ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ধর্ষণের পর সবকিছু হাতিয়ে নিত ॥ ফেসবুকে পরিচয়ে প্রেমের প্রতারণা

আরেক ‘রসু খাঁ’ গ্রেফতার ১৩ নারীকে ধর্ষণ, একজনকে হত্যা

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ৩১ আগস্ট ২০১৬

আরেক ‘রসু খাঁ’ গ্রেফতার ১৩ নারীকে ধর্ষণ, একজনকে হত্যা

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ নগরীর একটি আবাসিক হোটেলে নাইমা ইব্রাহিম ঈশী (২১) নামের এক কলেজছাত্রীকে হত্যার ঘটনায় সায়েম আলম ওরফে মিমু নামের ঘাতক প্রতারক প্রেমিককে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ টানা পাঁচ দিন অভিযান চালিয়ে ঢাকার মগবাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করেছে। মিমুকে গ্রেফতারের পর থেকে বেরিয়ে আসতে থাকে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য। মঙ্গলবার দুপুরে বিএমপির কনফারেন্স রুমে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য দিয়েছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার এসএম রুহুল আমিন। পুলিশ কমিশনার জানান, দীর্ঘদিন ধরে ভালবাসার সম্পর্ক ছিল ঈশী ও মিমুর মধ্যে। প্রেমের টানে ঈশী বরিশাল এলে হোটেল ফেয়ার স্টারে নিয়ে ধর্ষণের পর হত্যা করে তার প্রেমিক। এ সময় তার সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন, স্বর্ণের চেনসহ টাকা পয়সা নিয়ে পালিয়ে যায় ঘাতক মিমু। এরপর আসামিকে গ্রেফতার করতে কোতোয়ালি মডেল থানার পুলিশ মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে মগবাজার এলাকায় টানা পাঁচ দিন অভিযান চালায়। সোমবার রাতে ওই এলাকা থেকে হত্যা মামলার আসামি মিমুকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতের বাসা ঢাকার ওয়ারী এলাকায়। আর হত্যার শিকার তরুণী ঈশীর বাড়ি নারায়ণগঞ্জে। সূত্রমতে, গত ৯ আগস্ট রাতে নগরীর ফলপট্টির আবাসিক হোটেল ফেয়ার স্টারের ৩০৯ নম্বর কক্ষ স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ভাড়া নেয় মিমু। পরে ওই কক্ষে কলেজছাত্রী ঈশীকে ধর্ষণ করে ১০ আগস্ট সকালে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে লাশ রুমের ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে মিমু পালিয়ে যায়। পরে ওইদিন দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে হোটেলের দরজা ভেঙ্গে নিহত ঈশীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের পিতা ব্যাংক কর্মকর্তা ইব্রাহিম খলিল বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। নিহত ঈশী বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান ছিল। ঈশী চলতি বছরের এইচ.এস.সি পরীক্ষায় নগরীর সরকারী হাতেম আলী কলেজ থেকে পাস করেছিল। মামলার তদন্তকারী অফিসার কোতোয়ালি মডেল থানার এস.আই মোঃ মাকসুদুর রহমান মুরাদ জানান, গ্রেফতারকৃত মিমুর কাছ থেকে ঈশীর মোবাইলের দুটি সিমকার্ড উদ্ধার করা হয়েছে। ওয়ারী থানাধীন ৬০/১ যোগী নগর রোড এলাকার বাসিন্দা মোঃ সেলিম মিয়ার পুত্র সায়েম আলম মিমু গ্রেফতারের পর পুলিশকে জানিয়েছে, ফেসবুকের মাধ্যমে নাইমা ইব্রাহিম ঈশীর সাথে তার পরিচয় ও প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তদন্তকারী অফিসার আরও বলেন, গ্রেফতারকৃত মিমু ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় ও প্রেমের সর্ম্পক করে ইতোপূর্বে জান্নাত, রিয়া, রিমা, সুবর্ণা, তমা, সুরাইয়া, সুমাইয়াসহ ১৩জনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক করেছিল। ওইসব মেয়ের ধর্ষণ শেষে তাদের মোবাইল সেট, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র হাতিয়ে নিয়ে সটকে পড়াই ছিল তার (মিমু) কাজ। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন তদন্তকারী অফিসার অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার সাইদুর রহমান, উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মোঃ আব্দুর রউফ প্রমুখ।
×