ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

হিল্লাতে অস্বীকৃতি, এক বছর পরিবার সমাজচ্যুত

প্রকাশিত: ০৪:০৬, ৩১ আগস্ট ২০১৬

হিল্লাতে অস্বীকৃতি, এক বছর পরিবার সমাজচ্যুত

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ শাজাহানপুর উপজেলার সাজাপুর শাহপাড়া গ্রামে হিল্লা বিয়েতে রাজি না হওয়ায় ফতোয়া দিয়ে সমাজচ্যুত করা হয়েছে একটি পরিবারকে। ট্রাকের হেল্পার মিজানুর রহমান (৩৪) ও তার স্ত্রী নার্গিস আকতার (২৬)। এই দম্পতির এক ছেলে আছে। তার নাম নাইমুল হাসান। বয়স সাড়ে চার বছর। হিল্লা বিয়েতে রাজি না হওয়া ওই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার দায়ে মিজানুর রহমানের বাবা এবং ছোট ভাইয়ের পরিবারকেও সমাজচ্যুত করা হয়েছে। গত এক বছর ধরে তারা মসজিদে নামাজ আদায় এবং সামাজিক অনুষ্ঠানে যেতে পারছে না। দুই সপ্তাহ আগে মিজানুর রহমান তার স্ত্রীকে শ্বশুর বাড়ি আশেকপুর ইউনিয়নের পারতেখুর কুশাড়ি গ্রামে রেখে এসেছেন। এ অবস্থার প্রতিকার চেয়ে এই দম্পতি মঙ্গলবার শাজাহানপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। অভিযোগে ফতোয়াবাজ সমাজপতিদের মধ্যে যাদের নাম উল্লেখ করা আছে তারা হলো আব্দুর রশিদ শাহ, মঞ্জু শাহ, আলী রেজা শাহ, আব্দুস সাত্তার শাহ। জানা যায়, প্রায় এক বছর আগে পারিবারিক কলহের জের ধরে রাগের মাথায় স্ত্রী নার্গিস আকতারকে ‘তালাক দিলাম’ উচ্চারণ করেছিলেন মিজান। কলহের সময় তার জেঠুস হাজেরা বেগমসহ প্রতিবেশীরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। এর জের ধরে এক পর্যায়ে সালিশের মাধ্যমে নার্গিস আক্তারকে বড় হুজুরের ফতোয়া মতো হিল্লা বিয়ে দেয়ার নির্দেশ দেয় গ্রাম্য মাতব্বররা। কোন উপায় না দেখে তারা খোট্টাপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইউনুছ আলী খন্দকারের সহযোগিতা চায়। তার পরামর্শ মতো কাজী ডেকে তারা স্বামী-স্ত্রী আবার বিবাহ নিবন্ধন করে। এরপর সাজাপুর গ্রামে নিজ বাড়ির কাছে এক বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে থাকেন। চার মাস অতিবাহিত হওয়ার পর বাবা, মা তাদের বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যায়। শাজাহানপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাফিউল ইসলাম জানান, হিল্লা বিয়ের কোন বিধান নেই। যাদেরই জড়িত প্রমাণ পাওয়া যাবে তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
×