ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির

কনের বিরুদ্ধে কুৎসা!

প্রকাশিত: ০৩:৫৫, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৬

কনের বিরুদ্ধে কুৎসা!

পন্ডশ্রম কবিতাটির কথা মনে পড়ছে। কাক মানুষের কান নিয়ে যেতে পারে না। এখন যদি গুজব রটে কাক একজন লোকের কান নিয়ে গেছে আর সবাই আসল সত্য যাচাই না করে কাকের পিছনে ছুটছে। শেষে দেখা যায় সবই মিথ্যা। ঠিক গুজব ও অপপ্রচার হচ্ছে ঠিক এই রকম। আমরা অনেকেই কোন কিছু না মেনে বা সত্য উদঘাটন না করে গুজবে বিশ্বাস করি। অথচ এই গুজব ও অপপ্রচার ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে কী ভয়ঙ্কর প্রভাবই না ফেলে। অপপ্রচার হচ্ছে মিথ্যার বেসাতি। মিথ্যার সাতকাহন। মানুষের ব্যক্তিগত জীবনে কত না ঘটনা ঘটে। বিয়ে বলুন, সংসার বলুন সব ক্ষেত্রে কোন কিছু নিয়ে গুজব রটিয়ে দিলে কিছু মানুষ তা নিয়ে নোংরা খেলায় মত্ত থাকে। ব্যক্তি জীবনে আমি বহু মানুষকে এই পরিস্থিতির শিকার হতে দেখেছি। কারোর ছেলের বা মেয়ের বিয়ের কথাবার্তা চলার সময় খোঁজ খবর নিতে গেলে দেখবেন কিছু লোক ছেলে মেয়ে সম্পর্কে নানা কুৎসা রটনা অপপ্রচার করে। অনেক সময় দেখেছি এই অপপ্রচারের জন্য বিয়ে ভেঙ্গে গেছে। আমি নিজেও সংসার জীবনে অপপ্রচারের স্বীকার হয়েছি। এটা ব্যক্তি জীবনের কথা। সামাজিক জীবনেও অনেক মানুষ অপপ্রচারের শিকার হন। সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ, সমাজ কর্মী, চিত্র তারকাসহ অনেকেই অপপ্রচারের শিকার হচ্ছেন। রাজনীতি ও রাষ্ট্রীয় জীবনে অপপ্রচার মারাত্মক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। সেই ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় এই দেশের স্বাধীনতা বিরোধী চক্র মুক্তিযুদ্ধকে মুসলমানের বিরুদ্ধে মুসলমানের যুদ্ধ বলে অনেক গুজব রটিয়ে ছিল। কিন্তু বাংলার মুক্তিকামী মানুষ সেই সময় এই অপপ্রচারকে প্রতিরোধ করেছিল। স্বাধীনতা যুদ্ধের পরে বঙ্গবন্ধু শাসন আমলে আমরা শিশু বয়স। তখনকার কোন কিছু মনে নেই। কিন্তু যখন বড় হয়েছি তখন সেই সময়ের রাষ্ট্র পরিচালনা নিয়ে নানা অপপ্রচার আমাদেরকে শুনতে হয়েছে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আমাদের সেই অপপ্রচারকে বিশ্বাস করতে দেয়নি। যুদ্ধ বিধবস্ত একটি দেশকে পুনর্গঠন করতে কত কঠিন ব্যাপার ছিল তা বোঝতে পেরেছি বলে সেই সব অপপ্রচারকে বিশ্বাস করিনি। পরবর্তীকালে এই দেশের সামরিক সরকার মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ড নিয়ে নানা অপপ্রচার চালিয়ে ছিল। সেই অপপ্রচারকে স্বার্থ সিদ্ধি করতে মুক্তিযুদ্ধের অনেক দলিল ধ্বংস করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অনেক কটুক্তি বা অপপ্রচার করা হয়েছে কিন্তু সত্য আড়ালে থাকে না। আজ সব সত্য উম্মোচিত হয়েছে। পদ্মা সেতু নিয়ে বিশ্ব ব্যাংকের নানা কেচ্ছা কাহিনী সব কিছু অপপ্রচার। হয়ত সাময়িক অসুবিধা হয়েছে। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অদম্য ইচ্ছাকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারেনি। রামপালের বিদ্যুতকেন্দ্র নিয়ে জ্ঞানী লোকদের কত কথা। কত গুজব শুনেছি। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা মানে রাষ্ট্রদ্রোহিতার সামিল। এখনো সেই অপশক্তি নানা ষড়যন্ত্র অপপ্রচার করে আসছে। অপপ্রচার ও মিথ্যার বেসাতি বেশি দিন টিকে না। সবাইকে বলব অপপ্রচার ও গুজবে বিশ্বাস করবেন না। মনে রাখবেন, আল্লাহ অপপ্রচারকারী ও গীবতকারীকে পছন্দ করেন না। দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর, চট্টগ্রাম থেকে
×