অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ চোরাচালান নিরোধ কার্যক্রমকে গতিশীল ও কার্যকর করার লক্ষ্যে ১১টি সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে পুনর্গঠিত চোরাচালান কেন্দ্রীয় টাস্কফোর্স। গত রবিবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্তগুলো অনুমোদন করা হয়। এনবিআর চেয়ারম্যান এবং পুনর্গঠিত চোরাচালান নিরোধ কেন্দ্রীয় টাস্কফোর্সের সভাপতি নজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সিদ্ধান্তগুলো হলো, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ৮ থেকে ১০টি কার্যক্রম নিয়ে একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা। কেন্দ্রীয় টাস্কফোর্সের সকল সদস্যকে নিয়ে একটি গ্রুপ মেইল খোলা। টাস্কফোর্সের সদস্যদের গোএএমএল সফটওয়্যারে সংযুক্ত করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক যাতে বিবেচনা করে সে বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ। আটক পণ্যের মূল্য উল্লেখের ক্ষেত্রে শুল্ক মূল্যায়ন বিধিমালা-২০০০ অনুসরণ। আটককৃত পণ্য নিকটস্থ কাস্টমস গুদামে জমা করা। বিদেশী যাত্রীরা যাতে হয়রানির শিকার না হন সে জন্য নজরদারি বৃদ্ধি করা।
কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট একাডেমি, চট্টগ্রাম এবং কর একাডেমির যৌথ প্রশিক্ষণের আয়োজন করা, যা রাজধানীতে আয়োজন করতে হবে। বাংলাদেশ রেলওয়ে এবং বাংলোদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষকে কেন্দ্রীয় টাস্কফোর্সের কো-অপ্ট করা। বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে সোনালী ব্যাংকের শাখা খোলার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের গবর্নর বরাবর পত্র প্রেরণ। করিডর দিয়ে আমদানি করা গরুর ক্ষেত্রে জরিমানা পুনর্নির্ধারণের বিষয়টি পুনরায় বিবেচনা করা। সভায় বলা হয় বর্তমানে গরু প্রতি মাত্র ৫০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। অবৈধভাবে গরুর আনা রোধ ও রাজস্ব বৃদ্ধির স্বার্থে এই জরিমানা বৃদ্ধি করার বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। তবে ঈদের আগে গরু আমদানির স্বার্থে জরিমানার হার বৃদ্ধির প্রস্তাব নাকচ করে দিয়ে আগের জরিমানার বিধানই অব্যাহত রাখা হয়েছে।
সভায় টাস্কফোর্সের সভাপতি নজিবুর রহমান বলেন, ‘সময়ের ধারাবাহিকতায় চোরাচালানের নতুন নতুন ধারণা ও ক্ষেত্র আবিষ্কৃত হচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে মানি লন্ডারিং-এর প্রায় ৮০ ভাগ বাণিজ্যভিত্তিক অর্থ পাচারের মাধ্যমে হয়ে থাকে। এর উল্লেখযোগ্য অংশ চোরাচালানের মাধ্যমে সংঘটিত হয়। এ ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কাস্টমস এবং অন্যান্য দফতর ও সংস্থাসমূহ দায়িত্বশীল ও কার্যকর ভূমিকা রাখছে।’
টাস্কফোর্সে সদস্য সচিব ও শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান সভার মূল বিষয়বস্তু উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, ‘টাস্কফোর্সের প্রথম সভার সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নে টাস্কফোর্সের অন্তর্ভুক্ত সংস্থাসমূহ কাজ করে যাচ্ছে। তারা তাদের কার্যক্রম ও চোরাচালান দমন বিষয়ে যোগাযোগ অব্যাহত রাখছে।’ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড, পুলিশ সদর দফতর, মাদকদব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী, এনএসআই, ডিজিএফআই, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ ব্যাংক, এফবিসিসিআই, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ রেলওয়ে, বাংলাদেশ পুলিশ (রেলওয়ে রেঞ্জ), শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের প্রধান ও প্রতিনিধিরা সভায় উপস্থিত ছিলেন। চোরাচালান নিরোধে চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি টাস্কফোর্স পুনর্গঠন করা হয়।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: