছে তারা নিঃসন্দেহে দেশদ্রোহী, দেশের শত্রু, জাতির শত্রু। দেশদ্রোহের অপরাধে এদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তি বিধান করতে হবে। এই সব দেশদ্রোহী জাতির শত্রুদের ব্যাপারে আইনী ব্যবস্থা না নিলে এরা বেপরোয়া হয়ে উঠবে। দুঃখজনক হলো, আমার নিজ এলাকায় জাতির ইতিহাস অপপ্রচারকারী ’৭১-এর ঘাতকদের ছেলেসন্তান ও তাদের আত্মীয়স্বজনরা দাপটের সঙ্গে গাড়ি হাঁকিয়ে বেড়ায়। বিশাল-বিশাল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দাপটের সঙ্গে ব্যবসা করছে। তাদের বাড়িতে প্রায়ই কি সব অনুষ্ঠান লেগেই থাকে। সারাদিন প্রচুর লোক সমাগম হয় খাওয়া-দাওয়া চলে। এলাকার মানুষ ঘাতকের ছেলে-সন্তানকে খুব সমীহ করে চলে। এসব দেখলে মনে হয় মুক্তিযুদ্ধ যেন ওদের জন্য হয়েছিল। এখনই সঠিক সময় এদের কঠোর হস্তে দমন করার। তা না হলে জাতির বিরল গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস বিপন্ন হতে পারে। গীর্জাপাড়া, মৌলবীবাজার থেকে
×