ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

তৌফিক অপু

কৈশোর তারুণ্যেই মিলিয়নিয়র অবীগল ক্যাথলিন ব্রেসলিন

প্রকাশিত: ০৬:৫৬, ৩০ আগস্ট ২০১৬

কৈশোর তারুণ্যেই মিলিয়নিয়র অবীগল ক্যাথলিন ব্রেসলিন

প্রতিভা সত্যিকার অর্থেই খুঁজে বের করে আনার বিষয় নয়। তা আপন আলোয় উদ্ভাসিত হবেই। যদি সঠিক পথে লালিত হয়ে থাকে। খ্যাতি, যশ, প্রতিপত্তি তবে আপনা-আপনিই ধরা দেবে। যেমনটি ঘটেছে মার্কিন অভিনেত্রী ও গায়িকা অবীগল ক্যাথলিন ব্রেসলিনের ক্ষেত্রে। যে কি না মাত্র ১৯ বছর বয়সেই ১২ মিলিয়ন ডলারের মালিক। অবীগল ব্রেসলিনের জন্ম ১৪ এপ্রিল, ১৯৯৬ সালে। ব্রেসলিন যখন প্রথমবার বাণিজ্যিকভাবে হাজির হয় তখন তার বয়স ছিল মাত্র তিন বছর। এবং তার প্রথম চলচ্চিত্র স্বাক্ষর করেন ২০০২ সালে। তার অন্য ছবির চরিত্র লিটল মিস সানশাইন (২০০৬) এর জন্য সে মনোনীত হয়েছিল সেরা পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে। এরপর থেকেই আর পেছনে তাকাতে হয়নি। ২০০৭ সালে নো রিজারভেশন, নিম আইল্যান্ড ২০০৮, ডেফিনেটলি, মে বি ২০০৮, মাই সিস্টারস কিপার ২০০৯, জম্বিয়াল্যান্ড ২০০৯, র‌্যাঙ্গো ২০১১, পারফেক্ট সিস্টার্স ২০১৪ সহ বেশকিছু জনপ্রিয় মুভিতে। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে মুক্তিপ্রাপ্ত কমেডি হরর ছবিতে তাক লাগিয়ে দেন সবার। যে তাকে দেখেছে সেই মন্তব্য করেছে প্রচ- অধ্যাবসায় না থাকলে নাকি এ পর্যায়ে আসা সম্ভব নয়। ব্রেসলিন অবশ্য বলেন অন্য কথা। তার মন্তব্য কিভাবে, কেন এতদূর এসেছি তা হয়ত মেপে বলতে পারব না তবে প্রচণ্ড ভাললাগা থেকে কাজগুলো করে গেছি। তাই হয়ত আজও নতুন নতুন কাজ করার প্রেরণা পাচ্ছি। ব্রেসলিনের জন্ম নিউইয়র্ক সিটিতে। কিম ওয়ালশ এবং মাইকেল ব্রেসলিনের সন্তান। তার বড় আরও দুটি ভাই রয়েছে। তারাও অভিনেতা হিসেবে খ্যাতি পেয়েছে। ক্যারিয়ারের তিন বছর বয়সে একটি খেলনার বিজ্ঞাপন দিয়ে পথ চলা শুরু ব্রেসলিনের। শুরুটাই ছিল বাজিমাত করার মতো। ছোট্ট সেই বিজ্ঞাপন দিয়েই নজর কাড়তে সক্ষম হয় বোদ্ধাদের। এরপরেই সরাসরি চলচ্চিত্রে। শিশু চরিত্র দিয়ে চলচ্চিত্রে পদার্পণ। মজার বিষয় হলো- নির্মাতারা ব্রেসলিনের বয়সভেদে চরিত্র নির্ধারণ করতে থাকে। অর্থাৎ যখন যে বয়স ব্রেসলিন অতিক্রম করেছে নির্মাতার ঠিক সে বয়সকেই প্রাধান্য দিয়ে ব্রেসলিনের চরিত্র নির্ধারণ করে দিয়েছেন। যার ফলে সময়োপযোগী চরিত্রে নিজেকে মেলে ধরতে পেরেছে ব্রেসলিন। আর এ ব্যাপারগুলোই ধীরে ধীরে নিয়ে গেছে খ্যাতির শীর্ষে। সেই সঙ্গে যোগ হতে থাকে চড়া মূল্যের পারিশ্রমিক। ব্রেসলিন কোন সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেছে, ‘আমার বয়সী অনেক বন্ধুরাই নিয়মিত কোন কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়নি, সেদিক থেকে আমি ভাগ্যবতী। আমি আমার ভাললাগার জায়গায় নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছি এবং ভাল পারিশ্রমী অর্জন করছি। যা সত্যি আমাকে আনন্দ দেয়। আর আমার এ কাজের পেছনে আমার পরিবারের ভূমিকা অপরিসীম।’ একে একে বক্স অফিস কাঁপানো এই লাস্যময়ী তরুণী যেন ছুটে চলছেন সফলতার শীর্ষে। লিটল মিস সানসাইন এ অলিভ হবার চরিত্রের অভিনয় এতটাই দর্শকনন্দিত হয়েছিল যে, এনিয়ে মার্কিন জনপ্রিয় ম্যাগাজিন ইউএসএ টুডে মন্তব্য করেছে, অলিভ অন্য কোন সামান্য মেয়ের চরিত্রে যদি অভিনয় করত তাহলেও সে আমাদের প্রভাবিত করত। আর এ কাজের জন্য এ্যাক্টরস গিল্ডের সেরা অভিনেত্রীর মনোয়ন পায় ব্রেসলিন। এবং একাডেমিক পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ কনিষ্ঠ অভিনেত্রীর মনোনয়ন পায় সে। এরপর একে একে ওসাজ কাউন্টি, পারফেক্ট সিস্টারস, স্ক্রিম কুইন্সের মতো জনপ্রিয় ছবিতে অভিনয় করে রীতিমতো কাঁপিয়েছেন বক্স অফিস। মাত্র ২০ বছর বয়সীর আর কি চাওয়া থাকতে পারে। কিন্তু ক্যারিয়ার ভাবনা নিয়ে কিন্তু থেমে নেই ব্রেসলিন। কার যুগটাই না কি প্রতিযোগিতার যুগ। তাই প্রতিনিয়ত শাণ দিয়ে চলতে হয়। তা না হলে মরিচা পড়ে যা। ব্রেসলিনের এক কথাগুলো বন্ধুরা প্রায়ই মজা করে বলে। তারপরেও থেমে নেই ব্রেসলিন। অভিনয়ের পাশাপাশি ব্রেসলিনের আরেকটি পরিচয় আছে। সেটা হলো সে একজন সুকণ্ঠী গায়িকা। ঘরোয়া অনুষ্ঠানে তো বটেই, পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানেও রিকোয়েস্ট থাকে ব্রেসলিনের কণ্ঠের গানের। শখের বশে গাইলেও ইতোমধ্যে ব্রেসলিনের গানের ভক্তও কিন্তু জড়ো হয়নি। আর এ নিয়েই ব্রেসলিন এখন তারুণ্যের আইকনে পরিণত হয়েছেন। লাস্যময়ী হাসি আর তারুণ্যের উদ্যোমতা ব্রেসলিনকে নিয়ে গেছে অন্য এক উচ্চতায় তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
×